সাংস্কৃতিক উৎসবে চ্যাম্পিয়ন জাবি
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
আগের বার প্রথম রানারআপ। চ্যাম্পিয়ন না হতে পারার দুঃখ একটু তো ছিলই। এবার আর সে আফসোস নেই। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থীদের সংগঠন কালচারাল ফোরাম আয়োজিত আন্তবিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক উৎসব-২০১৬-তে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ১১ ও ১২ নভেম্বর তৃতীয়বারের মতো এই উৎসবের আসর বসল।
এ প্রসঙ্গে কথা হলো জাহাঙ্গীরনগর দলের দলনেতা মোফাসসাল আল আলিফের সঙ্গে। তিনি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বললেন, ‘শুধু চ্যাম্পিয়ন হইনি, বিচারকদের অনেক প্রশংসাও পেয়েছি। এটাই ছিল বড় অর্জন।’
তবে এ অর্জন সহজে আসেনি। ৮টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২টি মেডিকেল কলেজের মোট ১০টি দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে তাঁদের। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটি ছিল ২০ জনের। গান, অভিনয়, আবৃত্তি, মূকাভিনয় আর নাচে নৈপুণ্য দেখিয়ে তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। নিজেদের প্রমাণ করার জন্য তাঁরা সময় পেয়েছেন ২০ মিনিট। সঙ্গে আরও ১০ মিনিট ছিল মঞ্চ সজ্জার জন্য।
১১ নভেম্বর মিরপুর সেনানিবাসের বিজয় মিলনায়তনে এ উৎসবের প্রতিযোগিতা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রথম রানারআপ হয়েছে বুয়েট। যৌথভাবে দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে স্বাগতিক বিইউপি এবং আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজের দলটি পেয়েছে ‘মোস্ট আউটস্ট্যান্ডিং অ্যাক্ট’ পদক।
১২ নভেম্বর ছিল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিইউপির উপাচার্য মেজর জেনারেল সালাহ উদ্দিন মিয়াজি, আরসিডিএস, পিএসসি।
আলিফের কাছে কথা প্রসঙ্গে জানতে চাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনের গল্প। ২০ জনের একটা দল নিয়ে কাজ করা, কঠিন ছিল কি? বললেন, ‘নিশ্চয়ই। আসলে প্রতিযোগিতার আগের রাত ছাড়া আমরা সবাই একত্রও হতে পারিনি। একেক জন একেক বিভাগের। কারও ক্লাস, কারও পরীক্ষা। একত্র হতে না পারলেও আমরা নিজেদের কাজটা ভালোভাবে করেছি। সবারই ভালো করার চেষ্টা ছিল। আর এতে আমাদের আন্তরিক সহযোগিতা করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ও এই সংগঠনের সভাপতি জুবায়ের টিপু। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রও আমাদের পাশে ছিল।’
১১ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রতিযোগিতা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিচারক হিসেবে ছিলেন অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু, নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা, সংগীতশিল্পী পিন্টু ঘোষ এবং অভিনেতা আরমান পারভেজ মুরাদ।
জাহাঙ্গীরনগরের দলের আরেক সদস্য পদ্মজা পিংকি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী। সাংস্কৃতিক উৎসবের দলীয় প্রতিযোগিতায় তিনি আবৃত্তি করেছেন মল্লিকা সেনগুপ্তের কন্যাশ্লোক কবিতাটি। অভিনয়েও ছিলেন। অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বললেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি। তবে এই অর্জন পুরো জাহাঙ্গীরনগরের।’
উৎসব নিয়ে কথা হয় বিইউপি কালচারাল ফোরামের সভাপতি শামিম ইয়াসিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এই ক্লাবটি শুধু একটা ক্লাব নয়। অনেক আবেগ আর ভালোবাসারও একটা জায়গা। দেশে পাবলিক আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিকভাবে যুক্ত হওয়ার খুব বেশি উদ্যোগ নেই। সেই চিন্তা থেকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং চর্চাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে আমরা এই আয়োজন করি।’ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির প্রতিযোগী দলগুলোকে অংশ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।