আয়োজনটা শিক্ষানবীশদের জন্য

আয়োজনটা শিক্ষানবীশদের জন্য

  • রবিউল কমল

১৬ জুন ২০১৬, সকাল থেকেই মুখরিত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ধানমন্ডি ক্যাম্পাস। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় ড্যাফোডিল গ্রুপে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছুকদের নিয়ে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের। উদ্দেশ্য এই আয়োজনের মাধ্যমে যোগ্য ব্যাক্তিদের খুঁজে বের করা।

এর আগে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছুকদের নিবন্ধনের জন্য আহ্বান জানায় ড্যাফোডিল গ্রপ। তবে নিবন্ধনের জন্য শুধুমাত্র ড্যাফোডিলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কথা উল্লেখ করা হয়। নির্ধারিত সময় শেষে নিবন্ধনকারীদের মাঝ থেকে ৪০০ জনকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে আজকের বিশেষ কর্মশালা আয়োজন করা হয়।

এন্ট্রি পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে ৯.৩০ মিনিটে শেষ হয়। এরপর শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল আয়োজন। মূল আয়োজনের শুরুতেই আগতেদের গুড মর্নিং সেশনের মাধ্যমে স্বাগত জানান সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু। এরপর আবেদনকারীদের নিয়ে লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করা হয়।

১০.২০ মিনিটে মঞ্চে আসেন  ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা বিভাগের প্রধান সৈয়দ মারুফ রেজা। তিনি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ মিনিট বক্তব্য রাখেন। তিনি কথা বলেন ক্যারিয়ার এবং লাইফস্টাইল নিয়ে। এ সময় সমগ্র হল রুম ছিল শান্ত। সবাই খুব মনোযোগী হয়ে তার কথা শোনেন।

এর একটু পরেই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব চলতে থাকে। এ সময় প্রতিযোগীদের মাঝে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। যারা সঠিক উত্তর দিতে পেরেছেন তাদের জন্য নাম্বারের ব্যবস্থাও ছিল। এই পর্বটি পরিচালনা করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মির্জা বাকের সারওয়ার আহমেদ, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ মাসুম ইকবাল। এই পর্বে আবেদনকারীদের উদ্দেশে মোটিভেশনাল বক্তব্য রাখেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মির্জা বাকের সারওয়ার।

অনুষ্ঠানে আগত প্রতিযোগীদের দীর্ঘ লাইন
অনুষ্ঠানে আগত প্রতিযোগীদের দীর্ঘ লাইন

দুপুরে এক ঘণ্টার বিরতির পরে আবারো শুরু হয় অনুষ্ঠান। এটি ছিল আজকের অনুষ্ঠানের শেষ পর্ব। এই পর্বের মূল আকর্ষণ ছিলেন ড্যাফোডিল ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। তিনি আবেদনকারীদের উদ্দেশে প্রায় এক ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি আবেদনকারীদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন, বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এই ধরনের উদ্যোগ এটিই প্রথম। আমরা এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে যোগ্য ব্যাক্তিকে খুঁজে বের করতে চাই।’

সবুর খান আরো বলেন, ‘বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া নিজেকে গড়ে তোলা একেবারেই অসম্ভব। তাই সফল হতে হলে প্রযুক্তির সাথে সাথে নিজেকেও আপডেট করে গড়ে তুলতে হবে। তবেই নিজের গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব। এছাড়া ভালো ব্যবহার করতে জানাটাও জরুরি। ভালো ব্যবহারের মাধ্যমেও অনেক কিছুই জয় করা সম্ভব।’

একজন প্রতিযোগীর প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এখান থেকে পরীক্ষা এবং টোটাল মার্কসের মাধ্যমে নির্বাচিত ৫০ জনকে করে আগামী শনিবার ড্যাফোডিলের প্রধান ক্যাম্পাসে দিনব্যাপি একটি কর্মশালায় অংশ নিতে হবে। সেখান থেকে নির্বাচিত ২০ জনকে ৩ মাসের জন্য শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।

এদিকে এই আয়োজন নিয়ে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না। তারা বেশ মনোযোগ দিয়েই সমগ্র আয়োজন উপভোগ করেছে। অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বিবিএ বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র আশিক মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না আমি সুযোগটা পাব কিনা। তবে আমি খালি হাতে ফিরছি না।আমি এখানে এসে অনেক কিছু জানলাম, অনেক কিছু শিখলাম। যা আমার পরবর্তীতে জীবনে অনেক কাজে লাগবে। আমি মনে করি আমাদের দেশে এমন আয়োজন আরো অনেক প্রয়োজন।’

ট্রিপল ই বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের ছাত্র মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এই ধরনের আয়োজন অনেক দরকারি। এখানে অনেক কিছু শেখার আছে। আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে এসছিলেন সিইসি ১৪তম ব্যাচের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি জানান, ‘আমি আজ শিখলাম হতাশ না হয়ে নিজে অনেক কিছু করা যায়। সত্যি আমার খুব ভালো লাগছে এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে। ভবিষ্যতেও আমি আমি এই ধরনের প্রোগ্রামে অংশ নিতে চাই।’

সবশেষে আবেদনকারীদের ৩০ মিনিটের একটি লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১৫৫ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ৫০ জনকে নিয়ে আগামী শনিবার ড্যাফোডিলের প্রধান ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী একদিনের কর্মশালা আয়োজন করা হবে বলে জানান আয়োজক কমিটি।favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment