শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিভাবকের জন্য এক অ্যাপ
- বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক
বছর দুয়েক আগের কথা। বাংলাদেশের ইস্তায়ীন আহমেদ স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করছিলেন যুক্তরাজ্যের আলস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনার অংশ হিসেবে ওই সময় বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইল ফোনের একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরির কাজ করছিলেন। শিক্ষাব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করার অ্যাপ ছিল সেটি। অ্যাপটি নিয়ে আরও বিস্তৃতভাবে কাজ করার কথা তখন মাথায় আসে ইস্তায়ীনের।
ইস্তায়ীন চিন্তা করেন অ্যাপের কাজটা শুরু করা যেতে পারে দেশ থেকে। দেশে থাকা কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বন্ধুরাও আগ্রহ দেখায়। এরপর তিনি পড়াশোনা সম্পন্ন করে দেশে ফিরে তিন বন্ধুকে নিয়ে কাজ শুরু করেন ‘আই ক্লাস’ গড়ে তোলার। তাঁদের এই অ্যাপ গত আগস্ট মাসে যাত্রা শুরু করেছে।
আই ক্লাসে যেসব সুবিধা
শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ—একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন আই ক্লাসের ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপ ব্যবহার করে। ক্লাস নোট, ফলাফল, উপস্থিতি এবং ফি সম্পর্কিত তথ্যও জানা যাবে এতে। কীভাবে?
ইস্তায়ীন জানালেন, নিবন্ধিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবারই আলাদা আলাদা পরিচিতি (আইডি) ও পাসওয়ার্ড থাকবে। এর মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের ড্যাশবোর্ড আবার একেক রকম। ড্যাশবোর্ড মূলত সাজানো হয়েছে যার যার প্রয়োজন অনুসারে। এ কারণে তাদের অ্যাপ সহজে সবাই ব্যবহার করতে পারবে বলে জানান ইস্তায়ীন।
যাঁরা গড়ে তুলেছেন আই ক্লাস
ইস্তায়ীন ছাড়া অন্য তিনজন হলেন মো. আরিফ হোসেন, মো. আশ্রাফুল হক ও মো. বাদশা ফাহাদ। তাঁরা সবাই আই ক্লাসের সহপ্রতিষ্ঠাতা। এর মধ্যে মো. আরিফ হোসেন ও মো. বাদশা ফাহাদ এর আগে মুক্ত পেশাজীবী (ফ্রিল্যান্সার) হিসেবে কাজ করছিলেন। মো. বাদশা ফাহাদ পেয়েছেন বেসিস ফ্রিল্যান্সার পুরস্কার ২০১৫। আর মো. আশ্রাফুল হক কাজ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে। আই ক্লাস গড়ে তোলার কাজ গত জানুয়ারিতে তাঁরা শুরু করেন।
কেন এমন উদ্যোগ?
মো. আরিফ হোসেন বললেন, ‘ইস্তায়ীনের কাছে এমন ধারণা শুনে আমাদের সবারই আগ্রহ জাগে। আমাদের দেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা দূরত্ব রয়েছে। এমন উদ্যোগ তা দূর করবে বলে আমরা মনে করি। পাশাপাশি এতে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদকেও যুক্ত করা হয়েছে।’
অপর উদ্যোক্তা বাদশা ফাহাদ বললেন, অভিভাবকদের যুক্ত করার কারণে তাঁরা নিয়মিত সন্তানের তথ্য পাবেন। আর শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও ডিজিটাল করতে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদকে যুক্ত করার সুবিধা যোগ করা হয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ যেন তাদের প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের ডেটাবেইস ডিজিটাল মাধ্যমে দেখতে পারেন, এমন সুবিধা যুক্ত করা হবে আই ক্লাসে। এ ছাড়া দেশের বাইরেও এই অ্যাপ ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে। এ জন্য তাদের একটি দল যুক্তরাজ্যে কাজ করছে।
কীভাবে যুক্ত হবেন?
আগ্রহী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আই ক্লাসের (www.iclass.com.bd) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে এই সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে। অ্যাপটি পাওয়া যাবে গুগল প্লেস্টোর ও অ্যাপল স্টোরে।