যেভাবে বেড়ে উঠছে কর্মজীবী বাবা-মায়ের সন্তান

যেভাবে বেড়ে উঠছে কর্মজীবী বাবা-মায়ের সন্তান

  • ঋতুপর্ণা চাকী

শিশু সন্তান প্রতিটি বাবা মায়ের কাছেই ভীষণ প্রিয়। পৃথিবীর সমস্ত সুখ যেন তাঁকে দেওয়া যায় তার জন্য প্রতিটি বাবা-মাই চেষ্টা করেন।

কিন্তু বাবা মায়ের এই চেষ্টার কারণেই পরছে শিশু মনের উপর বিরূপ প্রভাব। সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে বাবা-মা দুজনই ছুইছেন কর্মক্ষেত্রে। এখানেই ঘটছে বিপত্তি।

চাকরীজীবি বাবা-মা দুজনেই কর্মক্ষেত্রে ব্যাস্ত থাকার কারণে তাদের সন্তানেরা বাবা মার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। দিনের বেশির ভাগ সময় তাঁরা পার করছে একা বা বাড়িতে থাকা কাজের লোকের সাথে। আর এর প্রভাব পরছে তাঁদের খাওয়া- দাওয়া, পড়াশোনার উপর। বাবা মা দূরে থাকার করণে অনেক সময় তাঁদের মানসিক চাপও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

একা সময় পার করার কারণে এই শিশু গুলো স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। মোবাইল, গেমস, টেলিভিশন, এগুলো প্রতি তাঁদের ঝোঁক বাড়ছে দিনদিন। দিনের বেশিরভাগ সময় তারা এগুলোতেই কাটাছে। প্রযুক্তিনির্ভর এই সব আধুনিক জিনিস শিশুদের কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে তাঁদের শৈশব। তারা নির্ভর হয়ে পড়ছে এক র্ভাচুয়াল জগতের উপর। যার কারণে শিশুরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে তাঁদের আসেপাশে থাকা বন্ধুদের কাছ থেকে।

বাবা মা সারাদিন দূরে থাকার কারণে এই শিশুগুলো মধ্যে সবসময়ই এক ধরনের হতাশা কাজ করে। এজন্য অনেক সময়ই তারা চেষ্টা করে অন্যদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে এবং একাকী নিজের মতো করেই সময় পার করতে তারা বেশি পছন্দ করে।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিলে জানা যায়, বাবা মার কাছ থেকে তাঁদের সন্তান দিনের বেশিরভাগ সময় দূরে থাকার করণে তাঁদের সুস্থ মানসিক বিকাশ ঘটতে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে। বাসায় যে কাজের লোকের কাছে তাঁরা বেশি সময় পার করছে তাঁদের একটা প্রভাব এই শিশুগুলোর মধ্যে পড়ছে। এই শিশুগুলো তাদের ভাষায় কথা বলতে শিখছে।

এই শিশুগুলো ছোটবেলা থেকে এভাবে শুধুমাত্র কাজের লোকের উপর নির্ভর করে বাসায় রেখে যাওয়ার কারণে এরা বাক-প্রতিবন্ধকতার মতো রোগে পর্যন্ত আক্রান্ত হচ্ছে এবং অনিয়মিত খাওয়া দাওয়ার জন্যও তাদের শারীরিক অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এসব কারণে অনেক সময় দেখা যায় এই সব শিশুগুলোর মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে।

এই বিষয়ে একজন চাকরীজীবী বাবা মায়ের সাথে কথা বললে তাঁরা বলেন বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য তাঁদের সন্তানকে ভালো স্কুল, কলেজে পড়িয়ে মানুষ করার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন যা একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে একার আয়ে সংসার চালিয়ে সন্তানকে ভালো কোনো স্কুল কলেজে পড়ানো সম্ভব না। এই কারণে বাবা- মা দুজনকেই ছুটতে হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে।

Sharing is caring!

Leave a Comment