আবাসন খাতের তরুণদের কর্মসংস্থানের প্রচুর সুযোগ রয়েছে
- ক্যারিয়ার ডেস্ক
দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি আবাসনের নিশ্চয়তার পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) অধীনস্থ আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিংবা স্বল্প শিক্ষিত-প্রশিক্ষিত সব ধরনের মানুষের কাজের সুযোগ হয়েছে এসব আবাসন প্রতিষ্ঠানে। এক সাক্ষাৎকারে আবাসন খাতে ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে নানা কথা বলেছেন রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
প্রশ্ন : তরুণদের কর্মসংস্থানে কতটা কাজে আসছে রিহ্যাব?
শাওন : দেশের আবাসন খাতে নানা ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিকের চাহিদা যেমন রয়েছে, তেমনি প্রকৌশল বা বিপণন খাতেও বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা ছেলেদেরও দরকার আছে। সাধারণত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য, পুরকৌশল, বিবিএ কিংবা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা আবাসন প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পায়। সেক্ষেত্রে বলা যায় কয়েক হাজার আবাসন প্রতিষ্ঠানের লাখো তরুণের কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। যা দেশের বেকারত্ব কিংবা মেধা পাচার রোধে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে।
প্রশ্ন : কত জন লোক আবাসন খাতে কাজ করছে? আর এখানে কাজের ধরন কেমন?
শাওন : এ খাতের সঙ্গে ৩৬ লাখ শ্রমিক ও ৩৬ লাখ শিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। নারী-পুরুষ সকলে সমানতালে এখানে কাজ করছে। এছাড়া প্রকৌশল বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ এবং বিজনেস সাইটে অসংখ্য ছেলেমেয়ে কাজ করছে। এর বাইরে ডিজাইন ও প্ল্যান টিমেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুরা স্নাতকরা কাজ করছে।
প্রশ্ন : আবাসন খাতে তরুণদের সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?
শাওন : মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তরাই মূলত ফ্ল্যাটের ক্রেতা। সে হিসেবে দেশে বড় অংশের ক্রেতা রয়েছে। কারণ, দিন শেষে মাথা গোঁজার ঠাই সবারই দরকার। তাই, খুব সহজেই বলা যায়, তরুণদের এখানে কাজের ও ভবিষ্যৎ গড়ার বিপুল সম্ভাবনা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল, স্থাপত্য কিংবা বিবিএ ডিপার্টমেন্টগুলো থেকেই শিক্ষার্থীরা এসব খাতে আসছে। এদের মধ্যে অনেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পাচ্ছে। তবে পেশা হিসেবে এটা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং। ধরুন, একজন পুরকৌশলীকে প্রকল্প বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে কাজ শেষ পর্যন্ত তদারকি করতে হয়। স্থপতি বা ডিজাইনারকে কম জায়গায় সবচেয়ে ভালো সুবিধা দেয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে। সেই সঙ্গে সবকিছু সুক্ষœভাবে পর্যবেক্ষণও করতে হবে। আবার যারা বিপণন বিভাগে কাজ করবেন তাদেরও চ্যালেঞ্জ নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। মূলত ফ্ল্যাটের বিক্রির লাভ থেকেই প্রতিষ্ঠানের সব কর্মীর বেতন-ভাতা দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে ফ্ল্যাট বিক্রিও বিপণন বিভাগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিকূল পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা থাকলে আবাসন খাতের পেশায় যে কোনো তরুণই ভালো করতে পারবে।
প্রশ্ন : আবাসন খাতের এখনকার পরিস্থিতি কেমন দেখছেন?
শাওন : সবার আবাসন নিশ্চিত করতে বাজেটে আমরা ২০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল করার প্রস্তাব করেছি। অর্থমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনা করবেন। যাতে কম আয়ের মানুষজন এখান থেকে সহজশর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিতে পারে। তাহলে আবাসন খাত আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। সেই সঙ্গে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশনের হার অতিরিক্ত হওয়ার কারণে আবাসন খাতে বিনিয়োগ কমে গেছে। বিনিয়োগ বাড়াতে হলে সেকেন্ডারি মার্কেট তৈরি করতে হবে, যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আছে। কেউ এখানে আর বিনিয়োগ করে না। কারণ একটা বড় অংকের টাকা রেজিস্ট্রেশনেই চলে যাচ্ছে। গাড়ির মতো আবাসন খাতেও যদি দ্বিতীয় বার ফ্ল্যাট হাত বদলের ক্ষেত্রে অল্প টাকায় রেজিস্ট্রেশনে নাম পরিবর্তনের সুযোগ থাকে তাহলে এখানে উদ্যোক্তা আসবে বিনিয়োগ বাড়বে।