কর্মব্যস্তদের জন্য…
ক্যারিয়ার ডেস্ক
সকালে ঘুম থেকে জাগার পর সুন্দর সকালটাও হয়তো সেভাবে দেখা হয়না অনেকদিন। মধ্যরাত পার করে প্রিয় বইয়ের শেষ লাইন পড়ে ঘুম ঘুম চোখজোড়া বন্ধ হয়না। দৈনন্দিন কর্মব্যস্ত জীবনে এই অনুভূতির জায়গাগুলো থেকে অনেকটাই দূরে সরে এসেছি আমরা। তবুও যে মনের কিছুটা প্রশান্তি প্রয়োজন।
১. নিজের প্রতি যত্ন:
জীবনের যে কোন পরিস্থিতিতে সবার আগে নিজের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে অনেক কাজের চাপে যখন হাঁপিয়ে উঠতে হয় তখন নিজের ভালো লাগাকে গুরুত্ব দিতে হবে সবার আগে। অর্থাৎ যে কাজে নিজের মন প্রশান্তি পায় – হতে পারে বই পড়া, পছন্দের কোন গান শোনা, ছবি দেখা অথবা খেলা যা আসলেই আনন্দ দেয় সে কাজের সাথে সবসময় নিজেকে যুক্ত রাখা প্রয়োজন।
২. একটু ভাবুন :
কি করলেন আজ সারাদিন ? কাজ কতটুকু গোছানো হলো ? বাকী কাজগুলো কখন সারবেন – এই সবকিছুর একটা প্ল্যানিং করে ফেলুন । অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে, পিসির নোটপ্যাডে বা হাতের কাছে পাওয়া কাগজে ।
৩. জায়গা নিশ্চিত করুন:
কর্মক্ষেত্রে নিজের ভূমিকা কতটুকু সেটা বুঝতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে প্রজেক্ট প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যের সাথে সরাসরি যুক্ত এবং নিজের দক্ষতার সাথে মিলে যায় সে প্রজেক্টকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এভাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের প্রতি ফোকাস থাকলে খুব সহজে কাজের চাপ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
৪. চাপ কমান :
অফিসের চেয়ারে আরাম করে বসে দেয়ালের দিকে একটি বিন্দুতে স্থির দৃষ্টি রেখে ধীরে ধীর বুক ভরে শ্বাস নিয়ে আবার ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ছেড়ে দিতে হবে। প্রতি সেশনে চার বার চর্চাটি করলে অনেকটাই স্বস্তি পাওয়া যাবে।
৫. ২+২=৪ :
যে পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় সে পরিস্থিতিকে অন্য দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা। অর্থাৎ নিজের মত পুরো গল্পটাই বদলে ফেলা। যে কোন বিষয় ইতিবাচকভাবে চিন্তা করা কর্মক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে অস্বস্তির চেয়ে স্বস্তির জায়গাটাই বেশি থাকে।
৬. প্রসংশা করুন :
কর্মব্যস্ততার মাঝে হয়তো কাউকে তার প্রাপ্য ধন্যবাদটা দেয়াই হল না। কিন্তু ছোট্ট এই কথাটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা কর্মক্ষেত্রে বোঝা যায়। সারদিনের কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো কাজগুলো লিখে রাখুন। দিনশেষে নিজের অর্জন দেখে নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। এবং সহকর্মীকে ধন্যবাদ এবং ধন্যবাদের কারণ জানাতে ভুলবেন না। এতে সম্পর্ক যেমন সুন্দর হবে তেমনি মানসিক চাপ কমে আসবে।
৭. গান শুনুন :
সাধারণত দুপুরের পরে কিছুটা সময় ক্লান্তি যেনো ঘিরে ধরে চারিদিক থেকে । খাবার গ্রহণের পর একটু হাটুন, চা বা কফি এক কাপ খেতে পারেন ।এর একটু পরে বিকেল যখন সন্ধ্যার কাছা-কাছি চলে আসবে কিছুটা সময় প্রিয় কিছু গান শুনুন । দেখুন ম্যাজিকের মত কাজ করবে ।
৯. মেডিটেশন:
কথায় আছে বিশ্রাম হলো কাজের অঙ্গ । মস্তিষ্কের বিশ্রামটা বেশ জরুরি কোন কাজের ভালো ফলাফলের জন্য । কোন এক কাজের ফাঁকে একটু স্থির হয়ে বসুন, সকল চিন্তাকে এককেন্দ্রিক করে ফেলুন , সুন্দর কিছু মুহূর্ত মনে করতে থাকুন, চোখ বন্ধ রাখলে হয়তো সুবিধা হবে এক্ষেত্রে । খুব বেশি সময় না করতে পারলেও অন্তত ১০ মিনিট এটা করার চেষ্টা করুন ।
ফলাফল দ্রুতই পাবেন ।
১০ . নোট রাখুন :
ফোনের রিং, মেইল ইনবক্স, ভয়েসমেইল কিংবা সহকর্মীর জিজ্ঞাসা যে কোন কিছুতেই কাজে বাঁধা পরতে পারে। প্রচন্ড মানসিক চাপে হ্রাস পায় কাজের গতি। এক্ষেত্রে শনাক্ত করতে হবে ঠিক কী কারণে কাজের গতি অব্যাহত থাকছে না। যখন কাজের মাঝে বাঁধা সৃষ্টি হয় সাথে সাথে লিখে রাখা যেতে পারে কেন এবং কখন কাজের গতি মন্থর হয়ে গিয়েছে।
জীবনের বাঁকে নানা টানাপোড়েন কাটিয়ে মুক্ত হোক মানসিক চাপ। প্রশান্তির সাথে স্বস্তি সাথে ভালো কাটুক কর্মব্যস্ত প্রতিটি দিন।