কোম্পানি সেক্রেটারি হতে চাইলে …

কোম্পানি সেক্রেটারি হতে চাইলে …

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক 

মর্যাদাশীল জীবনের জন্য প্রয়োজন প্রতিষ্ঠিত পেশা। আর পেশায় প্রতিষ্ঠা পেতে হলে চাই পেশাগত শিক্ষা ও যোগ্যতা। শিক্ষা জীবনের জন্য। উন্নত শিক্ষা ব্যক্তি, জাতি ও দেশের জন্য। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সব শিক্ষারই প্রাথমিক লক্ষ্য হল একটি মর্যাদাশীল পেশা বা চাকরি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেও উচ্চশিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো দ্রুত একটি ভালো প্রফেশন, একটি ভাল চাকুরি। তবে গতানুগতিক সাধারণ শিক্ষার তুলনায় এখানে ব্যতিক্রমধর্মী ও সময়োপযোগী বিষয়গুলোর চাহিদা বরাবরই বেশি। এ ক্ষেত্রে পেশাগত ডিগ্রি বা যোগ্যতা যেন সোনায় সোহাগা। কোনো সাধারণ বিষয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও যেখানে চাকরির জন্য প্রতিযোগিতায় হিমশিম খেতে হয়, সেখানে ব্যতিক্রমধর্মী প্রফেশনাল ডিগ্রি থাকলে অনায়াসে সম্মানজনক চাকরি পাওয়া সম্ভব। বেকার হলে তো কথাই নেই, তবে যারা চাকরিজীবী, তারাও এসব বিষয়ে প্রফেশনাল দক্ষতা অর্জনের ব্যাপারে মনোযোগী হতে পারেন। চার্টার্ড সেক্রেটারি বর্তমান প্রেক্ষিতে এমনই একটি চ্যালেঞ্জিং প্রফেশন।


বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কোম্পানি, ব্যাংক, বিমা ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে কোম্পানি সেক্রেটারি এবং কর্পোরেট ম্যানেজার পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব পদের জন্য উপযুক্ত প্রার্থীর অভাব কোম্পানি সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায়। তবে আশার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকারের চার্টার্ড সেক্রেটারিজ আইন, ২০১০ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) এ পেশার উন্নয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।বিশ্বজুড়ে কোম্পানি সুশাসন আজ একটি বহুল আলোচিত বিষয়। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠার সাথে কাজ করছে চার্টার্ড সেক্রেটারি প্রফেশন। এ কারণে আজ সারা বিশ্বে চার্টার্ড সেক্রেটারি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া কোম্পানিকে লাভজনক ও যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন। এজন্য এ পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিকে আইনি পরিপালন  (compliance) হিসাব ও ব্যবসা প্রশাসন সংক্রান্ত বিষয়ে হতে হয় দক্ষ, অভিজ্ঞ ও কৌশলী।

  • ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ এর পরিচিতি

পেশাগত শিক্ষা ও যোগ্যতা প্রদানের ক্ষেত্রে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে চলেছে। আজ তাই চার্টার্ড সেক্রেটারি একটি সুপরিচিত ও গ্রহনীয় পেশাগত যোগ্যতা। বর্তমানে চাকরিরত এবং চাকরিপ্রার্থী উভয়ের জন্য এ প্রফেশনাল কোর্সটি সমান গুরুত্বপূর্ণ। চার্টার্ড সেক্রেটারিশীপ আপনাকে কর্মরত প্রতিষ্ঠানে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে সম্মানজনক চাকরির সুযোগ করে দেবে। তা হতে পারে কোম্পানি সেক্রেটারি/ডেপুটি কোম্পানি সেক্রেটারি/এসিস্ট্যান্ট কোম্পানি সেক্রেটারি/কর্পোরেট ম্যানেজার বা এর সম মর্যাদাসম্পন্ন। একজন দক্ষ চার্টার্ড সেক্রেটারি উচ্চতর প্রারম্ভিক বেতনে চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে সক্ষম।

  • চার্টার্ড সেক্রেটারিশিপ প্রফেশনাল কোর্স সম্পর্কে কিছু তথ্য

ভর্তির যোগ্যতা : এ কোর্সটি করতে চাইলে আপনাকে বাণিজ্য শাখায় ন্যূনতম স্নাতক (বিকম/বিকম-অনার্স/ বিবিএ/এমবিএ) ডিগ্রি এবং কমপক্ষে ছয় পয়েন্টের অধিকারী হতে হবে।

ভর্তির সময় : বছরে ২ (দুই) বার যথাক্রমে ডিসেম্বর ও জুন মাসে ভর্তি হওয়া যায়। বছরে ২টি সেমিস্টার; যা জানুয়ারি থেকে জুন এবং জুলাই থেকে ডিসেম্বর মেয়াদি।

শিক্ষা পদ্ধতি : ২ বছর ছয় মাস মেয়াদি কোর্সটি মোট ৫টি (পাঁচ) সেমিস্টারে বিভক্ত। প্রথম ৩টি (তিন) সেমিস্টারকে বলা হয় একজিকিউটিভ লেভেল এবং শেষ ২ (দুই) সেমিস্টারকে বলা হয় প্রফেশনাল। প্রতিটি সেমিস্টার ৬ (ছয়) মাসের।

কোর্সের বিষয় : মোট ১৮টি বিষয় পড়তে হয়। একজিকিউটিভ লেভেল – ১ অর্থাৎ ১ম সেমিস্টারের বিষয়গুলো হল-  HRM & Industrial Relations, General & Commercial Laws, Corporate Accounting।

একজিকিউটিভ লেভেল-২ অর্থাৎ দ্বিতীয় সেমিস্টারের সাবজেক্ট: Corporate Communication and Report Writing, Direct & Indirect Tax Laws, Economic Laws & WTO।

একজিকিউটিভ  লেভেল- ৩ অর্থাৎ তৃতীয় সেমিস্টারের বিষয়গু: Company Law and Practice, Company Secretarial Practice, Information Technology & Management Accounting, Bankling, NBFI and Insurance Laws & Practice।

প্রফেশনাল ২ সেমিস্টার বা গ্রুপে ৪টি করে মোট ৮টি কোর্স। এ ৮টি বিষয় হচ্ছে – Advanced Company Law and Practice, Corporate Financial Management, Corporate Governance, Corporate Administration & Corporate Tax, Corporate Secretaryship, Strategic and Operations Management, Securities Laws & Capital Marke, Secretarial, Management and Systems Audit।

ইন্টার্নশিপ : আড়াই বছরের চার্টার্ড সেক্রেটারিশিপ কোর্স সম্পন্নকারীদের ৩ (তিন) মাসের জন্য ইন্টার্নশিপ করতে হয়। এ ইন্টার্নশিপের ব্যাপারে ইনস্টিটিউট থেকে সার্বিক সহায়তা দেওয়া হয়।

শিক্ষক হিসাবে রয়েছেন :  বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বহুজাতিক কোম্পানির পরিচালক, সিনিয়র কোম্পানি সেক্রেটারি, সিনিয়র ম্যানেজার, সিনিয়র অ্যাডভোকেট, বিভিন্ন ইনস্টিটিউট বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষকগণ নিয়মিত পাঠদান করে থাকেন।

শিক্ষা ব্যয় : ভর্তির সময় রেজিষ্ট্রেশন, সেশন চার্জ, লাইব্রেরি কার্ড, কোচিং ফি সব মিলিয়ে ২০,৬৫০/= টাকা লাগবে। ভর্তির আবেদন পত্র ও স্টুডেন্টস হ্যান্ড বুকের মূল্য ১০০০.০০ টাকা। একজিকিউটিভ লেভেল পর্যায়ের ১০টি সাবজেক্টের জন্যে মোট ৯১,৪৫৫/- (একানব্বই হাজার চার শত পঞ্চান্ন টাকা) এবং প্রফেশনাল পর্যায়ে ৮টি সাবজেক্টের জন্যে মোট ৮০,২৫০/- (আশি হাজার দুই শত পঞ্চাশ টাকা)। বছরে ২ বার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, জানুয়ারি ও জুলাই মাসে।

কোচিং ক্লাস : ইনস্টিটিউটের নিজস্ব ক্লাস রুমে সান্ধ্যকালীন কোচিং ক্লাস সপ্তাহে ৩/৪ দিন অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ৬.৩০টা থেকে রাত ৯.৩০টা পর্যন্ত ক্লাস চলে। দিবা শাখায় সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার সকাল ৮.০০ থেকে বিকাল ৫.০০ টা পর্যন্ত কোচিং অনুষ্ঠিত হয়।

বিস্তাারিত তথ্যের জন্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারীজ অব বাংলাদেশ, ১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, পদ্মা লাইফ টাওয়ার (অষ্টম তলা), বাংলা মটর, ঢাকা-১০০০।

ফোন- ৮৮০-২-৯৩৩ ৬৯০১, ৯৩৪ ৯৫৭৮/১০২ও ১০৫, মোবাইলঃ- ০১৭০৮ ০৩০৮০৪ favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment