শিক্ষক নিবন্ধনে এত সমস্যা কেন ?
- সাধন সরকার
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সম্প্রতি চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আবেদন প্রক্রিয়াও শেষ হলো এই মাসে । প্রিলিমিনারি (বাছাই পরীক্ষা) আগামী আগস্ট মাসে। তারপর ডিসেম্বর মাসে লিখিত পরীক্ষা। কিন্তু এনটিআরসিএ-র একটি সমস্যার কারণে লাখ লাখ পরীক্ষার্থীর মনে সংশয় ও হতাশা বিরাজ করছে । সেটা হলো, উপজেলা ও জেলাভিত্তিক শূন্যপদের সংখ্যা বিজ্ঞপ্তিতে না থাকা।
সম্প্রতি ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু লিখিত পরীক্ষা ভালো দিয়েও অনেকে এতে উত্তীর্ণ হতে পারেননি। কারণ উপজেলায় পদ ফাঁকা নেই। চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় একই সমস্যা হতে চলেছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে ‘উপজেলাভিত্তিক’ মেধাতালিকা করা হবে। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিতে কোন উপজেলায় কোন বিষয়ের কী পরিমাণ শূন্য বা ফাঁকা পদ আছে তা উল্লেখ করা নেই। ফলে পরীক্ষার্থীরা মনে সংশয় ও হতাশা নিয়ে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে আবেদন করছেন। কেননা পরীক্ষার্থী জানে না আদৌ তার উপজেলায় শূন্য পদ আছে কি না! ফলে সময় ও অর্থ অপচয় করে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রিলিতে পাসের পর লিখিত পরীক্ষা ভালো দিয়েও উপজেলায় শূন্য পদ না থাকার কারণে অকৃতকার্য বা ফেল করছে। বেকার পরীক্ষার্থীর সঙ্গে এভাবে সময় ও অর্থ নিয়ে খেলা করার কোনো মানে হয়! শূন্য পদ না থাকলে তা জানিয়ে দিলে পরীক্ষার্থী হয়তো অযথা আবেদন করত না। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ২০১৬ সালে ১- ১২ নিবন্ধনকারীর অনেকেই একাধিক কলেজে হাজার হাজার টাকা অপচয় করে দেশের বিভিন্ন এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। কেননা তাদের তখন বলা হয়নি যে উপজেলাভিত্তিক নিয়োগ হবে! পরে যখন জানা গেল উপজেলাভিত্তিক নিয়োগ হবে তখন অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। বেশিরভাগেরই চাকরি হয়নি। বর্তমানে চাকরির দাবিতে ১-১২ নিবন্ধনকারীরা হাইকোর্টে রিট করেছেন এবং আন্দোলনও চালিয়ে যাচ্ছেন। এনটিআরসিএ একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। এখন বলা হচ্ছে, ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণদের আগের নিয়মে স্কুল ও কলেজে শূন্য পদে আবেদন করতে। কিন্তু মূলত সব প্রক্রিয়া শুরু করার কথা এনটিআরসিএ-র। তাই যত দ্রুত সম্ভব ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের নিয়োগদানের ব্যবস্থা করা হোক। আর চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার জেলা ও উপজেলাভিত্তিক শূন্য পদের তালিকা জানানো হলে পরীক্ষার্থীরা সংশয়হীনভাবে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
সাধন সরকার: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়