হতে পারেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক

হতে পারেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক 

আমাদের দেশে প্রচলিত রয়েছে বহুমুখী চিকিৎসা ব্যবস্থা। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা। এর পরেই যে চিকিৎসা ব্যবস্থা মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে তার নাম হোমিওপ্যাথি। এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় খরচ তুলনামূলক কম এবং পদ্ধতিটাও অনেক সহজ হওয়াতে দিনে দিনে এর জনপ্রিয়তা আরো বাড়ছে। তাই এর মাধ্যমে মানবসেবার পাশাপাশি ক্যারিয়ার হিসেবেও এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে বেছে নেয়া যায়। অপরদিকে এ পেশায় আসার জন্য খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না, যে কোনো বয়সেই শেখা যায় হোমিও বিদ্যা। চিকিৎসা পদ্ধতি সহজ হলেও মানুষের আস্থা ও জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারলে এখান থেকে ভালো আয় করা সম্ভব। বর্তমানে অনেককে অন্য কাজের পাশাপাশি পার্টটাইম হিসেবেও এই পেশাকে বেছে নিয়েছে।


পড়াশোনা :

দেশের একমাত্র সরকারি হোমিওপ্যাথ মেডিক্যাল কলেজে বিএইচএমএস ইন হোমিও পড়ানো হয়। এটি ঢাকার মিরপুর ১৪ নম্বরে অবস্থিত। বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও আছে পাঁচ বছর মেয়াদি ডিগ্রি কোর্সে পড়ার সুযোগ। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি অনুষদের অধীনে হোমিও কলেজে ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের অধিভুক্ত অনুমোদিত কলেজগুলোতে হোমিওপ্যাথির ওপর পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় রয়েছে ৪৪টি বেসরকারি হোমিও কলেজ। এসব কলেজে ডিপ্লোমা কোর্সে পড়ার সুযোগ আছে।

ব্যাচেলর কোর্স :

বিএইচএমএস (ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) কোর্সটি পাঁচ বছর মেয়াদি। এ কোর্সটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়। কোর্স শেষে এক বছরের ইন্টার্নশিপ করতে হয়। ক্লাস হয় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। ভর্তির জন্য এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস হতে হবে।

প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষে পাঁচ বিষয়ে ১২০০ নম্বর, তৃতীয় বর্ষে পাঁচ বিষয়ে মোট ৯৫০ নম্বর, চতুর্থ বর্ষে পাঁচ বিষয়ে ১০৫০ নম্বর এবং শেষ বর্ষে ছয় বিষয়ে মোট ৯৫০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে। পোস্ট ডিপ্লোমা ট্রেনিং ইন হোমিওপ্যাথ : বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আছে এই কোর্স করার সুযোগ। এ কোর্স করতে হলে ডিএইচএমএস পাস হতে হয়। কোর্সটির মেয়াদ এক বছর। সাতটি বিষয় পড়ানো হয়। এরপর হোমিও হাসপাতালে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। সাধারণত বছরের জুলাই ও ডিসেম্বরে ভর্তি করা হয়। এক বছরে খরচ হয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। ডিপ্লোমা

কোর্স :

ঢাকার বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের অধীনে পরিচালিত হয় ডিএইচএমএস (ডিপ্লোমা ইন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি) কোর্স। কোর্সটির মেয়াদ চার বছর। কোর্স শেষে ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ করতে হয়। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য আছে দিবা শাখা এবং চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও অন্যদের জন্য আছে নৈশ শাখা। দিবা শাখার ক্লাস হয় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। নৈশ শাখার ক্লাস হয় বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। এসএসসি পাস হলেই ভর্তি হওয়া যায় এ কোর্সে। তবে উচ্চতর শিক্ষা থাকলে ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। চার বছরে মোট ২৫টি বিষয় পড়তে হবে। ভর্তির সময় জুলাই থেকে ডিসেম্বর। পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেয় হোমিওপ্যাথিক বোর্ড। চার বছরে মোট খরচ পড়বে কলেজভেদে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা।

কাজের ক্ষেত্র :

সরকারি ও বেসরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে চাকরির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রকল্পে কাজের সুযোগ বয়েছে। এছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানে নিজস্ব চেম্বার খুলে বসতে পারেন। এজন্য ডিপ্লোমা কোর্স শেষ করে হোমিও বোর্ড থেকে রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। ইচ্ছে করলে বাড়িতেও রোগী দেখতে পারেন।

আয় রোজগার :

একজন হোমিও ডাক্তার প্রাথমিক অবস্থায় খুব সহজেই ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করতে পারে। পরিচিতি পেলে এ অঙ্কটা দিনে দিনে বাড়বে। চেম্বারে রোগী দেখার পাশাপাশি রাখতে পারেন হোমিও ওষুধ। ভালো মানের ওষুধ রাখতে হবে। তাতে বিক্রির পরিমাণ যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে লাভের পরিমাণও।favicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment