পাঠ সহায়িকা : ভাইবোনের তৈরি অ্যাপ
- বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক
দুই ভাইবোন আশেক রহমান ও মিথিলা ফারজানা। বাড়ি ঝিনাইদহে। মিথিলার চেয়ে এক বছরের বড় আশেক। ভাইবোনের সম্পর্ক ছাপিয়ে দুজন একে অপরের বন্ধু। ২০১১ সালে উচ্চমাধ্যমিক শেষে আশেক রহমান ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে। পরের বছর মিথিলা হয়ে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। একজন চট্টগ্রাম, আরেকজন ঢাকার বাসিন্দা হলেও দুই ভাইবোনের একটা কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা থেমে থাকেনি। দুজন মিলে তৈরি করছেন ‘পাঠ সহায়িকা’ নামে পড়ালেখায় কাজে লাগে, এমন একটা অ্যাপ। শুধু তা–ই নয়, অ্যাপটি বাস্তবায়ন করতে সরকারের সহযোগিতাও পাচ্ছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের আওতায় তাঁরা পাবেন মোট ১৪ লাখ টাকা।
‘আইডিয়া’টা বোনকে জানালেন আশেক রহমান। দুজনে মিলে আরও ভাবলেন। কারিগরি দিকটার দায়িত্ব নিলেন আশেক, আর ভাবনার ফাঁকফোকরগুলো ধরিয়ে দিতে সাহায্য করলেন মিথিলা। এক সময় জানলেন এটুআইয়ের ‘চ্যালেঞ্জ ফান্ড’–এর কথা। জমা দিলেন ধারণাপত্র।
কী ছিল তাঁদের ধারণাপত্রে? জানতে চাইলে মিথিলা বলেন, ‘কোনো একটা বিষয় পরিষ্কার না বুঝলে পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন হয়ে যায়। সৃজনশীল পদ্ধতিতে এই সমস্যা আরও বেশি। অথচ ইন্টারনেটে যে কোনো বিষয় সার্চ করলেই চমৎকারভাবে বোঝার সুযোগ আছে। অনেক ভিডিও আছে, টিউটোরিয়াল আছে। আমরা ভাবলাম, যদি বিষয়ের সঙ্গে এসব টিউটোরিয়ালের লিংক দিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে হয়তো বুঝতে সুবিধা হবে।’
গ্রামাঞ্চলের অনেক স্কুল-কলেজে ভালো গবেষণাগার নেই। কিন্তু স্মার্টফোন অনেকের হাতেই আছে। তাই পাঠ্যবইয়ে দেওয়া ব্যবহারিক পরীক্ষাগুলো হাতে-কলমে ভালোভাবে করতে না পারলেও, ভিডিও দেখে যেন শিক্ষার্থীরা একটা ধারণা পায় সে ব্যবস্থাই করতে চেয়েছিলেন আশেক ও মিথিলা। বোনের কথার সঙ্গে ভাই যোগ করেন, ‘আমরা আমাদের প্রকল্পের নাম দিয়েছি: পাঠ সহায়িকা পাঠ্যপুস্তকের বিকল্প নয়, নোট বইয়ের বিকল্প।’ কয়েক দফা যাচাই-বাছাইয়ের পর, পাঠ সহায়িকা অ্যাপটি এটুআইয়ের চ্যালেঞ্জ ফান্ডের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। দুই ভাইবোন আশা করছেন, আগামী এক বছরের মধ্যেই তাদের তৈরি অ্যাপ শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে।