কেমন আছে নোকিয়া ?
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক
ছোট ফিনিস টাউন নোকিয়া দেখলে এখন আর বোঝা যায় না, এ শহরটি একসময় কত রমরমা অবস্থা ছিল। শহরটির তুষারঢাকা রাস্তাঘাট ও দোকানের সারি ও রেস্টুরেন্টও এখন আর আগের মতো নেই। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিবিসি।
একসময় নোকিয়া বিশ্বের শীর্ষ মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। নোকিয়া নামে এ টাউনটি ছিল প্রতিষ্ঠানটির প্রাণকেন্দ্র। আর এ কারণে শহরটি ব্যস্ত থেকে ব্যস্ততর হয়ে উঠছিল। এ শহরটি ফিনল্যান্ডের অর্থনীতিতেও ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল।
২০০০ সালের দিকে নোকিয়া বিশ্বের মোবাইল ফোনের বাজারের ৪০ শতাংশের নির্মাতা। এটি সে সময় ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে, যা সারা বিশ্বেই পরিচিত লাভ করে।
এ প্রতিষ্ঠানটি ফিনল্যান্ডের অর্থনীতিতে মূল্যবান ভূমিকা রাখে। ফিনিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট জানিয়েছে, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়ে ফিনল্যান্ডে যা ঘটেছে তাকে ‘অর্থনৈতিক জাদু’ বলেই ধরা যায়। তবে এটি ছিল ক্ষণস্থায়ী। যত তাড়াতাড়ি নোকিয়ার উত্থান ঘটেছে, তত তাড়াতাড়িই তা মিলিয়ে যায়।
নোকিয়া শহরটির কেন্দ্রস্থল থেকে ১৫ মিনিট দূরত্বে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ। সেখানে চার হাজার কর্মী কাজ করে। শহরটিতে রয়েছে ১৯ শতকের শিল্প বিপ্লবের অবকাঠামো। কিন্তু সে সময়কার অবকাঠামো ছাপিয়ে গিয়েছে সাম্প্রতিক নোকিয়ার উত্থান-পতনের কাহিনী।
শহরটির মূল অবকাঠামো হিসেবে এখনো নোকিয়ার ভূমিকা রয়ে গেছে। শহরের ইউনিভার্সিটি এখন নোকিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা করে।
স্থানীয় তরুণরাও নোকিয়াতে কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকে। তবে শহরটিতে এখন বেকারত্ব অনেক বেড়েছে। বর্তমানে শহরটির ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ মানুষ বেকার।
নোকিয়ার বহু প্রতিদ্বন্দ্বীই বর্তমানে রমরমা অবস্থানে রয়েছে। তবে নোকিয়া বাজারে পিছিয়ে পড়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সংকটের মুখে পড়ার পর মাইক্রোসফট তা কিনে নেয়। ২০১৪ সালের এ ঘটনার পর নোকিয়ার নামও মুছে ফেলা হয় অসংখ্য পণ্য থেকে। বর্তমানে খুব কম মানুষেরই কর্মসংস্থান হচ্ছে নোকিয়ায়।
প্রতিষ্ঠানটির এ অধঃপতনের কারণ হিসেবে অনেক বিষয় দায়ী। এসবের মধ্যে রয়েছে আইফোন ও বিভিন্ন স্মার্টফোন প্রতিষ্ঠানের উত্থান। প্রতিষ্ঠানগুলো নোকিয়ার তুলনায় ভালো মানের স্মার্টফোন উৎপাদন করে ক্রেতাদের মনোযোগ কেড়েছে।
নোকিয়া বাজার থেকে পিছু হটায় ফোন নির্মাতা শহরটিও ক্রমে স্থবির হয়ে পড়ছে। অতীতে শহরটিতে অসংখ্য ইঞ্জিনিয়ার ও সফটওয়্যার প্রকৌশলীর দেখা পাওয়া গেলেও এখন আর তা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে স্থানীয়রা আশাবাদী আবার নোকিয়ার মতো কোনো প্রতিষ্ঠান ঝলসে উঠবে এবং প্রাণ সঞ্চার করবে দেশটির অর্থনীতিতে।