কীভাবে ‘ডেইলি রুটিন’ তৈরি করবেন?

কীভাবে ‘ডেইলি রুটিন’ তৈরি করবেন?

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

সুন্দর ডেইলি রুটিন বলতে বুঝায় দৈনিক পড়ার রুটিন। এটি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু অন্যান্যদের ক্ষেত্রে একটি ডেইলি রুটিনের গুরুত্ব কেমন তা বুঝানোর তেমন দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। তার কারন যে কেউ জানেন এই ডেইলি রুটিনের গুরুত্ব কতটুকু। যারা নিতান্তই অগোছালো তারাও এই রুটিনের কিছু কিছু পালন করেন। অনেকেই যদিও কোন রুটিন রাখেন না তবুও ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ কিংবা গোসল করা অথবা নাস্তা খাওয়া এর সবই রুটিন।  কিন্তু এসব হয় মনে মনে। কোন প্রমান থাকে না। আচ্ছা ভাবুন তো লেখাপড়া কি স্কুল কলেজ ছাড়াও শেখা যায় না? অবশ্যই যায় তবু কেন স্কুল? অর্গানাইজড!  স্কুলে কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি বাধ্যতামূলক রুটিনে পড়ানো হয়। এবং প্ল্যান অনুযায়ী এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাল ছাত্র হওয়ার উপায় বলতে সেই সুন্দর একটি ডেইলি রুটিনের কথাই চলে আসে।

কিভাবে একটি সুন্দর ডেইলি রুটিন বানানো যায়?

সুন্দর ডেইলি রুটিন বানানোর ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ের দিকে নজর দিতে হয়। প্রসঙ্গত চলে আসে কি পেশা আপনার? ছাত্র, শিক্ষক, কিংবা চাকুরী অথবা ব্যবসায়ী? কিভাবে আপনি সফল ব্যবসায়ী হবেন? কিভাবে আপনি সফল চাকুরীজীবি হবেন? কিংবা কিভাবে আপনি নিজ নিজ পেশায় সফল হবেন? এর সব কিছুই নির্ভর করছে আপনার কাজের উপর।

কাজের একটি তালিকা তৈরি করুন– যত কাজ আছে তার সব মিলিয়ে একটি তালিকা করা দরকার। ধরুন আপনি যে কাজ করেন তার সব মিলিয়ে তিনটি তালিকা হতে পারে। এক-ব্যক্তিগত, দুই-ফ্যামিলি রিলেটেড, তিন-অফিস রিলেটেড। ছাত্র ছাত্রীদের ক্ষেত্রে এটা এমন হয় ব্যক্তিগত, ফ্যামিলি রিলেটেড, স্কুল/কলেজ/ইউনিভার্সিটি রিলেটেড। সব মিলিয়ে একটি তালিকা করাই ভাল, তবে উপতালিকা করে তিনটি ভাগে ভাগ করে রাখতে হবে।

কাজের জন্য সময় বের করা

মানুষের জীবনের সবচে’ বড় যুদ্ধ হচ্ছে সময়ের সাথে যুদ্ধ। পেরে উঠেনি কেউই। এজন্য একটা নির্দিষ্ট সময় পর সবাইকেই পৃথিবীর সব কাজ রেখে চলে যেতে হয় পরপারে। তাই বলে কি সময়ের সাথে এই নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন? না, সময় নিয়ন্ত্রন করেই সফল হতে হয়। প্রত্যেক কাজের জন্য আলাদা করে সময় নির্ধারন করুন। মনে রাখবেন প্রথম প্রথম আপনার সময় কম বেশি হতে পারে। কোন কাজ সময়ের আগেই শেষ হয়ে যেতে পারে কোন কাজে বেশি সময় লাগতে পারে। সুন্দর ডেইলি রুটিনের সুবিধাই হচ্ছে জীবনকে কিছু বাড়তি সময় উপহার দেয়া। দেখবেন আপনার বাড়তি সময় কিভাবে বেরিয়ে আসে।

এলার্ম টুলস ব্যবহার করুন

আপনি নিজেই ভুলে যেতে পারেন কোন সময়ে আপনার কি কাজ পড়ে আছে। কাজের তালিকা সব সময় সাথে থাকে না। তাই স্মার্ট ফোনের ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে দেখতে পারেন। অথবা এলার্ম ব্যাবহার করে দেখতে পারেন। যদি আউটলুক ব্যবহার করেন তবে সেখানেও ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এছাড়াও অনেক নতুন লিষ্ট সফটওয়্যার পাওয়া যায় যা দিয়ে সময়ের সাথে সাথে নটিফিকেশন পাওয়া যায়। এগুলো টুলস আপনাকে দিতে পারে অনেক রকমের সুবিধা। রুটিনের প্রত্যেক ইভেন্ট এই এলার্মের আওতায় থাকবে। গুগল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করেও আপনি অনেক বেশি অর্গানাইজড থাকতে পারেন।

কিভাবে গুগল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে অর্গানাইজড থাকবেন?

প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করে ফেলা

রুটিনে আছে তাই বলে বসে থাকলে চলবে না, কাজ শেষ করতে হবে। পরের দিন আবার সেই কাজ নতুন করে করতে হবে। আগের দিনের কাজ দিয়ে শুরু করার কোন মানে নেই। রুটিনের মধ্যে থাকা গোসল, দাঁত ব্রাশ, খাবার গ্রহন কি পরের দিনের জন্য রেখে দেন? তা তো নশ্চয়-ই না। তবে কাজ কেন থেকে যাবে?

কাজকে সপ্তাহ ভিত্তিক সাজান

কাজ যদি বেশি পরিমানে হয় যে দৈনিক শেষ হবার নয় তবে সপ্তাহে সাজান। যেমন ছাত্রছাত্রীদের ক্ষত্রে দশ থেকে বার খানা সাবজেক্ট থাকতে পারে। প্রতিদিন সব বিষয় পড়ার চেয়ে সপ্তাহব্যপি সাজিয়ে নেয়া যায়। তেমনি কাজের ক্ষেত্রে সেই রকম সপ্তাহব্যাপি সাজানোর সুবিধা অনেক।

কাজকে মাস ভিত্তিক সাজান

মাসের জন্য কিছু কাজ রেখে দেয়া যায়। অর্থাৎ কিছু কাজ মাসিক ভিত্তিতে করে ফেলা যায়। বড় কাজের ক্ষেত্রে এমন করতে হয়। প্রতিদিন অল্প অল্প করে এগিয়ে নিয়ে মাসের শেষে কাজ শেষ করে ফেলা সহজ হয়। মনে রাখবেন এই সব কিছুই আপনার নিজের উপর। কোন কাজ মাসের শেষের দিকে হলেও অসুবিধা হয় না তা আপনাকেই বের করতে হবে। দিনের কাজ যদি মাসে নিয়ে আসেন তবে ভুগতে হবে।

এভাবেই একটি সুন্দর ডেইলি রুটিন আপনাকে দিতে পারে অনেক বেশি প্রশান্তি। আর এভাবেই আপনি পেয়ে যেতে পারেন অনেক অপ্রাপ্তিকেও।

Sharing is caring!

Leave a Comment