মার্কেটিংয়ে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার

মার্কেটিংয়ে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার

  • ক্যারিয়ার ডেস্ক

বাজারে আসছে নতুন নতুন বাহারি পণ্য। আসছে দেশী ও বিদেশী কোম্পানি। সময়ের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তৈরি হচ্ছে হরেক রকম পণ্য যা বাজারজাত করতে দরকার ক্রেতা আকৃষ্ট করার মতো উদ্যমী, মেধাবী, চৌকস, স্মার্ট, বিপণন কাজে আগ্রহী পরিশ্রমী কর্মীর। মার্কেটিং পেশাটি একইসঙ্গে ডায়নামিক, সম্ভাবনাময়, চ্যালেঞ্জিং ও অ্যাডভেঞ্চারস। যারা কমিটেড ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তারা এ পেশায় ভালো করেন। ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সুপার শপ, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি, শপিং সেন্টার, মিডিয়া হাউস, ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে হাসপাতালসহ অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই মার্কেটিং পেশাজীবীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এছাড়া এ পেশায় দ্রুত পদোন্নতি ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা বিদ্যমান।


মার্কেটিং পেশায় নিজেকে উপস্থাপন করতে হয় একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। ক্রেতা আকৃষ্ট করার চিন্তা মাথায় রাখতে হয় সদা সর্বদা। পাশাপাশি ক্রেতার বিশ্বাস এবং আস্থাভাজন হওয়া এ পেশার অন্যতম মৌলিক চাহিদা। ক্রেতার পরিতৃপ্তির মধ্যেই এ পেশার আনন্দ। আজকাল সব প্রতিষ্ঠানেই চৌকস, মেধাবী, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বিপণন নির্বাহী বা মার্কেটিং কর্মকর্তা দরকার। পণ্যের পাশাপাশি সেবাও বর্তমানে মার্কেটিংয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে বিমানের যাত্রীসেবা, পর্যটন ও বিউটি পার্লারের সেবা সবই মার্কেটিং করতে হয়। তাছাড়া যুগটা অর্থনীতির, একইসঙ্গে বিশ্বায়নের। চলমান সময় সবকিছুই পণ্য, এমনকি মানবিক সেবাও। তৈরি হচ্ছে নতুন ভোগ্যপণ্য, আবির্ভাব হচ্ছে সেবা পণ্যের। সুতরাং ভবিষ্যতের সোনালি সময়টা মার্কেটিং পেশাদারিদেরই হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

মার্কেটিং পেশার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পদ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ, ব্র্যান্ড ম্যানেজার, প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার, অ্যাডভার্টাইজিং ম্যানেজার, মিডিয়া ডিরেক্টর, মিডিয়া বায়ার, মার্কেটিং অ্যানালিস্ট, মার্কেটিং রিসার্চ ম্যানেজার, মার্কেটিং ডেভেলপমেন্ট অফিসার, মার্কেটিং ডিরেক্টর ইত্যাদি। এ পেশায় আসতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা কোম্পানিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়। কেউ হয়তো এমবিএ ডিগ্রিধারী প্রার্থী চায়, কেউ হয়তো বিবিএ ডিগ্রিধারীতেই সন্তুষ্ট। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতা যাই চাওয়া হোক না কেন, অভিজ্ঞদের সবসময়ই অগ্রাধিকার দেয়া হয়। অন্য যে কোনো পেশার চেয়ে এখানে ফ্রেশাররা বেশি নিয়োগ পান। সংশ্লিষ্ট ডিগ্রিধারী হলে ভালো না হলেও মার্কেটিংয়ে কাজের সুযোগ রয়েছে। একজন মার্কেটিং কর্মকর্তাকে কিছু আবশ্যক গুণাবলির অধিকারী হতে হয়। যেমন- সততা, আস্থাবান, নিয়মানুবর্তিতা, সহজ ও নিখুঁত বাচন ও অঙ্গভঙ্গি, পরিপাটি পোশাক-পরিচ্ছদ, উপস্থাপন ভঙ্গিতে স্বকীয়তা, সৃজনশীল, সূক্ষ্ণ বিশ্লেষণী ক্ষমতা, স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি, পরমতসহিষ্ণুতা, অন্যকে বোঝানোর ক্ষমতা, মার্কেট সম্পর্কে ধারণা রাখা, সোস্যাল নেটওয়ার্কিং, নেতৃত্বগুন, উন্নত যোগাযোগ দক্ষতা প্রভৃতি। মার্কেটিং পেশার বেতন কাঠামো পদভেদে ১৫ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

মার্কেটিংয়ের কাজটা যেমন নিুবিত্তদের সঙ্গে, তেমনি মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তদের সঙ্গেও। তাই সবার সঙ্গে সহজেই মেশার মানসিকতা থাকতে হবে। মার্কেটিংয়ে গতানুগতিক ধারার বাইরে সহজ ও সাবলীলভাবে নিজেকে উপস্থাপন করার কৌশল জানা চাই। কারণ এক্ষেত্রে পণ্যের গুণাগুণের চেয়ে আপনার গুণাগুণটাই প্রাধান্য পায়। আপনার উপস্থাপন নিখুঁত হলে অনেক ক্রেতা আপনার ব্যক্তিত্বে আকৃষ্ট হয়েও পণ্য ক্রয় করতে পারে। তাই একজন জনপ্রিয় মার্কেটিং অফিসার হওয়ার আগে নিজেকে একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক।

দেশীয় কোম্পানির পাশাপাশি বিদেশী অনেক কোম্পানিও বাংলাদেশে তাদের পণ্য বাজারজাত করছে। ফলে বাড়ছে এক্ষেত্রে কর্মসংস্থান। মার্কেটিংয়ে চাকরির সুযোগ-সম্ভাবনা ও যোগ্যতা নিয়ে কথা হয় আম্বার গ্রুপের ডিরেক্টর (মার্কেটিং) মোহাম্মদ আকতারুজ্জামানের সঙ্গে। মার্কেটিংয়ে নিয়োগে প্রার্থী বাছাইয়ের বেলায় নিয়োগকর্তারা যেসব বিষয় দেখে থাকেন, সেসব বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি।

সাক্ষাৎকার

প্রথমেই আম্বার গ্রুপ (Amber group) সম্পর্কে জানতে চাই?

আকতারুজ্জামান : আম্বার কটন মিল স্থাপনের মধ্য দিয়ে ১৯৯৬ সালে আম্বার গ্রুপের যাত্রা শুরু। বর্তমানে এই গ্রুপের অধীনে ২০টির মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আম্বার কাস্টমার ওরিয়েন্টেড প্রোডাক্ট নিয়ে বাজারে আসছে। কাস্টমারের আস্থার জায়গা ধরে রেখে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু করার চিন্তা করে আম্বার। আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেল এদেশের একজন স্বনামধন্য তরুণ উদ্যোক্তা। তার দূরদর্শী ও সুযোগ্য নেতৃত্বে ২০ বছর ধরে আম্বার গ্রুপ বলিষ্ঠভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে আম্বার গ্রুপের অধীনে রোটর স্পিনিং মিল, আম্বার ডেনিম, আম্বার আইটি, আম্বার বোর্ডস, আম্বার লাইফস্টাইল, আম্বার রিসোর্ট, আইজিডব্লি­উএ (ইন্টারনেট গেটওয়ে), গণমাধ্যম আম্বার রেডিও, নিউজ বাংলাদেশ অনলাইন ডটকম, আম্বার জিন্স অ্যান্ড ওয়াশিং প্যান্ট, বিডি হাব, আম্বার সুপার নিয়েন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর বহু লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে; যা দেশের অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখছে।

এ প্রতিষ্ঠানের বর্তমান জনবল কত?

আকতারুজ্জামান : আম্বার গ্রুপে কর্মকর্তা লেভেলে প্রায় ১০ হাজার লোক কাজ করছেন। শুধু মার্কেটিং বিভাগেই অন্তত ৫০০ লোক কাজ করছেন। এছাড়া স্পিনিং মিলসহ অন্যান্য গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানে বহু শ্রমিক কাজ করছেন।

বছরে কী পরিমাণ লোকবল নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে?

আকতারুজ্জামান : সেল্স অ্যান্ড মার্কেটিং, মানবসম্পদ, অ্যাকাউন্টস, টেকনিক্যালসহ বিভিন্ন বিভাগে প্রয়োজন সাপেক্ষে বছরে ২০০ থেকে ৩০০ কিংবা আরও বেশি কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। গার্মেন্টে শ্রমিক ও টেকনিক্যাল লেভেলে আরও অন্তত ২০০ থেকে ৩০০ জনবল নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া নতুন ইন্ডাস্ট্রি যাত্রা শুরু করলে একসঙ্গে ২০০ থেকে ৩০০ জনবল নিয়োগ দেয়া হয়।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার ধাপগুলো কী কী?

আকতারুজ্জামান : নির্দিষ্ট পদের বিপরীতে বিডিজবস কিংবা পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়ে থাকে। সিভি দেখে একটা শর্টলিস্ট করা হয়। সেখান থেকে সরাসরি ভাইবা নিয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। ভাইবায় যারা ভালো করেন তাদের নিয়ে একটা প্যানেল করা হয়। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া হয়। বাকিদের অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়। পরে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে তাদের ডাকা হয়।

মার্কেটিংসহ অন্যান্য বিভাগে কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর কোনো বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়?

আকতারুজ্জামান : সবক্ষেত্রেই প্রার্থীর সাবজেকটিভ নলেজ, অ্যানালাইটিক্যাল নলেজ কতটা গভীর তা দেখা হয়ে থাকে। সেল্স অ্যান্ড মার্কেটিংয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর উপস্থিত বুদ্ধি, পছন্দ, স্মার্টনেস, অ্যাপিয়ারেন্স, ধৈর্য, অন্যকে কনভিন্স করার যোগ্যতা, পরিশ্রম করার মনমানসিকতা আছে কিনা তা যাচাই করা হয়। সেল্সে আবেদনকারীকে বলা হয় এ প্রোডাক্টটি বিক্রি করেন।

তিনি যদি যোগ্য হন তবে সাবলীলভাবে আকর্ষণীয় পদ্ধতিতে বিষয়টি উপস্থাপন করতে সক্ষম হবেন। এতেই তার কনফিডেন্ট লেভেল, প্রেজেন্টেশন স্কিল, বডি ল্যাংগুয়েজ ফুঠে উঠবে। আমরা ধরে নেই যিনি মার্কেটিংয়ে আবেদন করছেন তিনি আমার প্রতিষ্ঠান-প্রোডাক্ট সম্পর্কে অবগত। সেই সঙ্গে এই প্রোডাক্টের মার্কেট সম্পর্কে অবগত। তাকে সেভাবেই প্রশ্ন করা হয়। সুতরাং যারা সেল্সে কাজ করতে ইচ্ছুক তার উচিত মার্কেট সম্পর্কে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট, মেশিনারিজ সম্পর্কে ধারণা রাখা। আর অন্যান্য বিভাগে যারা কাজ করতে ইচ্ছুক তাদেরও উচিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ধারণা রাখা।

আম্বার গ্রুপে মার্কেটিং বিভাগে ফ্রেশ গ্রাজুয়েটদের কাজের সুযোগ কেমন?

আকতারুজ্জামান : আমরা বেশিরভাগই ফ্রেশারদের সুযোগ দিয়ে থাকি। নিজেরাই প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজেদের মতো তৈরি করে নেই।

অভিজ্ঞদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়?

আকতারুজ্জামান : তার সম্পর্কে বাজার থেকে তথ্য নেয়া হয়। কাস্টমারের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু তা জানার চেষ্টা করি। তিনি গ্রাহকদের কনভিন্স করতে কতটা সক্ষম তা জানার চেষ্টা করা হয়। তিনি যেসব প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিংয়ে কাজ করেছেন সেখানে তার পারফর্মমেন্স কেমন ছিল সেটা যাচাই করা হয়। তিনি কতটা ভিশনারি সর্বোপরি তাকে দিয়ে কাজ করানো যাবে কিনা সেটা ভালো করে যাচাই করা হয়।

মার্কেটিংয়ে নিয়োগে কী শুধু সংশ্লিষ্ট ডিগ্রিধারীদেরই নেয়া হয়?

আকতারুজ্জামান : মার্কেটিংয়ে গ্রাজুয়েশন হলে ভালো। না হলেও যে তাকে নিয়োগ দেয়া হবে না তেমন নয়। আমরা দেখে থাকি প্রার্থী মার্কেটিংয়ে কাজের যোগ্য কিনা। তাকে দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কাজ ঠিকমতো করানো যাবে কিনা। তিনি স্মার্ট, কঠোর পরিশ্রমী চ্যালেঞ্জ নেয়ার মতো দৃঢ়চেতা কিনা। কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্ট সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন কিনা, মানুষকে কনভিন্স করার ক্ষমতা আছে কিনা।

যারা মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের কীভাবে নিজেদের প্রস্তুত করা উচিত?

আকতারুজ্জামান : মার্কেটিংয়ের মৌলিক বিষয়গুলো তাকে খুঁটিনাটি জানতে হবে। দেশের যে কোনো জায়গায় কাজ করার মতো মানসিকতা তৈরি করতে হবে। বিশ্বায়নের এ যুগে কমিউনিকেশন স্কিল ও সোস্যাল নেটওয়ার্কিং ছাড়া টিকে থাকা যাবে না। তাই যারা মার্কেটিংয়ে কাজ করতে আগ্রহী তাদের উচিত শিক্ষাজীবনেই ইংরেজি ভাষায় ভালো দখল আনা। কম্পিউটার স্কিল, প্রেজেন্টেশন স্কিল, সোস্যাল নেটওয়ার্কিং এসবে দখল বাড়ানো। প্রেজেনটেশনের স্মার্ট কৌশল রপ্ত করা।

মার্কেটিংয়ে কারা ভালো করে বলে আপনি মনে করেন?

আকতারুজ্জামান : মার্কেটিংয়ে তারাই ভালো করেন যারা অনেকটা এক্সটোভার্ট স্বভাবের। যার নিজেকে সেল করার যোগ্যতা আছে। মিশুক স্বভাবের, হাসিখুশি প্রার্থীকেই নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। ব্যক্তিগত জীবনে যিনি বন্ধুদের কাছে জনপ্রিয় ধরে নেয়া হয় তিন ভালো টিম লিডার হতে পারবেন। তার মানুষকে ম্যানেজ করার ক্ষমতা আছে, তিনি সেল্সে ভালো করবেন।

দীর্ঘদিন মার্কেটিংয়ে কাজ করেছেন। এ পেশায় কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়?

আকতারুজ্জামান : তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যেও নিজের প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ করা একটা চ্যালেঞ্জ। সেল্সে আগের বছরের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ ভাগ টার্গেট বেশি থাকে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পণ্য বা সেবা বিক্রি করা চ্যালেঞ্জ। নতুন প্রোডাক্টের মার্কেট সৃষ্টি করা চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও মার্কেটে বিক্রি কমে যায়। ফলে টার্গেট পূরণ হয় না। এটিও একটা চ্যালেঞ্জ।

বিভিন্ন বিভাগে সিভি জমা পড়লে সেখান থেকে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন?

আকতারুজ্জামান : সিভি বাছাইয়ে প্রথম যেটা দেখা হয় সেটা হচ্ছে সিভি লেখার ক্ষেত্রে প্রার্থী সচেতন ছিলেন কিনা। সিভিতে বানান, ফন্ট, ডিজাইন, প্রেজেন্টেশন সবই গুরুত্বপূর্ণ। সিভি প্রার্থীর প্রতিচ্ছবি। তাই সেখানে যে সিরিয়াস সে কর্মক্ষেত্রেও সিরিয়াস হবে বলে ধরে নেয়া হয়। সিভিতে একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড, একট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিজসহ অন্যান্য যোগ্যতা গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরতে হবে। পড়ালেখার ক্ষেত্রে মাস্টার্স, অনার্স, এইচএসসি, এসএসসি এই ক্রমে সিভিতে সাজাতে হবে। অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে সর্বশেষ যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছে সেটি চাকরির সময়কালসহ উল্লেখ করতে হবে। প্রার্থী কোনো সোস্যাল অ্যাক্টিভিটিজ, স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ডে, ইভেন্ট ও ট্যুর ম্যানেজমেন্টসহ একট্রা কারিকুলামে জড়িত থাকলে সেটি অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। সেল্সে নিয়োগের ক্ষেত্রে তার এ যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়।

চাকরি প্রার্থীদের উদ্দেশে বিশেষ কোনো পরামর্শ…

আকতারুজ্জামান : মার্কেটিংয়ে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চাইবেন কোম্পানির প্রয়োজনে তাকে দেশ-বিদেশের যে কোনো জায়গায় কাজ করার মানসিকতা রাখতে হবে। ভাইবা বোর্ডে আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে আপনাকে পজিটিভ উত্তর দিতে হবে। নতুবা আপনার কমিটমেন্ট-ডেডিকেশন নিয়ে বোর্ড সন্দিহান হয়ে উঠবে। আর যে প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য যাবেন তার সম্পর্কে ধারণা নিয়ে যাবেন। ভাইবা দিতে যাবেন স্মার্ট হয়ে। কনফিডেন্স নিয়ে উত্তর দেবেন। এছাড়া মার্কেট সম্পর্কে ও পারিপার্শ্বিক বিষয়ে চোখ-কান খোলা রাখবেন। তবে জিত আপনারই হবে।


মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান : মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান দেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান আম্বার গ্রুপের ডিরেক্টর, মার্কেটিং। তিনি মাস্টার্স করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে। মার্কেটিং ম্যানেজমেন্টে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা করেছেন। কর্মজীবন শুরু ১৯৯৫ সালে পারটেক্স গ্রুপে। অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ড অফিসার পদে। আরসি কোলার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন। পারটেক্স গ্রুপের মার্কেটিংয়ের ডিজিএম পদে কাজ করেছেন। ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি আম্বার গ্রুপের ডিরেক্টর মার্কেটিং পদে কাজ করছেন। favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment