পোস্ট অফিস হবে ই-কমার্সের কেন্দ্রবিন্দু
- বিজ্ঞান প্রযুক্তি ডেস্ক
দেশের ৯ হাজার ৮৮৬টি পোস্ট অফিসকে ই-কমার্সের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। এই লক্ষ্যে পোস্ট অফিসগুলোকে শিগগিরই ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) আয়োজিত ই-কমার্স পলিসি কনফারেন্সের তৃতীয় সেশনে ‘বিজনেস লিডারশিপ ডায়ালগ অন ই-কমার্স’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্সের ভিত্তি গড়ে তুলতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন ইন্টারনেটের গতি বাড়ানো। এই প্রাথমিকভাবে কাজ সরকার করে দিয়েছে। এ ছাড়া এই খাতে লেনদেন নিরাপদ ও নিশ্চিত করতে এবং ক্রেতা-বিক্রেতার উভয়ের খরচ কমাতে দেশের ৯ হাজার ৮৮৬টি পোস্ট অফিসকে ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
ই-কমার্স সেক্টরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই বাজারকে প্রতিযোগিতাপূর্ণ করতে হবে। এটা আমাদের কাজ। আমরা এটা করে দেব। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে আমরা ই-কমার্সের কথা মাথায় রেখে ইন্টারনেটের মূল্য আরো কমানো যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তা করছি।
বেসিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাসেল টি আহমেদের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, জেএএন অ্যাসোসিয়েটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ এইচ কাফি, দোহাটেক নিউ মিডিয়ার স্বত্বাধিকারী এ কে এম সামছুদ্দোহা, ই-ক্যাবের সভাপতি রাজীব আহম্মেদ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) সভাপতি আহমেদুল হক, সিটিও ফোরাম সভাপতি তপন কান্তি সরকার, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইসপাব) সভাপতি এম এ হাকিম, বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) সভাপতি মুহম্মদ খান প্রমুখ।
অনলাইন পেমেন্ট নিয়ে সেমিনারে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকার ই-কমার্সসহ তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ চায়। তবে নীতি উদারীকরণের ক্ষেত্রে সরকার ও জনগণ কতটা উপকৃত হবে সে বিষয়ে আমাদের বোঝাতে পারলে অবশ্যই আমরা তা বিবেচনা করব।
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, ডিজিটাল পেমেন্টে বাংলাদেশে অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে। থাইল্যান্ডে যেখানে এ খাতে ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সেখানে বাংলাদেশে তা ২৯ শতাংশ। তবে দেশে ই-কমার্সের বিকাশ ঘটাতে হলে দেশের লেনদেন ব্যবস্থাকে ডিজিটালে রূপান্তর করতে হবে। এ জন্য প্রতিটি ব্যাংক হিসাবধারীর অন্তত ডেবিট কার্ড দেওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে।
২০২০ সাল হবে ই-কমার্স বছর : আগামী ২০২০ সালকে ই-কমার্সের বছর হিসেবে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) সভাপতি রাজীব আহমেদ। তিনি বলেন, ২০২০ সালে গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করবে। ই-কমার্স পলিসি কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
রাজীব আহমেদ বলেন, আগামী ২০১৭ সালে ই-কমার্স খাতে বড় ধরনের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। ২০১৮ সালে এই খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ আসবে। আমরা এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই কাজ করছি। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ই-ক্যাবের উপদেষ্টা নাহিম রাজ্জাক, অভিনেত্রী শমী কায়সার, ভিসা কার্ডের (ইন্ডিয়া অ্যান্ড সাউথ এশিয়া) হেড অব প্রডাক্ট রমা তাদেপালী প্রমুখ।
আলোচনা সভায় মুহম্মদ খান বলেন, আমরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত পণ্য নিয়ে অনেক সময় কিছু অভিযোগ পাই। তবে দ্রুত বিকাশমান এই খাতে বিক্রয়োত্তর সেবাসহ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নীতিমালা প্রয়োজন। দেশের তথ্য-প্রযুক্তি সাংবাদিকরা ই-কমার্স সেবার বিকাশে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ব্যাংকের অর্থায়ন প্রয়োজন : ব্যাংকের অর্থায়ন ছাড়া ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ই-কমার্স পলিসি কনফারেন্সের দ্বিতীয় সেশনে ‘লোকাল অ্যান্ড ফরেন ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আইসিটি খাতে ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসছে না। তারা জানে না, কিভাবে এই খাতে বিনিয়োগ করতে হয়। কারণ, এখানে দেখানোর কিছু নেই। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের অর্থায়ন নীতির মধ্যে থাকা দরকার যে কিভাবে ই-কমার্সকে সহায়তা করা যায়।