সাংবাদিকতায় অনুসরণীয় যে নারীরা

সাংবাদিকতায় অনুসরণীয় যে নারীরা

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক 

পৃথিবী এগিয়ে চলছে। আর তার সাথে সাথে এগিয়ে চলছে মানুষও। শুধু পুরুষই নয়, তাদের পায়ের সাথে সমান তাল রেখে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরাও। ঘরে-বাইরে কোথায নেই নারীরা? বিশেষ করে নারী সাংবাদিক, তাদের কথা তো মোটেই ভুলে যাওয়ার মতন নয়। জীবনের বাজি রেখে দুর্গম থেকে দুর্গমতর স্থান থেকে তারা এনে দিয়েছেন খবর, করেছেন অসম্ভব রকমের কষ্ট, আর উঠে এসেছেন সবার চাইতে উঁচুতে। আর সারা বিশ্বের নারী সাংবাদিকদের ভেতরে এমন শ্রেষ্ঠ কয়েকজন সাংবাদিকের কথাই নীচে বলা হল।


অ্যান কারি

আমেরিকার এই টিভি ব্যাক্তিত্ব ১৯৫৬ সালের ১৯ নভেম্বর জন্ম নেন গোহামে। বাবা নেভিতে ছিলেন। মা ও ছিলেন আমেরিকার কাজে জাপানে নিয়োজিত। এসবের ভেতরেই বেড়ে ওঠেন একটু একটু করে এই মানুষটি। অ্যামি অ্যাওয়ার্ড, গ্র্যাসি অ্যাওয়ার্ডসহ আরো অনেক অনেক পুরষ্কারের অধিকারী এই নারী  ১৯৭৮ সালে নিজের কাজ শুরু করেন। ১৯৮০ পর্যন্ত রিপোর্টার হিসেবে কাজ করে যান কেটিভিএলে। এরপরের চার বছর কাজ করেন কেজিডব্লিউ এ। তবে সেখানে উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেন তিনি। এর পরের ৬ বছর কেসিবিএসে যোগদান করেন অ্যান। আর সবশেষে টানা ২৫ বছর কাজ করেন এনবিসি নিউজে। প্রথমে এনবিসির শিকাগোর মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। এক বছর পরেই উপস্থাপনা করা শুরু করেন এনবিসি নিউজ এট সানরাইজের। পরবর্তিতে ডেডলাইন এনবিসি, এনবিসি সাইটলি নিউজ ও টুডের সহ-উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেন অ্যান। সর্বশেষ এনবিসি নিউজের বিশেষ উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেন তিনি। তবে শুধু এতটুকুই নয়। এই সময়ের ভেতরেই একের পর এক সামাজিক কাজ করে যান অ্যান এসব কাজের পাশাপাশি। নানারকম সংস্থা যেমন – সেভ দ্যা চিলড্রেন, বিল্ডন, অ্যামেরিকেয়ারস সহ আরো নানারকম দাতা সংস্থার সাথে যুক্ত রয়েছেন অ্যান। ২০১৫ সালে টানা অনেকদিন ধরে এনবিসিতে কাজ করবার পর চাকরি ছেড়ে দেন অ্যান। ১৩ জুন ২০১৫ তেএনবিসি থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় যে অ্যান এনবিসি ছাড়ছেন। প্রতিষ্ঠা করেন নিজের প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে টিবিএ তে কাজ করছেন তিনি।

 হেলেন বোডেন

১৯৫৬ সালের ১ মার্চ সাসেক্সের কোলচেষ্টারে জন্ম নেন হেলেন বোডেন। পরিবার সম্পর্কে মনে করতে গেলে একটা কথায় বলতে পারেন তিনি। আর সেটা হল পরিবারের কোলাহল। ঘরের সর্বত্র চেঁচামেচি আর বিশৃঙ্খলা নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে থাকতেন বোডেন সবসময়। আর তাই স্কুলের হোষ্টেলে চলে আসবার পর যেন অনেকটাই বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। তার কথায় আগের চাইতে অনেক বেশি শান্ত ছির জায়গাটা। অনেক বেশি চুপচাপ। একে একে সেখান থেকেই স্কুলজীবনের ইতি টানেন তিনি। স্নাতক পাশ করেন সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এমবিএ করেন ইউনিভার্সিটি অব পেনিনসুলা থেকে। আর এরপরই ১৯৭৮ সালে লন্ডনের হ্যাকনেতে কাজ করতে শুরু করেন বোডেন। এর পরের বছরেই নিউইয়র্কের ডব্লিউবিএআই রেডিও তে যোগদান করেন তিনি। সেখানে বেশকিছু বছর কাটে তার। নিজের কাজ সম্পর্কে দক্ষ হতে রেডিও সাংবাদিকতার ওপর পড়াশোনা করেন বোডেন। এরপর বিবিসিতে যোগ দেন তিনি। ম্যানচেষ্টারে বিইসির পক্ষ থেকে উইম্যান আওয়ারে কাজ করেন তিনি। পরবর্তীতে রাজনৈতিক নানারকম অনুষ্ঠানেও শোনা যায় তাকে। ১৯৯৭ সালে বিজনেস প্রোগ্রামের প্রধান এবং পরবর্তীতে দৈনন্দিন জীবনের ওপর বিবিসির করা অনুষ্ঠানের প্রধান হলেও শেষ তাকটা বোডেন লাগান ২০০৪ সালে। বিবিসি নিউজের প্রধান হয়ে। ২০১২ সালে এত সাফল্যে পরেও কিছু সমস্যার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বোডেনকে তার পদ থেকে। তবে সেটা সামান্য সময়ের জন্যেই। ২০১৩ সালেই আবার বিবিসিতে ঢোকেন তিনি। তবে এবার রেডিওটির পরিচালক হিসেবে আসেন তিনি।

 গ্রেটা ভ্যান সাসটেরান

উইসকনসিনের এপলেটনে জন্ম নেন গ্রেটা ভ্যানটন। উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিজের পড়াশোনা শেষ করে লেগে যান কাজে। তবে আরো অনেকের মতই অর্থনীতি আর ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করলেও সাংবাদিকতাকেই নিজের প্রথম পছন্দের জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ভ্যান। যদিও পরবর্তীতে আরো ভালো করার জন্যে আইন শিক্ষাটাও নিয়ে এআখোন তিনি। ও.জে. সিম্পসন খুনের মামলার সময় বারবার সিএনএনের পর্দায় চলে আসেন গ্রেটা। কাজ করেন সেখানে বিশ্লেষক হিসেবে। এটাই তাকে সাহায্য করে সিএনএনের বার্ডেন অফ প্রুফ এন্ড দ্যা পয়েন্টে সহ-উপস্থাপক হতে। ২০০২ সালে গ্রেটা ফক্স নিউজে চলে যান। আর তারপর থেকেই ফক্সে দৈনন্দিন বিষয়ের ওপর প্রচারিত অনুষ্ঠান অন দ্যা রেকর্ড ডব্লিউ গ্রেটা ভ্যান সাসটারেনের নিয়মিত সঞ্চালক হিসেবে কাজ করে চলেছেন তিনি। এর পাশাপাশি ২০১২ সালে হাইতিতে দ্যা গ্রেটা হোম এন্ড এ্যাকাডেমি নামে একটি এতিমখানা খোলেন গ্রেটা ও তার স্বামী দুজন মিলে। ২০১৪ সালে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোয়াইয়েন স্টোভেলকে সমালোচনা করার পর থেকে একন অব্দি স্টোভেল আর গ্রেটার ভেতরকার প্রতিদ্বন্ধিতার কথা বেশ পরিচিত। সেদিক দিয়ে রাজনৈতিক ঝামেলাতেও জড়িয়ে পড়েছেন গ্রেটা ভ্যান বেশ কয়েকবার। সম্প্রতি ফক্স নিউজ থেকে সরে আসেন গ্রেটা। ২০১৪ তে ফোর্বসের দেওয়া তালিকানুসারে বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় ও ক্ষমতাধর নারীদের ভেতরে গ্রেটা ভ্যান রয়েছেন ১০০ নম্বর আসনটিতে।favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment