ফেসবুক পেজের রিচ কেন বাড়ে কেন কমে
- প্রযুক্তি ডেস্ক
দিন দিন ফেসবুক পেইজের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায় আমাদের সকলেরই ফেসবুক পেইজ রয়েছে। অনেকে ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ব্যবসা করে, অনেকেই ভিডিও বানায় বা মজার জন্য পার্সোনাল পেইজ তৈরি করে।
কিন্তু একটা সময়ে গিয়ে দেখা যায় ফেসবুক পেইজের রিচ কমে যায়। আগের মত হঠাৎ লাইক, কমেন্ট আসে না। এতে যারা ফেসবুকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে বা ভিডিও মনিটাইজেশনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করে তারা বিপাকে পড়ে যায়।
ফেসবুক পেইজের রিচ কমে যাওয়ার কারণ
বলতে গেলে প্রায় অনেকগুলো কারণ এই ফেইসবুক পেইজের রিচ কমে যেতে পারে। তাই প্রথমেই যে কারণগুলোতে ফেসবুক পেইজের রিচ কমে যায় সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করবো।
নিয়মিত পোস্ট না করলে
আপনি যদি নিয়মিত পোষ্ট না করেন তাহলে আপনার পেইজের ফলোয়ারদের কাছে আপনার পোস্টটি যাবে না। ফেসবুকের নীতিমালা অনুসারে বলা যায় আপনি যদি নিয়মিত পোস্ট না করেন তাহলে আপনার পেইজটি সকলের কাছে যাবে না। পেইজের ইম্প্রেসাম কমে যাবে।
কনটেন্টের ধরন পরিবর্তন
ধরুন আপনি একটি ইসলামিক ফেসবুক পেইজ তৈরি করলেন। এবং সেই ফেসবুক পেইজে কিছুসংখ্যক লাইকার এবং ফলোয়ার হলো। কিন্তু আপনি হঠাৎ করেই সেই পেইজটিতে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে পোস্ট করা শুরু করলেন। ফলে কমে যেতে পারে পেইজের রিচ।
সঠিক নিয়মে বুস্ট/প্রমোট না করলে
ফেসবুক বলেন গুগলই বলেন সবকিছুই তারা অর্গানিক পছন্দ করে। তারপরও ব্যবসার প্রচার ও প্রসারের জন্য আমরা ফেসবুক পেজ বুস্ট বা প্রমোট করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই সঠিকভাবে পেইজ প্রমোট বা বুস্ট করি না। এতে পেইজের রিচ ডাউন হয়ে যায়।
তাছাড়া আমাদের মাঝে অনেককেই দেখা যায় তারা ফেসবুক কুপনের মাধ্যমে পেইজ প্রমোট করে। এতেও একটা সময় পেইজের রিচ ডাউন হয়ে যায়। মাঝে এড অ্যাকাউন্ট ডিসেবল এমনকি পেইজ আনপাবলিশ হয়ে যেতে পারে।
ফেসবুক পেইজের রিচ বাড়ানোর উপায়
ফেসবুক পেজের রিচ বাড়ানোর প্রথম যে বিষয়টি হচ্ছে সেটি হলো নিয়মিত ভাবে ফেসবুকে পোস্ট করা। নিয়মিত যদি আপনি ধারাবাহিকভাবে কোন বিষয় নিয়ে পোষ্ট করেন তাহলে সেটা আপনার পেইজের ফলোয়ারদের নজরে আসবে।
অবশ্যই পোস্ট করার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কোনভাবেই পোস্ট করার টপিক চেঞ্জ করা যাবে না। আপনি যদি গল্প লেখার নিয়ে ফেসবুক পেইজ ওপেন করেন তাহলে অবশ্যই গল্পই দিবেন সবসময়ই। কারন আপনার পেইজে যারা লাইক দিয়েছে তারা শুধুমাত্র গল্প পড়ার জন্যই দিয়েছে। তাই একই ধরনের কনটেন্ট দিবেন।
এমনকি আপনি যদি লেখা পোস্ট করেন তাহলে সব সময় লেখাই পোস্ট করবেন। যদি আপনি ফটো পোস্ট করেন তাহলে অবশ্যই ফটোই পোস্ট করবেন। আপনি যদি ভিডিও ক্রিয়েট করেন তাহলে সব সময় পেইজে ভিডিও-ই দিবেন অন্য টাইপের পোস্ট করা থেকে বিরত থাকবেন।
মাঝেমাঝেই ফেসবুক পেইজ প্রমোট পোস্ট করবেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিকভাবে ভালো পেমেন্ট গেটওয়ে অর্থাৎ মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে পেইজ প্রমোট পোস্ট করবেন কোনভাবেই ফেসবুক কুপন ইউজ করবেন না। কারন ফেসবুক কুপন একটি ইলিগ্যাল বিষয়, তবে আপনি যদি আপনার পেইজের কুপনের মাধ্যমে আপনার পেইজের পোস্ট বুস্ট করেন তাহলে সেটা অন্য কথা।
উল্লেখ্য আপনি কিন্তু জীবনে শুধুমাত্র একবারই আপনার নিজের পেইজের জন্য ৫$ কুপন নিতে পারেন। এর বাইরে কুপন দিয়ে পোস্ট করলে সেটা পেইজের লাভের থেকে ক্ষতিই বেশি হবে।
আরেকটা বিষয় মাথায় রাখবেন, পোস্ট করার সময় অবশ্যই একটি ফটো যোগ করে দিবেন। ফেসবুকের একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে ফটো যুক্ত একটি পোস্ট ৬৫% বেশি লাইক,কমেন্ট বা শেয়ার করে।
মাঝে মাঝে ভিডিও আপলোড করবেন। এখন ফেসবুকে ওয়াচ নামে একটি ট্যাব আমরা ফেসবুক অ্যাপে দেখতে পারি। ফলে আপনি যদি পেইজে ভিডিও আপলোড করেন তাহলে সেটা লাইফটাইম ভিউ হওয়ার একটা আশঙ্কা থাকে। যেটা আপনার পেইজের রিচ বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আপনি যদি ফেসবুকে পণ্য বিক্রির ব্যবসা চালান তাহলে মাঝে মাঝে ফেসবুক লাইভে আপনার প্রোডাক্ট গুলো দেখাবেন। এতে কাস্টমারের সাথে আপনার যেমন সুসম্পর্ক তৈরি হবে তেমনি আপনার পেইজের রিচ এবং ইম্প্রেশন বেড়ে যাবে।
এছাড়াও আপনি চাইলে মাঝে মাঝে বিভিন্ন ধরনের কনটেস্টের আয়োজন করতে পারেন। আবার সেই কনটেস্ট বুস্ট করার মাধ্যমে ফেসবুকে ভালো ভাবে ছড়িয়ে দিন। কনটেস্টে অবশ্যই কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা করুন। মানুষ এই ধরনের কনটেস্ট অনেক অংশগ্রহণ করে এতে আপনার পেইজের একটা প্রচার হয়ে যাচ্ছে পাশাপাশি আপনার পেজের রিচও অনেক বেড়ে যাবে।
ট্রেন্ডিং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পোষ্ট করুন। আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক বিভিন্ন ধরনের ট্রেন্ডিং বিষয়ে লেগেই থাকে। এখন আপনি যদি সেই ফ্রেন্ডকে ফলো করতে পারেন তাহলে ফলোয়ারের কাস্টমাররা আপনার ডাকে সাড়া দেবে।