বাজারে এসেছে রিয়েলমি’র নতুন ট্যাবলেট
- ইয়ামান হুসাইন রিফাত
ট্যাবলেট বা সংক্ষেপে ট্যাব। যাদের মোবাইল ফোন থেকে একটু বড় ডিসপ্লে দরকার হয় তাদের জন্য এই ট্যাবলেটই অন্যতম ডিভাইস। মোবাইল বা স্মার্টফোনের মতো সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় অনেকেই ট্যাব ব্যবহার করেন। বিশেষ করে বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য অনেক অভিভাবকই তাদের হাতে ট্যাব তুলে দেন। তবে বেশ কিছুদিন এই ট্যাবের মার্কেটে এক প্রকার খরাই ছিল বলা যায়।
স্মার্টফোন থেকে বড় ডিসপ্লে এবং সহজে বহনযোগ্য ডিভাইস হিসেবে ট্যাব অন্যতম। তবে বর্তমানে বাজারে ট্যাব অনেকটা নেই বললেই চলে। বিশেষ করে বাজারে নাগালের মধ্যে ট্যাব পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। আর সব কোম্পানি ট্যাব থেকে স্মার্টফোনে বেশি মনোযোগ দেয়ায় বাজারে নতুন নতুন ট্যাবের দেখাও পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে বর্তমানে অনেক কোম্পানি আবারও ট্যাবের বাজার দখলের উদ্দেশ্যে নতুন নতুন ট্যাব বাজারে ছেড়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় রিয়েলমিও বাজারে ছেড়েছে নতুন একটি ট্যাব।
রিয়েলমি প্যাড, জনপ্রিয় স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিয়েলমি’র নতুন ট্যাবলেট। রিয়েলমি’র বানানো প্রথম ট্যাবলেট এই রিয়েলমি প্যাড। ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায় যারা ট্যাব খুঁজছেন তাদের জন্য একটি অপশন হতে পারে রিয়েলমি প্যাড। মূলত যারা ট্যাব কিনেন তাদের প্রধান উদ্দ্যেশ্যই থাকে এর ডিসপ্লে, পারফরম্যান্স আর অভারঅল এক্সপেরিয়েন্স। আর রিয়েলমি তারই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এই ট্যাবটি বাজারে এনেছে।
রিয়েলমি প্যাডের বক্সে থাকছে ১৮ ওয়াটের চার্জার, ইউএসবি টাইপ সি ক্যাবল ও সিম ইজেক্টর পিন। ট্যাবটির ডিসপ্লে সাইজ ১০.৪ ইঞ্চি। ট্যাবটির ওয়েট ডিস্ট্রিবিউশন বেশটা বেশ ভালো। ৪৪০ গ্রাম ওজনের ট্যাবটির বডি ফ্রেম সবই এলুমিনিয়ামের তৈরি আর ট্যাবটির ফ্রেম ৬.৯ মিলিমিটার পুরু। ফ্রেমটি এতো চিকন হওয়া সত্ত্বেও ট্যাবে ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক ঠিকই দিয়েছে রিয়েলমি। সাথে রয়েছে টাইপ সি পোর্ট। পাওয়ার বাটন আর ভলিউম বাটনের পজিশনও ঠিকঠাক আছে। সাথে রয়েছে চারটি স্পিকার। যা বেশ ভালো সাউন্ড কোয়ালিটি প্রদান করে। তাছাড়া স্পিকারগুলো ডলবি এটমস দ্বারা টিউন করা। যার ফলে খুবই লাউড এবং স্টেরিও সাউন্ড পাওয়া যায়। ট্যাবটিতে ক্যামেরা হিসেবে আছে ৮ মেগাপিক্সেলের রেয়ার এবং ফ্রন্ট ক্যামেরা। যা ট্যাব হিসেবে ভালোই। সাথে আছে ৭১০০ মিলিএম্পিয়ার ব্যাটারি যা ১৮ ওয়াটের চার্জার দিয়ে চার্জ হতে প্রায় ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মতো সময় লাগে।
ট্যাবটিতে চিপসেট হিসেবে রয়েছে মিডিয়াটেকের হেলিও জি৮০ চিপসেট। এই প্রাইসের অন্যান্য স্মার্টফোনের সাথে এই চিপসেটটি মানানসই না হলেও অন্যান্য ট্যাবের তুলনায় ভালোই পারফর্ম করবে ট্যাবটি। হেলিও জি৮০ চিপসেটে রয়েছে ১২ ন্যানোমিটার অক্টা-কোর প্রসেসর যাতে ২ টি ২.০ গিগাহার্জের এ৭৫ ও ৬ টি ১.৮ গিগাহার্জের এ৫৫ কোর রয়েছে। আর জিপিইউ হিসেবে আছে মালি-জি ৫২। চিপসেটটি ১২ ন্যানোমিটার আর্কিটেকচারে বিল্ড করা। সাথে আছে ৩ অথবা ৪ জিবি এলপি ডিডিয়ার৪এক্স র্যাম। আর ৩২ অথবা ৬৪ জিবি ইএমএমসি অনবোর্ড স্টোরেজ সুবিধা। হার্ডওয়্যার থেকে ভালোই পারফরম্যান্স পাওয়া যাচ্ছিলো। ফোনটির ইউআইতেও তেমন কোনো সমস্যা চোখে পড়েনি। প্রতিদিনের সব কাজ যেমন টুকটাক গেমিং, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং, নেট ব্রাউজিং, মাল্টিমিডিয়া এক্সপেরিয়েন্স ইত্যাদি খুব ভালোভাবেই সামলাতে পারবে ট্যাবটি।
ট্যাবটির ১০.৪ ইঞ্চির টিএফটি এলসিডি প্যানেলটিও ভালোই লাগবে ব্যবহারকারীদের। ডিসপ্লেটি ১২০০x১২০০ পিক্সেলের এবং এর পিক ব্রাইটনেস ৩৬০ নিটস যা ইনডোরে ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট। তবে ডিসপ্লেটির ভিউয়িং এঙ্গেল খুব একটা ভালো না। পাশ থেকে দেখলে নেগেটিভ লাগে যা বিরক্তিকর এবং ডিসপ্লেটিতে কোনোপ্রকার প্রটেকশন ব্যবহৃত হয়নি।
২০ থেকে ২২ হাজার টাকায় এই ট্যাবলেটটি একটি ভালো ডিভাইস হতে পারে। তাই যারা এই বাজেটে একটি ট্যাব কেনার কথা ভাবছেন তারা দেখতে পারেন রিয়েলমি প্যাডটি।