ফুল ব্যবসা: ছোট উদ্যোগে বড় সাফল্য

ফুল ব্যবসা: ছোট উদ্যোগে বড় সাফল্য

  • উদ্যোক্তা ডেস্ক

যেসব বস্তুর সারা বছর চাহিদা থাকে, সেগুলোর ব্যবসাও সবসময় জমজমাট থাকে। শুধু সঠিক পরিকল্পনা আর পরিমাণমতো মূলধন নিয়ে শুরু করে অল্প সময়েই হওয়া যায় স্বাবলম্বী। এমনই একটি ব্যবসা হলো ফুলের ব্যবসা। বিশেষ দিন, জাতীয় দিবস, বিয়ে কিংবা জন্মদিন- এসবের বাইরেও ফুলের রয়েছে বিপুল চাহিদা। আর এই খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে সরকারেরও। তাই বর্তমানে অনেক তরুণই আগ্রহী হচ্ছেন ফুলের ব্যবসায়।

বাংলাদেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ শুরু হয়েছিল ১৯৮৩ সালে, যশোরের ঝিকরগাছায়। তবে ক্রমেই দেশের বিভিন্ন স্থানে এটি ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির এক তথ্য অনুসারে, বর্তমানে দেশের প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়। প্রায় দেড় লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই খাতের সাথে সম্পৃক্ত যেখানে নির্ভর করছে প্রায় সাত লাখ মানুষের জীবনযাপন।

ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে ফুলের বাজার। নতুন উদ্যোক্তারা কীভাবে এ ব্যবসা শুরু করতে পারে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তরুণ উদ্যোক্তা জহির উদ্দিন মো. বাবর বলেন, ‘মূলত তিনভাবে ফুলের ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। এগুলো হলো খুচরা ব্যবসা, পাইকারি ব্যবসা এবং সরাসরি উত্পাদন। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ হলো খুচরা ব্যবসা। এ ক্ষেত্রে সুবিধাজনক স্থানে ছোট আকারেও শুরু করা যেতে পারে।’

বাবর বলেন, ‘পাইকারি ব্যবসার ক্ষেত্রে শুরুর দিকে একজন নতুন উদ্যোক্তার জন্য কিছু সমস্যা হতে পারে। কারণ প্রথমেই তাকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সদস্য হতে হবে। পাইকারি ব্যবসার জন্য একটি বড় দোকান বা জায়গা দরকার যা বেশ ব্যয়বহুল।’

অন্যদিকে কেউ যদি সরাসরি ফুল চাষ বা উত্পাদন শুরু করতে চান, সেক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক সম্ভাবনা, জানান তিনি।

ফুলের পাইকারি ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাজনক হলো একজন ফুল চাষির সাথে সরাসরি চুক্তি করে নেওয়া যার মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ী নিয়মিত তার কাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করতে পারবেন বলেও জানান এই তরুণ উদ্যোক্তা।

খুচরা ব্যবসা শুরু করতে চাইলে প্রাথমিক বিনিয়োগের পরিমাণ সম্পর্কে বাবর বলেন, ‘বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ভর করবে কোন জায়গায় ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন এবং কতোটা বড় পরিসরে করতে চাচ্ছেন। যদি কোনো ব্যয়বহুল এলাকায় ব্যবসার পরিকল্পনা থাকে, সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিনিয়োগ কয়েক লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। তবে অন্যান্য জায়গায় সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেও শুরু করা যেতে পারে। তবে এর সাথে মার্কেটিং এবং অন্যান্য বিষয় যুক্ত থাকলে লাখ দুয়েক টাকার প্রয়োজন হবে।’

এ ব্যবসায় আয় রোজগার কেমন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আয়ের ব্যাপারটি এলাকাভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে খুচরা ব্যবসায় কম করে হলেও প্রতি মাসে পঞ্চাশ হাজার টাকা মুনাফা করা সম্ভব। আর এই মুনাফার পরিমাণ কয়েক লাখ টাকাও হতে পারে। এ ছাড়া বছরের বিভিন্ন বিশেষ দিনে চাহিদা বেশি থাকায় সে সময় আয়ও হয় বেশি।’ তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে মুনাফার পরিমাণ আরও অনেক বেশি হয়ে থাকে বলে জানান তিনি। ‘যেহেতু খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করে থাকে, তাই এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বেশি হলেও মুনাফার পরিমাণও বেশি থাকে। প্রতি মাসে এ মুনাফার পরিমাণ কয়েক লাখ টাকাও হতে পারে।’, বলেন এই তরুণ উদ্যোক্তা।

তথ্যঋণ: ইত্তেফাকfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment