মার্কেটিংয়ের ১০ মন্ত্র

মার্কেটিংয়ের ১০ মন্ত্র

আসাদুজ্জামান : বিপণন বিশ্লেষকদের ভবিষ্যৎবাণী-২০১৬ হবে গ্রাহকের বছর। এ জন্য বিপণনকারীদের হতে হবে একান্তই গ্রাহকনির্ভর। অর্থাৎ বিপণন ব্যাপারে প্রবল ইচ্ছা, গ্রাহকের অভিজ্ঞতার প্রতি নজর, যাতায়াত সেবা প্রদান, গ্রাহকের অন্তর্দৃষ্টি ও অন্যান্য বিশ্লেষণের উপায়ের প্রতি রাখতে হবে কড়া নজর। মোট কথা গ্রাহকদের আকর্ষণ করার সব ধরনের প্রচেষ্টার সমন্বয় থাকা চাই।


নিচের বিপণন কৌশলগুলো হতে পারে আপনার গ্রাহকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো :

১. এক অ্যাপেই সব

অ্যাপস শুধুমাত্র আর মুঠোফোন ডিভাইসের জন্য নয়। মুঠোফোনের গণ্ডি পেরিয়ে এবার অগণিত ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন, ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন এমনকি আপনার টিভি চালানোর কৌশল পর্যন্ত পৌছে গেছে। এক বা একাধিক কাজের জন্য অ্যাপসের ভূমিকা সত্যিই দারুণ। অর্থাৎ এই অ্যাপস আপনার জন্য বিদ্যমান সম্পদ থেকে উৎপাদনশীলতার জন্য ব্যাপক সুযোগ বয়ে আনবে। ২০১৬ সালে আপনি ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, মার্কেটিং, প্রচার, বিজ্ঞাপন, যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা, গ্রাহকের অভিজ্ঞতাসহ অন্যান্য বিপণনগুলোর জন্য বিনামূল্যে কিংবা নামমাত্র মূল্যের অ্যাপস পাবেন।

২. মন বুঝে মার্কেটিং

বিপণনকারীদের ‘তথ্য-চালিত মার্কেটিং’ সম্পর্কে কথা বলতে হবে। কিন্তু যদি এতে প্রযুক্তি ও বিশ্লেষণের সমন্বয় না ঘটে তবে এর কাজে লাগার সম্ভাবনা নেহায়েত কম। ২০১৬ সাল অর্থাৎ চলতি বছর হবে তথ্যভাণ্ডারের উপেক্ষার বছর। ফলে আপনাকে অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন হতে হবে। বুঝতে হবে গ্রাহকের মন।গ্রাহকের লিঙ্গ, চাকরির ধরন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইত্যাদি বিষয়ে স্বচ্ছ ধারনা রাখতে হবে।

৩. আকর্ষণীয় উপাদান

ধারনা করা হচ্ছে, ২০১৬ সালে পরিসংখ্যানিক উপাদান থেকে মানুষের আকর্ষণ ক্রমশ কমে যাবে এবং মনোরম আকর্ষক এমন বিষয়গুলোর দিকে ধাবিত হবে। তাই এ বছর আপনার কন্টেন্ট পরিকল্পনার মধ্যে রাখা উচিত ইন্টারেক্টিভ মূল্যায়ন, সুক্ষ্ম হিসাব, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।

৪. ব্যাক্তিগত যোগাযোগ

২০১৬ সালে ই-মেইল এবং কাস্টম ল্যান্ডিং পেজ এর মতো ব্যক্তিগত বিপণন বার্তাগুলো সময়ের পরীক্ষার উপর দাঁড়িয়ে আছে । এসব পেজ ভোক্তা সন্তুষ্টির ক্ষেত্রে দারুণভাবে কাজ করবে । ব্যাক্তিগত যোগাযোগের জন্য ই-মেইল, ফেসবুকের ইনবক্স ইত্যাদির সাহায্য ‍নিন। চলতি বছর ভোক্তাদের আরও প্রাসঙ্গিক কন্টেন্ট ইমেইল পাবার স্বাভাবিক প্রত্যাশা তো থাকছেই । এছাড়াও তারা ব্রান্ডের সামাজিক মিথস্ক্রিয়া বা ইনটারেকশন সম্পর্কে জানতে অবশ্যই আগ্রহী থাকবে।

৫. অ্যাডভোকেট মার্কেটিং

গ্রাহকদের আপনি যদি আপনার ব্যবসায়ের দারুণ অভিজ্ঞতার প্রমাণ দিতে পারেন তাহলে আপনি অনেক বেশী রেফারাল পাবেন। ২০১৬ সালে আপনি যদি (অ্যাডভোকেট) উকিল বিপনন সুবিধা নিতে পারেন। তবে আপনি আপনার রেফারালের ক্ষেত্রে একটি বড় সাহায্য দিতে পারেন। সেলিব্রিটিস এনডোরসমেন্ট’প্রোগ্রামের মতো আপনার উকিল-বিপণন প্রোগ্রামগুলো চিন্তা করুন। কিন্তু আপনার কোম্পানির ‘সেলিব্রিটিস এনডোরসিং’এর পরিবর্তে তারা আপনাকে আপনার কোম্পানীর সঙ্গে ইতিবাচক অভিজ্ঞতার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে।

৬. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিপণনে প্রচুর পরিমাণে শেয়ারিং ও পোস্টিংয়ের সুযোগ আছে। এই এক ব্যক্তি থেকে বহুর কথাবার্তাগুলো ব্যক্তিবিশেষের শেয়ারিং, কমেন্টে, রিপ্লাই দেওয়ার মাধ্যমে ভাল ফলাফলে সাহায্য করে থাকে। তাই চলতি বছর আপনাকে সামাজিক গণমাধ্যমের এই বার্তাগুলোর ব্যাপারে আপনাকে অনেক বেশী সচেতন হতে হবে। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী সোস্যাল মিডিয়াতে মানুষের সাথে কথা আদান-প্রদানের মাধ্যমে অতি অল্প সময়ে গ্রাহকদের দোরগোড়ায় তথ্য পৌঁছাতেহবে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক মনিটরিং টুলস রাখতে হবে যার মাধ্যমে সামাজিক ব্যস্ততা এবং গ্রাহকের সাথে সংলাপ, সেবা দেয়া বা বিক্রির জন্য কাজে লাগবে।

৭. প্রতারণা থেকে রেহাই

কেন ‘প্রতারণা থেকে রেহাই’ বিষয়টি বিপণন কৌশলগুলোর মধ্যে এলো? এর কারণ হলো বিপণনকারীরা গ্রাহকদের এবং শুভাকাঙ্খীদের অনেক বার্তা পাঠায়। ইমেইল খোলা এবং ওয়েবসাইটের তথ্য লিখে রাখার জন্য তারাই কাজ করে। এ ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড সম্পর্কে ধারণা নেই এমন অজ্ঞ লোকদের জন্য ফিশিং ও প্রতারণা স্ক্যাম রক্ষা না হলে তারাই দায়ী থাকবেন। এ জন্যই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া চলতি বছর আপনার ইমেল মার্কেটিং সিস্টেমে নিউ ডোমেন-বেসড মেসেজ অথেনটিকেশন, রিপোর্টিং অ্যান্ড কম্পোর্ম্যান্স স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহার নিশ্চিত করা, গ্রাহকদের আপনার কোম্পানির ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে ধাঁধাঁ তৈরি থেকে বাঁচাতে ও আপনার নিরাপত্তার জন্য একটি পরিকল্পনা করা দরকার।

৮. বিপণন মিডলওয়্যার

বিপণন মিডলওয়্যারের মধ্যে রয়েছে ডাটা ব্যবস্থাপনা প্ল্যাটফর্ম (ডিএমপি), ট্যাগ ব্যবস্থাপনা, ইউজার ম্যানেজমেন্ট এবং অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম ইন্টারফেস (এপিআই) সেবা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত। চলতি বছর মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো আপনাকে সাহায্য করবে।

৯. গ্রোথ ইঞ্জিনিয়ারিং

কোড কীভাবে করতে হয়? যারা জানেন না, তাদের কাজের সুবিধার্থে অ্যাপস নিয়ে এসেছে দারুণ সব উপায়। এছাড়া আরও অনেক অ্যাপস ও অ্যাপস সহযোগী উপাদান রয়েছে, যেগুলো এসেছে মানুষের বিভিন্ন ভাবে কাজগুলোকে সহজ করতে। যারা কোডিং এর সাথে পরিচিত, তাদের জন্য এটি আরও চমকপ্রদ। চলতি বছর আপনাকে অবশ্যই লিভারেজ ও সফটওয়ারের কাজে সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

১০. অ্যাকাউন্ট বেসড মার্কেটিং

২০১৬ সালে বিপণন ফানেল দুটি কারণে পরিবর্তন হবে। প্রথমত, একের অধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নেতা, আমলা এবং কোম্পানির ভিতরে স্টেকহোল্ডাররা এটিকে আরো জটিল করে তোলে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী লোকজনের জন্য। দ্বিতীয়ত, মার্কেটিংয়ে অধিক সংখ্যক নীতিনির্ধারকদের মার্কেটিং কন্টেন্ট আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে। অ্যাকাউন্ট-ভিত্তিক বিপণন বা এবিএম করার জন্য ২০১৬ সাল কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মার্কেটিং পদ্ধতির সাথে আমন্ত্রণ এবং পরিমাপ করার বিষয় জড়িত।

এন্টারপ্রেনার অবলম্বনে।favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment