ই-কমার্স ব্যবসায় সাফল্য পেতে…

ই-কমার্স ব্যবসায় সাফল্য পেতে…

  • উদ্যোক্তা ডেস্ক

অনেকেই আছে কোন প্রকার পরিকল্পনা ছাড়া শুধু মাত্র ঝোকের বসে ই-কমার্স ব্যবসায় নেমে পড়ছেন, এতে যেমন তারা সফলতার মুখ না দেখে হতাশায় পরে যাচ্ছেন তেমনি যারা ইতিমধ্যে স্বচ্ছ উপায়ে এই সেক্টরে ব্যবসা করছেন তারাও অসুস্থ প্রতিযোগীতার মধ্যে পড়ছেন। ই-কমার্স ব্যবসায় নামার পুর্বে সঠিক ভাবে জানতে হবে আসলে ই-কমার্স কি, ব্যবসা সম্পর্কে সঠিক গাইডলাইন, ই-কমার্স নিয়ে সচেতনতা ইত্যাদি। বিশ্বব্যাপী এখন ই-কমার্স ব্যবসায়ে উদ্যোক্তারা ভাল সফল, আপনিও হতে পারেন একজন সফল ই-কমার্স উদ্যোক্তা। ই-কমার্স কি? ই-কমার্স ব্যবসায় নামার আগে কি কি মাথায় রাখা উচিৎ তা আলোচনা করবো।


কমার্স কি?

ই-কমার্স একটা আদর্শ ব্যবসা অথবা একটা বৃহত্তর আদর্শ ব্যবসার অংশ, যেটা যে ভাবে ইন্টারনেটে কাজ হয় ঠিক সে ভাবেই ইকেলট্রিনিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একক বা দলগত ব্যবসা পরিচালনা করে। বাজারের প্রধান ৪ টা অংশই পরিচালনা করে ইলেকট্রনিক কমার্স। ব্যবসা থেকে ব্যবসা, ব্যবসা থেকে ক্রেতা, ক্রেতা থেকে ক্রেতা, এবং ক্রেতা থেকে ব্যবসা। ক্যাটালগ থেকে মেইলে অর্ডারের মাধ্যমে কোন কিছু বেশ আধুনিকতম উপয় বা পন্থা বলে বিবেচনা করা যেতে পারে। বেশীরভাগ পণ্য বা সেবা ই কমার্সের মাধ্যমে দেয়া যেতে পারে।

বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্স খুব চ্যালেঞ্জিং একটা বিজনেস। ই-কমার্স বিজনেসে পণ্যের মান নিশ্চিত করা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ভাল মানের পণ্য সরবরাহ করেন তাহলে আপনার ক্রেতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। এছাড়া পণ্যের দাম পরিশোধ ও সরবরাহের বিষয়ে যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিনিয়ত প্রচার এবং প্রসারের মাধ্যমে আপনার ই-কমার্স কোম্পানিটি জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করতে হবে। একজন সফল ব্যবস্থাপক হতে চাইলে নিম্নের কাজগুলো করবেন

  • লাভ জনক মৌলিক আইডিয়া বের করাঃ

আইডিয়াটা মৌলিক হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ন। অন্যের দেখাদেখি আপনিও একই ব্যবসা শুরু করতে না চাওয়াই ভালো। বাংলাদেশে অনলাইনে কেনা বেচা মাত্র শুরু হলো। চাইলেই অনেক সহজেই ভালো কিছু আইডিয়া খুজে পাবেন। খুব ভালো হয় যদি আপনি যে বিষয়ে ভালো জানেন তা নিয়ে শুরু করা। অথবা আপনার শখ বা যে বিষয়ে আপনার বেশ আগ্রহ আছে সেই বিষয়ও আপনি নির্বাচন করতে পারেন। যদি মাথায় কিছু না আসে তাহলে যখন বিভিন্ন ধরনের সাইট ব্রাউজ করেন তা দেখে আইডিয়া নেয়ার চেষ্টা করতে পারেন। এমন অনেক সাইট আছে যার মতো আমাদের এখানেও করা যায়। এমন কিছু পেলে লিখে রাখতে পারেন। অনেক গুলো আইডিয়া জমলে সেগুলোর সম্ভাব্যতা যাচাই করে কোন একটা নির্বাচন করতে পারেন।

  • টার্গেট মার্কেট নির্দিষ্ট করাঃ

আপনি সবাইকে টার্গেট করলে ভূল করবেন। সবার জন্য প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা শুরু করাও ভুল। যাদের অনেক বাজেট অনলাইন মেগাস্টোর করতে চায় তাদের জন্য বিষয়টা ঠিক আছে। আপনার উচিত হবে নির্দিষ্ট একটা টার্গেট নিয়ে কাজ করা। অনলাইন বিজনেসের ক্ষেত্রে টার্গেট মার্কেটিং একটা খুব জনপ্রিয় ধারনা। এই ভালো একটা নির্দিষ্ট বিষয়কে টার্গেট করে এগুলো ভালো করবেন।

  • বসার জন্য পরিকল্পনা তৈরিঃ

এখানেই আমরা অনেক ভূল করি। আমাদের সাথে পাশ্চাত্যের ব্যবসায়ীদের পার্থক্য এখানে। আমরা ব্যবসার জন্য পরিকল্পনা না তৈরি করেই ব্যবসা শুরু করে দেই। এজন্য অধিকাংশ ব্যবসায়ী মাঝখানে এসে হোঁচট খায় অথবা জানে না গন্তব্য কি। আমার মতে খুব সংক্ষিপ্ত হলেও মানে এক দুই পাতার হলেও একটা পরিকল্পনা আপনার অবশ্যই করা উচিত। এখন প্রায় ফ্রিল্যান্সার থেকে উদ্যোক্তা হওয়া নিয়ে সভা সেমিনার হচ্ছে, পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এই সাইটটির কোর্সটি বেশ কাজে দিবে।

  • বাজার নিয়ে গবেষণা করুনঃ

প্রথমে আপনার ব্যবসার ধরণ ও বাজারে তার চাহিদা কতটুকু তা নিরুপন করুন। বাজার গবেষণা করে ব্যবসা শুরু করলে এবং ব্যবসায়িক গুণগুলো ধরে রাখলে সফল ব্যবসায়ী হওয়া সম্ভব, তা না হলে সফল হবার সম্ভবনা কম।

  • বর্তমানে যারা ব্যবসা করছে তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিনঃ

আপনি যে ব্যবসাই শুরু করতে চান না কেন, আগে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে হবে। প্রতিটি ব্যবসায়ের ই অনেক বিষয় থাকে যা বাইরে থেকে বোঝা যায় না, করতে করতেই এ জ্ঞান লাভ করতে হয়। অনেক খুটিনাটি বিষয় আছে যা ব্যবসার লাভ-ক্ষতিতে বড় ভূমিকা রাখে। তাই একই ধরণের অন্য ব্যবসাগুলোর ভিতরের খবর জানার চেষ্টা করুন। তারা কি কি চ্যালেঞ্জ এর মোকাবেলা করছে জানুন।

  • ব্যবসার নাম পছন্দ করুনঃ

ব্যবসা শুরুর আগে আপনার ব্যবসার একটা নাম নির্বাচন করুন। এমন নাম পছন্দ করুন যে নাম দিয়েই আপনার ব্যবসার ধরণ সম্পর্কে খুব সহজেই একটা ধারণা লাভ করা যায়। এমন নাম নির্বাচন করা ঠিক হবে না যার আপনার ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এমন নাম ঠিক করুন যা সহজেই মনে গেঁথে যায়।

  • ডোমেইন নাম রেজিষ্ট্রেশন করে ওয়েবসাইট তৈরি করুনঃ

আপনার ব্যবসার প্রসার ও প্রচারের জন্য ডোমেইন নাম রেজিষ্ট্রেশন করে ওয়েবসাইট তৈরি করা খুবই প্রয়োজন। এতে করে ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্যাদি সকলে খুব সহজেই পেতে পারবে। আর এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক সফলতা খুব সহজেই অর্জন করা সম্ভব হবে।

  • ব্যবসায়িক লেনদেন কম্পিউটারাইজড তথা আধুনিকিকরণঃ

ব্যবসায়িক লেন-দেনকে আধুনিক বিশেষ করে সফটওয়্যর নির্ভর করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। এতে ব্যবসায়িক লেনদেন যেমন সহজ হবে তেমনি নিরাপত্তার বলয়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

  • খরিদ্দারদের তালিকা বাড়ানোঃ

ইন্টারনেটে ব্যবসা সম্পন্ন করা একজন সফল ব্যবসায়ী জানেন যে তাদের প্রথম কাজ হল খরিদ্দারদের তালিকা বাড়ানো। এক্ষেত্রে সফলতা তাদের কাছেই আসে যারা খরিদ্দারদেরকে সাহায্য করার মানসিকতা নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। অনলাইন ব্যবসা আসলেই চমৎকার একটি ধারণা। আমরা অনেকেই এটাকে ব্যবসা হিসেবে নিতে চাই স্বাধীন ভাবে কাজ করার জন্য। তবে সমস্যার সম্মুখীন হতেই হবে যখন আপনার ব্যবসায়ের কাজে নিয়োজিত কর্মী কোন ভুল করে।

যখন আপনি নিজে অনলাইন ব্যবসা শুরু করবেন তখন এটা কখনোই ছেলে খেলা নয়। আপনার কর্ম পদ্ধতিই আপনার ভবিষ্যৎ বলবে, যা একনিষ্ঠতা ও একাগ্রতার উপর নির্ভর করে। ব্যবসায় নামার পূর্বে আপনাকে পুরো বিষয়টা সম্পর্কে জানতে হবে। যদিও বাইরে থেকে সহজই মনে হবে। খরিদ্দারদের কাছে আকর্ষণীয় এমন কিছুর ব্যবসা করুন, যা আপনাকে সহজেই মুনাফা এনে দিতে সক্ষম।

আপনি যদি কোন কোম্পানির সফল ব্যবসায়ী হতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই সেই কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। আপনাকে এমন কোন ই-কমার্স বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে যে এটা সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে। যা পরবর্তীতে আপনাকে অনেক সাহায্য করবে।favicon59-4

Sharing is caring!

1 Comment on this Post

  1. ই-কমার্স ওয়েবসাইট ব্যবসায়িক সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারে। সবাই কঠোর পরিশ্রম করলে সফল হতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ ব্লগের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

    Reply

Leave a Comment