মানবিক হওয়ার ক্ষেত্রে ‘শিক্ষা ও সহশিক্ষা’র সমন্বয় জরুরি
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, অধ্যক্ষ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, গত ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ক্যাম্পাস টিভি কর্তৃক আয়োজিত শিক্ষা বিষয়ক সাক্ষাৎকারভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠান ‘আধুনিক শিক্ষায় সক্রিয় প্রিন্সিপাল’ এ অংশগ্রহণ করেন। ক্যাম্পাস টিভির পক্ষে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট’স অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু। সাক্ষাৎকারটি অনুলিখন ও সম্পাদনা করেছেন সুজন নাজির।
সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু: আসসালামু আলাইকুম। সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি আজকের অনুষ্ঠানের ষষ্ঠ পর্ব “আধুনিক শিক্ষায় সক্রিয় প্রিন্সিপাল” এই নামে আমরা যে অনুষ্ঠান করছি যা সারাদেশের প্রিন্সিপাল মহোদয় তাদের মেধা, প্রজ্ঞা বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষায় তাদের শিক্ষার্থীদের সামনে নিয়ে যাবে। যাতে করে শিক্ষিত সমাজ সত্যিকার অর্থে আলোর মুখ দেখে,কর্মের মুখ দেখে সেই প্রত্যাশা নিয়ে। আজকে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন, আমাদের সময় দিয়েছেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার স্যার। যিনি কবি নজরুল সরকারি কলেজ এর সম্মানিত অধ্যাপক ও অধ্যক্ষ।
সৈয়দ রাজু: আপনার ব্যস্ততা আমরা জানি। আপনি এ সময় অত্যন্ত কর্ম ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তারপরও আপনি সময় দিয়েছেন এজন্য ক্যাম্পাস টিভির পক্ষ হতে এবং ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির পক্ষ হতে আপনাকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা জানি যে, আপনি এ সময় আপনার কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য নানামুখী কাজকর্ম করছেন। আধুনিক শিক্ষায় একজন প্রিন্সিপাল মহোদয় হিসাবে আপনি শুধু এই কলেজ না আরো অনেক জায়গায় আপনার শিক্ষা জীবনে অনেক ধরনের কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। স্কাউট, আপনার নানামুখী কাজ রয়েছে। আমরা যতটুকু জানতে পেয়েছি। সে সমস্ত জায়গা থেকে এই মুহুর্তে একজন আধুনিক শিক্ষিত মানুষের কি ধরনের চেহারা হওয়া উচিত। যখন একজন মানুষ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বলে নিজেকে দাবী করে!
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: আসলে আধুনিক শিক্ষা বিষয়টি নির্ভর করে সরকারের উপর। আমরা যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করি, আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করি বা করার চেষ্টা করি। আর এখন করোনাকালে শিক্ষার কি ধরন হবে, আসলে তা সুনির্দিষ্ট না। তবুও আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের শিক্ষাবিভাগ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যাতে বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আর পাশাপাশি তারা মানসিকভাবে ব্যস্ত থাকে। সেজন্য অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে সরকারি সিদ্ধান্তে আগে সীমিত পর্যায়ে কিছু কিছু কলেজ যাদের সক্ষমতা আছে, তারা কাজ করে আসছে। পরবর্তী পর্যায়ে সরকারি সিদ্ধান্তের পর আমরা চেষ্টা করছি। পুরোদমে অনলাইন কার্যক্রম কিভাবে চালিয়ে নেয়া যায়। এখানে সরকারের দুইটা উদ্দেশ্য আছে। আমরা একটা বাস্তবায়ন করছি এবং আরেকটা হচ্ছে শিক্ষার মান যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। পাশাপাশি সারা বিশ্বে মানসিক সুস্থতা একটা বড় বিষয়। আমাদের শিক্ষার্থী তাদের বয়স কম তারা মানসিক চাপে আছে বেশি। সেজন্য তাদের জন্য এই কার্যক্রম। আমার কলেজে আমি যেটা করছি, আমরা অনলাইন কার্যক্রম আগে থেকেই পরিচালনা করে আসছি ডিজিটাল পদ্ধতিতে হাজিরা, অনলাইন ইন্টার্নাল ফলাফলগুলো এবং ভর্তি কার্যক্রম গুলো অনলাইন এ করে থাকি। কোন শিক্ষার্থী ভর্তি হবে, সে আমার কলেজে না এসে বাড়িতে বসে অনলাইনে আমাদের ডাটাবেজ, লিংকে ঢুকে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে। টাকা জমা দিতে পারবে। আমাদের শিক্ষামন্ত্রী বলে থাকেন আমাদের অনলাইনে দ্রæত যাওয়া দরকার ছিল। করোনা সেটাকে বরং এগিয়ে দিয়েছে। যার ফলে ঢাকা কলেজ যেখানে তাদের সক্ষমতার বেশি প্রথমেই তারা ইন্টারমিডিয়েট এর ক্লাস শুরু করে। আমার কলেজে আমি প্রথমে অনার্স-মাস্টার্স পরে ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসগুলো শুরু করি। তারপর আমার শিক্ষকদের এর সক্ষমতা অর্জনের পর ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসগুলো অনলাইনে নেওয়া শুরু করি এবং আমাদের এখন প্রচুর ক্লাস হচ্ছে। অনলাইনে ক্লাস গুলো খুব কার্যকর হচ্ছে। বিশেষ করে সময় নষ্ট হচ্ছে না। ৫০ মিনিট করে ক্লাস নিচ্ছি। একজন শিক্ষক মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে যাচ্ছে। ক্লাস এর জন্য সচরাচর আমরা প্রস্তুতি না নিয়ে ক্লাসে যায় কিন্তু অনলাইনে একজন শিক্ষকের এই সুযোগটা নেই।
সৈয়দ রাজু: স্যার, এ মুহূর্তে আপনার বলা দুটি কথাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই। আপনি বললেন যে, শিক্ষকরা যখন সক্ষমতা অর্জন করল তখন আপনি আরো বাড়িয়ে দিলেন অনলাইন কার্যক্রমটা এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আরেকটি হচ্ছে এমনি ক্লাসে প্রস্তুতি ছাড়া গেলেও যেতে পারে কিন্তু অনলাইনে প্রস্তুতি ছাড়া ক্লাসে যাওয়া যায় না। এ বিষয়টা যদি একটু হাইলাইট করেন। আমরা যখন রাজশাহী কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলতেছিলাম আমাদের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে তখন তিনি বলেছিলেন টেকনোলজির জন্য অনেকে অনলাইনে ক্লাসে যেতে পারছে না সেটা অনেক বড় সমস্যা। কিন্তু টেকনোলজি চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে যেতে হয়। উনার প্রশ্ন ছিল এরকম আমরা টেকনোলজিকে ভয় পাচ্ছি, দোষ দিচ্ছি। সেটা কি ঠিক? নাকি আসলে আমরা ভালো ক্লাস আগে থেকেই নিতাম না, সেটা একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়লো অনলাইন ক্লাস আসার পরে এই জায়গাটা যদি আপনি একটু হাইলাইট করেন।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: আমাদের প্রযুক্তিভীতি আছে, এটা কোন সমস্যা না তা বলা যাবে না। আমরা প্রথমে আমাদের শিক্ষকদের হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে সংযুক্ত করেছি এবং জুম মিটিং করেছি। আমি স্কাউট কার্যক্রমের সাথে জড়িত। বাংলাদেশের ন্যাশনাল স্কাউট এ আমি কাজ করি। আমাদের প্রথম থেকেই অনলাইন স্কাউট কার্যক্রম শুরু হয়। যার ফলে আমি এই সুবিধা অর্জন করেছি এবং অভ্যস্থ হয়েছি। যার কারণে আমি আমার শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে সংযুক্ত করেছি। তারা অভ্যস্থ হয়ে গেছে এমন বলা যাবে না। অনেকটা হতে বাধ্য হয়েছে। তারা এনজয় করেছে। তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে, স্যার আপনার জন্য আমরা অনলাইনে কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হলাম। আমরা ক্লাস নিতে পারি না সেটা না। আমাদের শিক্ষকদের সক্ষমতা থাকা সত্বেও তার প্রয়োগটা হচ্ছে না। কিন্তু এই করোনাকালে তারা প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে যায়। এখন ক্লাসের শিক্ষকদের গাইড বই নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকছে না। এর কারণে রিমোট এলাকার শিক্ষকরা নিজেদের ভালো পারফর্মেন্স করার সুযোগ পাচ্ছে। অনলাইনে ক্লাস এর মাধ্যমে অনেক ছোট ছোট কলেজের ক্যাডার কর্মকর্তা আছে তারা অনেক ভালো ক্লাস নিচ্ছে। এটা বড় কলেজের শিক্ষকদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আমি মনে করি। আমাদের ছাত্ররা বিশেষভাবে যারা প্রান্তিক লেভেলের ছেলেমেয়ে সরকারি কলেজে পড়ে। কম বেতনে, বিনা বেতনে অথবা বেসরকারি কলেজের রিমোট এরিয়াতে আছে। তারা কিন্তু প্রযুক্তির সাথে এভাবে অভ্যস্থ না। কিন্তু এই করোনাকালে তারা অভ্যস্থ হয়ে যাচ্ছে। তারা এখন বুঝে ফেসবুক কি! মেসেঞ্জার কি এবং তারা যে ফেসবুককেন্দ্রিক যে প্রবণতা তা থেকে বের হয়ে আসছে।
সৈয়দ রাজু: আপনার কি মনে হয়েছে করোনা পরবর্তী বা করোনাকালীন সময়ে শিক্ষাব্যবস্থা টেকনোলজির মধ্যে ঢুকে গিয়েছে? তাতে করে মিস ইউজ, অ্যাবিউস কমে গিয়ে এটা ইউজ এর জায়গাটাকে তরুণ সমাজের সামনে আরো বেশি এনেছে কিনা?
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: খুব অল্প দিন আগে ঢাকা ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষকের সাথে আলাপে তিনি বলেছিলেন যে, করোনার জন্য আমরা ছয় মাস লকডাউনে থাকবো তা আশা করিনি এবং আমাদের ছাত্ররাও চিন্তা করেনি। তারা কিন্তু বই-পুস্তক রেখে বাড়ি চলে গিয়েছে। এখন ইউনিভার্সিটি ও কলেজের শিক্ষকরা যখন ক্লাস নিচ্ছে তখন আমরা অভিযোগ পাচ্ছি। তখন অনলাইনের উপর নির্ভর হওয়া শুরু করেছে। তারা খোঁজ নিচ্ছে কিভাবে অনলাইনে বই পাওয় যায় এবং বন্ধুবান্ধব এর মাধ্যমে শেয়ার করে তারা অনলাইনে বই পড়ছে। আমি মনে করি সোশ্যাল মিডিয়ায় যে খারাপ দিক তার চেয়ে এখন পজেটিভ দিকে এগিয়ে আসছে। তারা অনলাইন লাইব্রেরীতে ইন করার চেষ্টা করছে। এমন কলেজ আছে যেখানে ভাল শিক্ষক বা শিক্ষক নাই ক্লাস নেয়ার মতো, সেসব কলেজের শিক্ষার্থীরা ইউটিউব এর মাধ্যমে ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল কলেজ এর ক্লাসে যোগদান করতে পারছে। এসব অপশন সুবিধাগুলো শিক্ষার জন্যে পজেটিভ ফল বয়ে নিয়ে আসতে পারে বলে আমি মনে করি।
সৈয়দ রাজু: স্যার! কলেজ লেভেল এর সব শিক্ষার্থীকে একই অনলাইন সেন্ট্রাল প্লাটফর্মে নিয়ে এসেছে, যাতে করে তারা তাদের প্রিয় শিক্ষক এবং যার কাছে তারা ভালো বুঝতে পারে এমন নেটওয়ার্কে আনার সুযোগ সুবিধা আছে কিনা?
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: একাধিক শিক্ষকদের নিয়ে ক্লাস করার অপশন গুলো এটা একটু কঠিন হবে। কিন্তু ইন্ডিভিজুয়ালি যেসব কলেজ নামকরা কলেজ, তাদের ভালোভাবে অরগানাইজ হতে হবে। প্রিন্সিপাল গুলো যদি এসব জায়গায় উৎসাহী হয় তাহলে আমরা দেখব যে সেসব কলেজগুলো এগিয়ে যাচ্ছে। আমি ঢাকা কলেজ দীর্ঘদিন কাজ করেছি। আইসিটির দায়িত্বে ছিলাম। আমার কলেজে আমি প্রথমে করোনাকালে আমাদের ডিপার্টমেন্ট গুলোতে দশ হাজার টাকা আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি সেন্ট্রাল ফান্ড থেকে। আমি বলেছি করোনাকালে আপনাদের তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তার জন্য যে সব উপকরণ লাগবে সেসব আপনারা কিনেন ফান্ড থেকে। যদি সেন্ট্রালই এক করতে কোন সিলেবাস ধরে চল্লিশটা ক্লাস দিলেন, সেখানে একজন শিক্ষককে চ্যাপ্টার অনুযায়ী সুযোগগুলো দিলেন। কিন্তু একজন ছাত্রের অনেকগুলো কলেজের অনেক শিক্ষক তার পছন্দের হতে পারে ফলে সে সব শিক্ষকের ক্লাস করতে পারবেনা। আবার এখানে মেধার বিষয় আছে। জিপিএ ২ বা ২.৫ পাওয়া ছাত্রের সাথে জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রের মেধা সমান না। ফলে সব শিক্ষকের ক্লাস কিন্তু তার জন্য কঠিন হবে। এটাই বাস্তবতা। সে চিন্তা করবে তার লেভেলে ঐ শিক্ষকের এর ক্লাস করতে। আবার একজন টিচার ভাল হলেও কিন্তু তাঁর বুঝানোর ক্যাপাসিটি একেকজন একেকভাবে রিসিভ করবে। তবুও সবচেয়ে ভাল হয় যে, বড় কলেজগুলো যেমন ভিকারুন্নেসা, সিটি কলেজ, ঢাকার বাইরে সিলেটের মদনমোহন কলেজ, এই কলেজ গুলো যদি একটু দায়িত্ব নিয়ে তারা প্রচার করে আমাদের এই ক্লাসগুলো এই শিডিউলে হচ্ছে। তাহলে কিন্তু ছেলে মেয়েরা ফেসবুক, বন্ধু বান্ধবের মাধ্যমে তারা কিন্তু জেনে যাবে। ফলে সে তার মেধা অনুযায়ী সেই কলেজের ক্লাস গুলো করার চেষ্টা করবে।
সৈয়দ রাজু: ক্যাম্পাস টিভিতে আমাদের এই অনুষ্ঠানটি করার একটা উদ্দেশ্য আছে। আপনাদের মত বড় মাপের মানুষ যারা আছেন, যারা বিষয়টি নিয়ে ভাবেন, আমরা তাদের যদি অনুমতি পাই তাহলে আমরা কিন্তু কিছু ক্লাস অ্যারেঞ্জ করতে চাই। যাতে করে শিক্ষার্থী উপকৃত হয়। আমাদের এই অনুষ্ঠানটি হাজার মানুষ দেখছে। ইউটিউবে থেকে যাবে। মূল কাজটা হচ্ছে শিক্ষাটাকে ছড়িয়ে দেওয়া। এক্ষেত্রে শিক্ষক হচ্ছে সেই মাপের উদার মনের মানুষ যারা কখনোই মনে করেন নাই শিক্ষা কাউকে দিলে ফুরিয়ে যাবে। অর্থাৎ শিক্ষা মানুষ যত বেশি পাবে ততোই তারা তৃপ্ত হবে। অন্য যেকোন প্রফেশন থেকে শিক্ষকদের একটা বিরাট পার্থক্য আছে। সে দিক থেকে আমাদের একটা চেষ্টা আছে। স্যার এখানে কিন্তু আপনাদের সহযোগিতা লাগবে আমাদের। আমরা অন্তত চাইবো যে এই প্লাটফর্ম টা যেন আমাদের তরুণ প্রজন্ম পায় স্ব-স্ব শিক্ষার নিজস্ব শিক্ষক। পৃথিবীতে হয়তো আমি আমার বাবা মার ভালোবাসা চাই, কাছের মানুষের ভালোবাসা চাই। অন্য কারো ভালোবাসা আমাকে অনেক বেশি আনন্দিত করে। তারপরও আমার নিজেরটা লাগে। নিজেরটার সাথে অন্যের যদি একটু যুক্ত করা যায় তাহলে হয়তো তারা আরো সুন্দর ভাবে বেড়ে ওঠার প্রণোদনা পাবে। সেটাই ছিল আমাদের প্রস্তাবনা। সে কারণে আপনাকে এই কথা বললাম।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: আমাদের কলেজের ইন্টারমিডিয়েট এর ক্লাস গুলো আমার কলেজের পেজে ওপেন। অনার্স মাস্টার্স এর নন-মেজর ক্লাসগুলো আমাদের সেন্ট্রাল পেজে ওপেন করে দিচ্ছি। আমরা আমাদের অনার্স মাস্টার্স এর কিছু কিছু ক্লাস আছে ডিপার্টমেন্টরা জুম এর মাধ্যমে কিংবা পাবলিক গ্রুপের মাধ্যমে নিচ্ছে। সেগুলো হয়তা আমরা চাইলে ওপেন করে দিতে পারব। এটা সকল কলেজ করছে আমার মনে হয়। খুব বেশি জটিল না এবং এটা ওপেন হলে ভালো হয়। এগুলো করলে আমাদের ছাত্ররা লাভবান হবে। আমাদের অনেক প্রান্তিক লেভেলে ছেলেমেয়ে আছে সে ঢাকা কলেজে ভর্তি হলো কিন্তু সে তিনমাস হোস্টেলে উঠতে পারেনি। সে কিন্তু প্রথম থেকে ক্লাসগুলো করতে পারবে যদি অনলাইনে ক্লাস গুলো চলে। আমি অনেকের সাথে শেয়ার করেছি, মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে বিভিন্ন ভাবে যেহেতু শিক্ষক সংগঠনের সাথে জড়িত। আমি মনে করি যে আপনারাও প্রচার করতে পারেন। করোনা পরবর্তীতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলে যেন। ইউনিভার্সিটিতে অনার্সে ১২ সেমিস্টার আছে তারা যদি মনে করে ১ সেমিস্টার করে আমরা অনলাইনে নেব ১১ সেমিস্টার আমরা ফিজিক্যালি নিব, তাহলে যেটা সুবিধা হবে যে ছাত্র প্রযুক্তিনির্ভর হবে। শুধু করোনার জন্য প্রযুক্তিনির্ভর হবে তা না। অনলাইনে ক্লাস নিলে ছাত্ররা এবং শিক্ষকরাও এতে অভ্যস্থ হবে। ক্লাস নেয়ার জন্য সমস্ত সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়, আমরা নিজেরাও কিছু সফটওয়্যার উন্নয়ন করতে পারি। আমাদের আইসিটি সেক্টরে সরকার চাচ্ছে এটাকে এক্সপ্লোর করার জন্য। এখানে দেখা যাবে প্রচুর বিনিয়োগ হবে এ ধরনের কার্যক্রমে। আমাদের প্রযুক্তিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন এটা অর্জন করতে পারব। বিশেষ করে আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। আমাদের সরকার বলছে আমরা এটাতে অংশগ্রহন করব। এটা মিস করলে আমরা অনেক দূর পিছিয়ে যাবো। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তাদেও ছেলে-মেয়েদের অভ্যস্থ করছে অনলাইনে। হয়তো তাদের আর্থিক সামর্থ্য বেশি। আমাদের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রান্তিক লেভেলের ছেলেমেয়েদের জন্য সরকারের প্রতি আমাদের ছেলেমেয়েরা আসে। তারা চাকরি করে, টিউশনি কওে সে সুযোগটা তারা পায় না। তাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা করোনা শেষে আরও বৃদ্ধি পাবে। আমার মনে হয় সরকার তাদের আর্থিক প্রণোদনা জন্য চিন্তা করবে। আর একটা জিনিস আপনি জানেন যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফিজিক্যালি উপস্থিতি শতভাগ। কিন্তু কোথাও নেই। কিছু সীমিত প্রতিষ্ঠান ৯৯% আছে। অনলাইনে ক্লাস করলে এদের আয়ত্তে¡ নিয়ে আসতে হবে পাশাপাশি অনার্স-মাস্টার্স টিউটোরিয়াল ক্লাস নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা আছে। অনার্সে ৩,০০০ হাজার ছাত্র আছে, ২০ টা ক্লাস রুম দরকার। আপনি যদি আংশিক ক্লাসগুলো অনলাইনে দেন তাহলে ক্লাসরুম সংকট সেটাও কিন্তু একটা প্রতিষ্ঠান কাটিয়ে উঠতে পারবে। এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হবে। সরকারি কলেজগুলোতে প্রায় ২০,০০০ হাজার শিক্ষার্থী। আমাদের শিক্ষকদের সীমাবদ্ধতা আছে বা সরকারের সীমাবদ্ধতা আছে আমরা তা মেনে নিয়েছি। কিন্তু অনলাইন কার্যক্রম আমাদের শিক্ষার্থীর জন্য বিশাল একটা সুযোগ বয়ে আনতে পারে। সরকারও মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করবে এবং ক্লোজ মনিটরিংও সম্ভব হবে।
সৈয়দ রাজু: ধন্যবাদ স্যার, এখানে একটা স্বচ্ছতার ব্যাপার কিন্তু আসছে। কেউ কেউ বলে থাকেন অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অস্বচ্ছতা ব্যাপার থাকতে পারে। সেই জায়গাতে কিভাবে সমাধান করা যায় বলে আপনি মনে করেন?
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: আমাদের এ ব্যাপারে অভিজ্ঞতা একেবারে সীমিত। তারপরও আমি আমাদের সরকারি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা প্রথম অনলাইনে নিয়েছি জুলাই ২৬ তারিখে দুই ঘণ্টার সৃজনশীল পদ্ধতিতে। আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রথমে বলেছে, আমরা দুই ঘন্টা পরীক্ষা দিতে পারব না। পরীক্ষা দিয়েছে ৭৫ থেকে ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী। আমরা পরীক্ষা নেয়ার জন্য দুই ঘন্টা সময় দিয়েছি, প্রশ্নপত্র আমাদের কলেজে ওপেন থাকবে এটা নিয়ম ছিল। ২ ঘন্টা পরীক্ষা দিয়ে এবং তারা ইমেইল করে আমাদের কাছে পাঠাবে। তখন ছেলেরা বলল আমরা ইমেইল করতে পারিনা, নিয়ম জানি না। আমরা বললাম তোমাদের ইন্টারমিডিয়েটে আইসিটি আছে। আইসিটি শিক্ষককে বললাম, ইমেইল খোলার ব্যাপারে ক্লাস নিতে। তিনি অনলাইনে ক্লাস নিলেন। তারপর আমরা তাদের একটি ইমেইল এ্যাড্রেস দিলাম। তারপর বললাম এই ঠিকানায় পাঠাতে নাম সহ। তারপর তারা ইমেইল করল। এভাবে তারা অভ্যস্ত হলো। সেটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা প্রথমে প্রক্রিয়াটি শুরু করি। পরবর্তী পর্যায়ে অনেকেই শুরু করেছে। ছেলেমেয়েরা তো অভ্যস্ত হচ্ছে। এখানে আমি অস্বচ্ছতার কিছু দেখি না।
সৈয়দ রাজু: স্যার, এখানে আর একটা সম্পূরক প্রশ্ন এসে যায় কৌতূহল হিসেবে সেটা হলো যে আপনি গতিটা চালু রাখার পক্ষে। এটা যদি কোথাও আটকে যায় তাহলে এদের শিক্ষা, অর্থনীতি মানসিক নানা চাপের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে কিন্তু এরকম ব্যাপার আছে। আপনার এখানেও এইচএসসি ছাত্ররা আছে। তারাও ক্লাস করছে, সবকিছু করছে। তাদের এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েও তো আপনারা ভাবছেন। সরকারের সাথে এমন একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং এ যাওয়া যেন তারাও এই গতির সাথে থাকে। এই গতি থেকে পিছলে না যায়। সে ব্যাপারে যদি একটু আলোকপাত করেন।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে তাতেই করোনাকাল শুরু হয়। আমার মনে হয় তারাই সবচেয়ে বেশি মানসিক দিকে চাপে আছে আমরা শিকার করতেছি। আমাদের সরকারের সীমাবদ্ধতা আছে। বিশেষ করে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী। সীমিত পর্যায়ে হলে ঠিক ছিল সেটা ম্যানেজ করা যেত কিন্তু, বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী। এটা পাবলিক এক্সাম। সেজন্য সরকারের চিন্তাভাবনা আছে। এক্সাম নেওয়া হতে পারে বিশেষ করে একটু যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ক্লিয়ারেন্স পাওয়া যায় তাহলে কেন্দ্র বৃদ্ধি করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শুরু করবে এই চিন্তা ভাবনা ও প্রস্তুতি সরকার নিচ্ছে। এবিষয়ে আমরা বিভিন্ন আলোচনায় পাচ্ছি। যখন সুযোগ হবে সরকার পরীক্ষা শুরু করবে। আমরাও মনে করি করোনা শেষ হবার সাথে সাথে সিনিয়র পর্যায় থেকে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার। প্রাইমারি লেভেলের ছেলেমেয়েরা এখনও সচেতন না। বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারমিডিয়েটের ছেলে-মেয়েরা বেশি সচেতন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাদের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা যায় এবং উচিতও। অনেকে ক্ষতির কথা বলছে। খুব বেশি ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি না। প্রাইমারিতে বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি, অসুবিধা নাই। প্রতিষ্ঠানগুলো ডিসেম্বরে এক্সাম নিয়ে জানুয়ারিতে রেজাল্ট দিতে পারবে। ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পরবর্তী কার্যক্রম বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটু উদার যেন হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা আলাদা পরীক্ষা মিনিমাইজ করে খুব দ্রত গতিতে পরিক্ষা নেওয়া উচিত। হয়তো তাদের তিন চার মাস ক্ষতি হবে। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার জন্যে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী গুরুত্ব দিচ্ছে।
সৈয়দ রাজু: আমরা অনেক সময় দেখি যে, সঠিক জ্ঞানের অভাব থাকলে গুজব অনেক সময় জায়গা করে নেয়। আমাদের বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তথ্য প্রবাহ, তথ্যের কমতি নেই। কিন্তু আমি কোন তথ্য গ্রহণ করব, কোনটা গ্রহন করব না সেটা জরুরি বিষয়। সত্যি কথা বলতে কি বাংলাদেশের শিক্ষকদের নিয়ে এই অনুষ্ঠান করতে গিয়ে আমরা অনেক ধরনের ফিডব্যাক পেয়েছি। অনেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর তারা এখান থেকে পেয়েছে। এখানেও একজন প্রশ্ন করেছেন স্যার, আমাদের ২০১২-১০১৩ শিক্ষাবর্ষের ডিগ্রী পরীক্ষার কোন নিউজ আছে কিনা?
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত কলেজ অভিভুক্ত হওয়ার পর যে সমস্যাগুলো ছিল সেটা কিন্তু আমরা অনেকটা ওভারকাম করে এসেছিলাম। কিন্তু করোনা আমাদের আরও পিছিয়ে দিয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারন নেই। খুব শীঘ্রই তাদের পরীক্ষা হয়ে যাবে।
সৈয়দ রাজু: আপনারা আপনাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বলেছেন, এ সময় তাদের শারীরিক মানসিক সুস্থতা খুব জরুরি। যদি বলি পরীক্ষা কি? করোনাকালে বেঁচে থাকাটাই বড় শিক্ষা। আপনার কি মনে হয়েছে যে, করোনাকালীন ও করোনা পরবর্তীতে স্পেশাল কারিকুলাম, স্পেশাল ক্লাস, স্পেশাল সাপোর্ট হতে পারে কিনা। স্যার, একটু বলবেন।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: আমি আগেই বলেছিযে, আমাদের ২০ ভাগ ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার্থী ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আসতে পারে না। অনেকে আর্থিক সীমাবদ্ধতা কারণে আসতে পারে না। তাদের জন্য বলা আছে আমাদের কলেজ স্পেশাল ক্লাস নিব, পরীক্ষা নিব। তাদেরকে আটকে রাখার সুযোগ আমার নাই। ফেসবুকে বারবার পোস্ট দিচ্ছি। আমাদের পেজে ওয়েবসাইটে। বারবার তাদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে ভয়ের কোন কারণ নেই। যারা ক্লাস এখন মিস করতেছে তাদের জন্য স্পেশাল ক্লাস নেওয়া হবে। করোনায় একটা পার্সেন্টেজ ঝরে যাবে তা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু আসলে পুরা শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা যায় না। কিছুটা অমানবিক মনে হচ্ছে।
সৈয়দ রাজু: এরমধ্যে আর একজন প্রশ্ন করেছেন ডক্টর কাকলি মুখোপাধ্যায়। তিনি আপনার কলিগ। তিনি বলেছেন পরীক্ষার ভেন্যু বেশি লাগবে। ইনভিজিলেটরও বেশি লাগবে। সে ক্ষেত্রে ব্যয় সংকুলান হবে কি করে?
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: ব্যয় সংকলান এ মুহূর্তে এখন চিন্তা করা যাবে না। ছাত্রদের বলা যাবে না। এটা অমানবিক। আমরাও যে করে হোক পরীক্ষা নিব। বোর্ডগুলো আর্থিক সামর্থ্য দিতে পারে। তারা সিদ্ধান্ত নেয় যেন ছাত্রদের উপর কোন ট্যাক্স করা যাবে না।
সৈয়দ রাজু: এটা খুবই প্রয়োজনীয় কথা এটা ছাত্ররাও ভাবছিল। স্যার, আমরা আর একটা বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই। এ সময় দেখা যাচ্ছে যে, অনেক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে। সেটা যে কেবল শিক্ষার্থীদের হচ্ছে তা না। অভিভাবকদেরও হচ্ছে, বয়স্কদের হচ্ছে। আপনাদের এখানে যেমন এইচএসসি আছে অনার্স-মাস্টার্স আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজে বিশ্ববিদ্যালের যা কিছু ফিচার দরকার তার সব আছে। এ করোনাকালীন সময়ে কিন্তু অনেকের ডিজিটাল ডিভাইস এক্সেস নেই। তো সেই জায়গায় আপনার কোনো চিন্তা/প্রচেষ্টা আছে কিনা বিশেষ করে ইন্টারনেট বিল এটা নিয়ে।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: এ ব্যাপারে আমারা মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। স¤প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন টেলিটকের মাধ্যমে ১০০ টাকার একটা সুবিধা ঘোষণা করেছেন। মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন আমরা আলাদা ভাবে এ ব্যাপারে একটা প্লাটফর্ম তৈরি করার চেষ্টা করছি। মোবাইল কোম্পানির মধ্যে প্রথমে টেলিটক সাড়া দিয়েছে। করোনা শেষে যেন এই সুবিধা অব্যাহত থাকে আমি সে ব্যপাওে চেষ্টা করবো। আমাদের শিক্ষার্থীরা আগের মতো মানসিক চাপে নেই। তারা কিন্তু ঘরের বাইওে বের হচ্ছে এখন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বলেছে তরুণরা বেশি করোনা ছড়াচ্ছে। আমাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা দরকার।
সৈয়দ রাজু: তবে একটা জিনিস হয়েছে, মানুষের মধ্যে পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজনীয়তা কিন্তু বেড়েছে। যেমন হাঁচি, কাশি দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একটা পরিবর্তন হয়েছে আমার মনে হয়।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: হ্যাঁ, এই অভ্যাস আমরা করে নিতে পারলে আমাদের ভালো। আপনি নিজে স্বাস্থ্য সচেতন থাকবেন, আপনি অন্যকে আক্রান্ত করবেন না এটা আপনার দায়িত্ব। কিন্তু যারা শিক্ষিত ও সচেতন না তারা এটা মনে চলছে না।
সৈয়দ রাজু: আপনার কি মনে হয় এক্ষেত্রে কলেজে শিক্ষার্থীর ভূমিকা রয়েছে।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: হ্যাঁ, কলেজে শিক্ষার্থীর ভূমিকা থাকতে পারে কিন্তু থাকে না। যারা কো-কারিকুলাম এক্টিভিটিজ এর সাথে জড়িত তারা এক্টিভ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কাউট, বিএনসিসি, ডিবেটিং ক্লাব এসব সংগঠন গুলো যদি আরো কার্যকর করা হয় তাহলে তাদেও থেকে এসব সুবিধা আমরা কাজে লাগাতে পারি। সব প্রতিষ্ঠানে কো-কারিকুলাম এক্টিভিটিজ নেই। ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক গভীর হয়। ছাত্র শিক্ষকের দ্বারা মোটিভেট হয়। এজন্যে প্রধানমন্ত্রী স্কাউটের জন্যে প্রচুর কাজ করছেন। পড়াশুনার পাশাপাশি কো-কারিকুলাম এক্টিভিটিজ দরকার আছে। শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ সহশিক্ষা কার্যক্রম। একে অপরের পরিপূরক। সহশিক্ষা শিক্ষার্থীকে মানবিক করে তোলে। তাই শিক্ষা ও সহশিক্ষা সমানতালে এগিয়ে যাওয়া উচিত। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যেমন প্রতিযোগিতা আছে শুধু পড়াশোনা তেমনি অনেক সময় আমাদের অভিভাবকরাও চায় যে তার সন্তানরা পড়াশুনার বাইরে সে খেলবে না। স্কাউটে যাবে না, বিএনসিসি করবেনা, ডিবেটিং, কবিতা আবৃত্তির দরকার নাই। এসব প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে আমাদের চিন্তাভাবনা করা খুব জরুরি।
সৈয়দ রাজু: ধন্যবাদ স্যার, এটা খুবই সময়োপযোগী কথা। বিশেষ করে যখন বাবা মা সবসময় চায় আমাদের ছেলেমেয়েরা এক্সট্রা-অরডিনারি হউক। অডিনারি আর এক্সট্রা-অরডিনারির পার্থক্য হল এক্সট্রা। আর এটাই যদি না থাকে তাহলে এক্সট্রাঅরডিনারি হবে কোথা থেকে? আপনি ভালো একটি কথা পয়েন্ট আউট করেছেন।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: হ্যা, সুযোগ আছে। আমাদের বাংলাদেশের স্কাউট এ ২০ লক্ষ ফোর্স আছে। সেটাকে যদি অর্ধেক কার্যকর করা যায় সেটা অনেক কাজে দিবে। রেড ক্রিসেন্ট, বিএনসিসি আছে এসব সংগঠন বিশেষ রোল প্লে করতে পাওে যেকোনো ক্রাইসিস এর সময়।
সৈয়দ মিজানুর রহমান: ধন্যবাদ স্যার, আমরা একেবারে অনুষ্ঠানের প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্য।
আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার: আপনাকেও ধন্যবাদ। ক্যাম্পাস টিভিকে ধন্যবাদ। সর্বপরি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে ধন্যবাদ।