ফ্রান্সে পড়াশোনা

ফ্রান্সে পড়াশোনা

  • রবিউল কমল

ইউরোপের বৃহত্তম দেশের একটি ফ্রান্স। শিল্পকর্মের জন্য ফ্রান্স বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। কেউবা একে বলেন শিল্পের নগরী। জীবনযাপন আভিজাত্যপূর্ণ। তাই জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেশি। শিল্প ও প্রযুক্তিতে অগ্রসর হওয়ার পেছনে ফ্রান্সের শিক্ষাব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। শক্তিশালী অর্থনীতি, উন্নত জীবনযাত্রা এবং মানসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনার কারণে সারাবিশ্ব থেকে শিক্ষার্থীরা ফ্রান্সে পড়াশোনা করতে আসে।

পড়াশোনার মাধ্যম
এখানের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করানো হয় ফরাসি ভাষায়। বিদেশী শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা করতে পারেন। স্থানীয়দের সঙ্গে চলতে হলে তাদের ভাষাও রপ্ত করতে হবে। এতে পড়াশোনার পাশাপাশি যোগ্যতা অনুযায়ী ভালো কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে।

ভর্তি প্রক্রিয়া

ফ্রান্সে ভর্তি প্রক্রিয়া অন্যসব দেশের মতোই। এখানেও একই ধরনের নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হয়। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবন্ধ আহ্বান করে। প্রবন্ধের বিষয় কি হবে তা-ও তারাই ঠিক করে দেয়। সুনির্দিষ্ট বিষয়- কে কীভাবে বুঝতে পারে, উপস্থাপন করতে পারে তা দেখা হয় প্রবন্ধের মাধ্যমে। তাই এই বিষয়টি সতর্কতার সাথে করতে হয়। যাতে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হলে পরবর্তী কার্যক্রম কি হবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও মেধা যাচাইয়ের জন্য এটি করা হয়। ইংরেজিতে দক্ষতা পরিমাপের জন্য টোফেল পরীক্ষা দিতে হয়।

পড়াশোনার বিষয় :
পছন্দের যে কোনো বিষয়ে এখানে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। বিদেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীরা জেনেটিকস, ফিজিক্স, মেডিসিন, বায়োলজি, ম্যাথমেটিক্স, অ্যাস্ট্রোফিজিক্স এবং বিভিন্ন বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়ে বেশি আগ্রহী হয়। এছাড়া শিল্পকলায় আগ্রহীরাও বিভিন্ন মেয়াদী প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারেন।

শিক্ষাবৃত্তি
ভর্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরীক্ষার রেজাল্ট বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। পাশাপাশি পারিবারিক আর্থিক স্বচ্ছলতার বিষয়ও প্রমাণ করতে হয়। পড়াশোনার খরচ ছাড়াও বিদেশে সন্তানের জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে সক্ষম এই মর্মে পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার কাগজপত্র প্রদর্শন করতে হয়। এটা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। মেধাবী শিক্ষার্থীরা বৃত্তির সুযোগ পেতে পারেন। বৃত্তিপেলে পড়াশোনার খরচ অনেক কমে যাবে।

ভর্তির যোগ্যতা : 

সিজিপিএ প্রভৃতি বিষয় ইনস্টিটিউট ভেদে ভিন্ন হতে পারে।

খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ

বিদেশি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট সময় কাজ করার সুযোগ পায়।এছাড়া ছুটির সময় ফুলটাইম কাজ করা যায়। সাধারণত বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও ডিপার্টমেন্টাল শপগুলোতে পার্টটাইম করা যায়। ফ্রান্সে পার্টটাইম জব থেকে অর্জিত আয়ে লেখাপড়ার সব খরচ মেটানো সম্ভব।

কোর্সের মেয়াদ এবং টিউশন ফি
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম কোর্স  তিন থেকে সাড়ে তিনবছর মেয়াদী হয়।  খরচ পড়বে প্রতি বছর নয় হাজার থেকে ১২ হাজার ইউরো। গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের  মেয়াদ ১ থেকে ২ বছর। খরচ পড়বে প্রতি বছর ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার ইউরো।

জীবনযাত্রার ব্যয় :
একজন শিক্ষার্থীর জীবনযাত্রার ব্যয় নির্ভর করবে তার ব্যক্তিগত অভ্যাস ও আর্থিক সামর্থের ওপর। সাধারণত বছরে একজন শিক্ষার্থীর টিউশন ফি ব্যতীত বছরে ৭ হাজার থেকে ৯ হাজার ইউরো প্রয়োজন হয়।

আরও জানতে :
ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে সরাসরি ফ্রান্সের দূতাবাসে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়া ভর্তির ব্যাপারে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি  সহযোগিতা করে থাকে। যারা ফ্রান্সে পড়াশুনা করতে আগ্রহী তারা আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়া ফ্রান্সের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা পাওয়া যাবে নিচের লিংকে ক্লিক করে http://about-france.com/universities.htm । favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment