২২০০ শিক্ষার্থী পেল ডিসিএল ল্যাপটপ

২২০০ শিক্ষার্থী পেল ডিসিএল ল্যাপটপ

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক

তথ্য প্রযুক্তির ক্রমবিকাশমান ধারার সাথে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে যুগোপযোগী করে তুলতে এবং প্রতিযোগীতামূলক চাকরির বাজারে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘একজন ছাত্র একটি ল্যাপটপ’ প্রকল্পের নিয়মিত কর্মসূচীর অংশ হিসাবে ১৮তম পর্বে আজ ১১ মার্চ (রবিবার)  বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ২২০০টি ডিসিএল ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.ইউসুফ এম ইসলাম, উপ- উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার ও ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। ল্যাপটপ প্রদানের পূর্বে  বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হামিদুল হক খান একাডেমিক ও শিক্ষা কার্যক্রমে ল্যাপটপের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করান। ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের সহায়তায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১০ সালের সামার সেমিস্টার থেকে এ পর্যন্ত ২২০০০ ল্যাপটপ বিতরণ করেছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ প্রোগ্রামার প্রয়োজন। উন্নত বিশ্বের এই চাহিদা মাথায় রেখে বাংলাদেশ সরকার ২৮টি আইটি পার্ক তৈরি করছে এবং তিন লাখ প্রশিক্ষিত প্রযুক্তিবিদ তৈরি করছে। এ ক্ষেত্রে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভূমিকাও অনস্বীকার্য। বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের আইসিটি খাতকে এগিয়ে নিতে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করছে। ইতিমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিপুল সংখ্যক দক্ষ মানবসম্পদ সরবরাহ করেছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়।

জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, বাংলাদেশ তো বটেই, সারা বিশ্বে এমন বিশ্ববিদ্যালয় খুব কম আছে যারা শিক্ষার্থীদের হাতে বিশ্বজয়ের হাতিয়ার ল্যাপটপ বিনামূল্যে তুলে দেয়। বাংলাদেশে আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এমন নজির স্থাপন করতে পারেনি। এজন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান জুনায়েদ আহমেদ পলক।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব চলছে। এখন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাংক, গার্মেন্টস থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে রোবট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, বিগডেটা ইত্যাদি। ফলে এখন আমাদের দরকার দক্ষ প্রযুক্তবিদ, প্রোগ্রামার, প্রবলেম সলভার ও ক্রিটিক্যাল থিংকার। তা না হলে বিশ্বজয় করা সম্ভব নয়। তোমাদের হাতে আছে বিশ্বজয়ের হাতিয়ার ল্যাপটপ।  তোমরা এর সফল ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করবে বলে আশা করি।

এ সময় জুনায়েদ আহমেদ পলক আরো বলেন, ল্যাপটপ দিয়ে শুধু ফেসবুক, টুইটার আর ইউটিউব দেখলেই চলবে না। মনে রাখতে হবে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কিশোর বয়সেই প্রোগ্রামিং শিখেছিলেন। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ১৯ বছর বয়সেই ফেসবুক তৈরি করেছিলেন। তাহলে তোমরা কেন পিছিয়ে থাকবে? স্বপ্ন আর নিষ্ঠা থাকলে তোমরাও সফল হবে। তোমাদের শ্লোগান হোক—একটি শিক্ষার্থী, একটি ল্যাপটপ, একটি স্বপ্ন।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি তার শিক্ষার্থীদেরকে আর্ট অব লিভিং শিক্ষা দেয়, এমপ্লয়অবিলিটি ৩৬০ ডিগ্রি কোর্স করায় এবং বিনামূল্যে ল্যাপটপ বিতরণ করে যাতে তারা নিজেদেরকে দক্ষ ও যোগ্যরূপে গড়ে তুলতে পারে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব কর্মসূচির কারণেই তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বের জায়গায় পৌঁছে গেছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. মো. সবুর খান বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় চায় তোমরা এই ল্যাপটপের সঠিক ও কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদেরকে আধুনিক পৃথিবীর উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলো। এসময় তিনি অ্যামাজন ও আলীবাবার উদাহরণ দিয়ে বলেন, সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকার প্রথম স্থানে উঠে এসেছে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের নাম।  তিনি শুধুমাত্র একটি কম্পিউটার দিয়েই শুরু করেছিলেন তার ই-কমার্স ব্যবসা। আলীবাবার কথাও কমবেশি সবাই জানে। তার জীবনে ব্যর্থতার শেষ নেই। তবু তিনি হাল ছাড়েননি। তোমরাও চেষ্টা করলে সফল হবে।

শিক্ষার্থীদেরকে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. মো. সবুর খান বলেন, আমাদের দেশে প্রচুর উদ্যোক্তা প্রয়োজন। তাই তোমরা উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করো। যদি উদ্যোক্তা হতে গিয়ে ব্যার্থ হও, তবু তুমি কর্মক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে ভালো করবে।  কারণ অন্যদের চেয়ে তোমার অভিজ্ঞতার পাল্লা হবে ভারী।

Sharing is caring!

Leave a Comment