ধান কাটা হলো সারা
ফিচার ডেস্ক : শীত এসেই গেল! সকাল মানেই প্রকৃতিতে এখন ঘোরলাগা কুয়াশা। সেই কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে সকালের সোনারোদ। শেষ হেমন্তের মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা সোনালী ধান। লেজঝোলা ফিঙে আর শালিক ঝগড়া করে, তারপর উড়ে যায়। এসব কিছুই দেখার ফুরসত নেই যেনো কৃষকের! মাঠের পাকা ধান কেটে তুলতে হবে গোলায়। সে কাজেই ব্যস্ত বাংলার কৃষকেরা।
সোনাবরণ মাঠ
মাঠের পর মাঠ এখন সোনালী রঙের। কারণ আমন ধান পেকে সোনা রঙ ধারণ করেছে। তাই যতদূর চোখ যায় একটা হলুদ মাঠ ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ে না। এই মাঠ এখন রিক্ত হতে শুরু করেছে। মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধানকাটা উৎসব।
বাতাসে পাকা ধানের গন্ধ
হেমন্তের বাতাসে ভেসে বেড়ায় পাকা ধানের মিষ্টি ঘ্রাণ। দিনভর কয়লা খাটুনি খেটে ধান কাটার পর মাড়াই শেষে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। তাদের এ কাজে সহযোগিতা করছেন কৃষাণি বধূরাও। আর এভাবেই দেখতে দেখতে গোলা ভরে উঠছে কৃষকের।
গ্রামে গ্রামে চলছে নবান্ন উৎসব
ঋতুচক্রের নিয়মেই হেমন্তের হাত ধরে আসে নবান্ন। গ্রামবাংলার মাঠে-খেতে চলছে আমন ধান কাটার মহোৎসব নবান্ন (অর্থ: নতুন অন্ন)। যা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব। নবান্ন হল নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে পাওয়া চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে কোনো কোনো অঞ্চলে ফসল তোলার পরদিনই নতুন ধানের নতুন চালে ফিরনি-পায়েশ অথবা ক্ষীর তৈরি করে আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর ঘরে ঘরে বিতরণ করা হয়।
নবান্নে জামাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়, মেয়েকেও বাপের বাড়িতে ‘নাইওর’ আনা হয়। নবান্নে নানা ধরনের দেশীয় নৃত্য, গান, বাজনাসহ আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালিত হয়। লাঠিখেলা, বাউলগান, নাগরদোলা, বাঁশি, শখের চুড়ি, খৈ, মোয়ার পসরা বসে গ্রাম্যমেলায়।