কার্যকর নেতৃত্ব দেওয়ার উপায়
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতেও তারা কাজ করে। ছুটি নিতেও কার্পণ্য করে। আর সবকিছুতেই নাক গলাতে চায়। এ ধরনের লোকেরাই আপনার কর্মস্থলের মাইক্রো ম্যানেজার। নিজেদের কাজে কর্মে খুব পটু হলেও এরা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করছে এবং কর্মীদের অতিষ্ঠ করে তুলছে। এর সবচেয়ে বড় কারণটি হলো সম্ভবত, এই ব্যবস্থাপকরা মনে করেন কর্মস্থলের সবকিছুর ওপরই তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। কারণ এরা নিজেদের কর্মস্থলকে অনিরাপদ এবং অস্থিতিশীল মনে করেন। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানো ব্যবস্থাপকরা পুরো প্রতিষ্ঠানের উন্নতি ও বিকাশের সম্ভাবনার লাগাম পেছনে টেনে ধরেন। এদের কারণে কর্মীরা কোনো বিষয়ে নিজেরা ভাবার সুযোগ পান না। এতে কর্মীদের আত্মবিশ্বাসেও ঘাটতি দেখা দেয়। এই ধরণের পরিবেশে শীর্ষ মেধাবীরা বিকশিত হওয়ার সুযোগ পান না। এমন পরিবেশে কেউ তার উদ্ভাবনী ক্ষমতাও কাজে লাগাতে পারেন না। কারণ শেখার মধ্য দিয়ে বড় হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় যে ভুল-ভ্রান্তি হয় তা সহ্য করা হয় না। আর তাছাড়া মাইক্রো ম্যানেজাররা অন্যের কাজে নাক গলাতে গিয়ে নিজের কাজও ঠিক মতো করতে পারেন না। আপনি নিজেও কি এমনই একজন ক্ষুদ্র ব্যবস্থাপক? শুধু আপনি একাই নন। আমাদের প্রায় সকলের মধ্যেই এমন ছোটোখাটো একেকজন মাইক্রোম্যানেজার বাস করেন। তবে এ থেকে বেরিয়ে আসার পথও রয়েছে:
১. ছোট ছোট পদক্ষেপে শুরু করুন। রাতারাতি নিজেকে বদলে ফেলার চেষ্টা না করে বরং একটু একটু করে চেষ্টা করুন। কারণ হঠাৎ করেই নিজেকে বদলে ফেলার চেষ্টা করলে হিতে বিপরীতও হতে পারে। আর আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরেই এমন ক্ষুদ্র ব্যবস্থাপনার কাজে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম চিন্তা করার দক্ষতাগুলোকে শানিয়ে তুলতেও একটু সময় লাগবে।
২. কর্মীদের কাছ থেকে কোনো নতুন ধারণা গ্রহণ করে তা কাজে লাগানোর মতো মুক্তমনা হন। কর্মীদের কাছ থেকে গৃহীত ধারণাগুলোর বাস্তবায়ন করে তাদেরকে আরো উৎসাহিত করুন।
৩. কোনো প্রকল্পের কাজ পুরোটাই নিজে একা একা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে বরং কর্মীদের মাঝে কাজ ভাগাভাগি করে দিন। কর্মীদেরকে পরীক্ষামূলকভাবে কোনো কাজ দিয়ে আপনি তাদের আরো ঘনিষ্ঠ হতে পারবেন। কর্মীরা অনুরোধ করলেই শুধু তাদের কাজে দিক-নির্দেশনা দিতে যাবেন। আর কর্মীদেরকে কোনো কাজে ব্যর্থ হতে দিন। এতে তারা নিজেরা ভাবার সুযোগ পাবে।
৪. মাইক্রোম্যানেজাররা প্রায়ই কোনো বিষয়ে অতি-পরিমাপ করে বসে থাকেন। উন্নত প্রযুক্তির বদৌলতে এখন যে কোনো বিষয়েই তথ্য পাওয়া আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে এসেছে। তবে মনে রাখবেন, তথ্য-উপাত্ত জানা থাক ভালো। কিন্তু তথ্যের অতিব্যবহার আপনাকে বিভ্রান্ত করতে পারে। আর তথ্য শুধু গল্পের একটি অংশই বলে।
৫. মাইক্রোম্যানেজাররা প্রায়ই কর্মীদের কাজ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে নিজেদেরকে অতি বিশ্লেষণে লিপ্ত হন। এ থেকে মুক্ত হওয়ার একমাত্র উপায়- অতিবেশি দিকনির্দেশনা দিতে যাবেন না। শুধু সবচেয়ে জরুরি তথ্যটুকু সরবরাহ করুন। কর্মীদেরকে নিজেদের মতো করে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার সুযোগ দিন।