ভূতলেখকদের কাণ্ড-কীর্তি!

ভূতলেখকদের কাণ্ড-কীর্তি!

  • মারুফ ইসলাম

নিচের তালিকায় চোখ বুলানোর পর যখন আপনি জানবেন এই বইগুলোতে যাঁর নাম লেখা রয়েছে তিনি বইগুলো লেখেননি, লিখেছেন অন্যকেউ তখন কী করবেন? ভাবতে ভাবতে তালিকাটা দেখে নিন:

আলোকজান্ডার দুমার দ্য থ্রি মাসকেটার্স, মিশেল ক্রিসটনের ল্যাটিচিউড, ইয়ান ফ্লেমিংয়ের জেমস বন্ড, হিলারি ক্লিনটনের লিভিং হিস্টোরি, ডোনান্ড ট্রাম্পের দ্য আর্ট অব দি ডিল… এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। তারচেয়ে চলুন, জেনে নেওয়া যাক ইতিহাসে ঠাঁই করে নেওয়া কয়েকজন ‘গোস্টরাইটার’ বা ভূতলেখক সম্পর্কে।

রেমন্ড বেনসন

নাম শুনে চেনা যাচ্ছে না, তাই তো? যদি বলি এই ভদ্রলোকই বিশ্বখ্যাত গোয়েন্দা সিরিজ জেমস বন্ডের ১২টি বই লিখেছেন, তাহলে কী অবিশ্বাস করবেন? অবিশ্বাস করলেও সত্যটা উল্টে যাবে না। সত্য হচ্ছে, ১৯৯২ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত জেমস বন্ড সিরিজের সকল বই রেমন্ড বেনসনই লিখেছেন। যদিও মুদ্রিত বইয়ে আপনারা দেখেছেন ইয়ান ফ্লেমিংয়ের নাম। এই তথ্য আপনার কাছে বিস্ময়কর মনে হলেও পশ্চিমা বিশ্বে তা মোটেও বিস্ময়কর কিছু নয়। কারণ সেসব দেশে গোস্টরাইটার একটি সম্মানজনক পেশা এবং অন্যকে দিয়ে বই লিখিয়ে নেওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে। রেমন্ড বেনসন একজন পেশাদার গোস্টরাইটার। তিনি জেমস বন্ড ছাড়াও জনপ্রিয় স্পাই থ্রিলার ফ্যান্টাসি সিরিজ টম ক্লেনসিস ইসপ্লিন্টার-এর গোস্টরাইটার ছিলেন।

লরা বুশ

না, লরা বুশ ভূতলেখক নন, বরং সাবেক এই মার্কিন ফার্স লেডির বহুল আলোচিত আত্মজীবনী স্পোকেন ফ্রম দ্য হার্ট  লিখেছেন একজন গোস্টরাইটার। তাঁর নাম লিরিক উইনিক। এক সাক্ষাৎকারে লরা বুশ সেটা স্বীকারও করেছেন—‘গল্পটা আমার। তবে গল্পটিকে শব্দ ও অক্ষরে চমৎকারভারে বুনেছেন লিরিক।’

জন এফ কেনেডি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির প্রোফাইলস ইন কারেজ নামের বইটি ব্যাপক জনপ্রিয় একটি বই। এটি পুলিৎজার পুরস্কারও জিতেছিল। কিন্তু বইটি তাঁর নিজের লেখা নয়, তিনি এটি লিখিয়ে নিয়েছেন একজন ভূতলেখককে দিয়ে। তাঁর নাম টেড সরেনসেন।  টেড ছিলেন কেনেডির দীর্ঘকালের বক্তব্যলেখক।  কেনেডি যখন ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর ছিলেন তখন থেকেই টেড সরেনসেন তাঁর রাজনৈতিব বক্তব্য লিখে দিতেন।

দ্য বেবিসিটার্স ক্লাব

দ্য বেবিসিটার্স ক্লাব নামটি দেখলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে অ্যান এম মার্টিনের নাম। দ্য বেবিসিটার্স ক্লাবের ৩৫টি বই লিখেছেন এই লেখক। কিন্তু আপনি কি জানেন, ৩৬তম বইটি লিখতে গিয়ে থেমে যান অ্যান এম মার্টিন? তিনি সিদ্ধান্ত নেন এই সিরিজ আর লিখবেন না। প্রকাশক পড়ে যান বিপদে। কী করবেন? খুঁজতে শুরু করেন ভূতলেখক। পেয়েও যান পিটার লেরাঙ্গিসকে। দ্য বেবি সিটার্স ক্লাবের পরের সিরিজগুলো তিনিই লিখেছেন।

সূত্র: মেন্টাল ফ্লস, দ্য রাইটার্স ফর হায়ার ও কমনওয়েল থিয়েটার

Sharing is caring!

Leave a Comment