সাক্ষাৎকার : অর্থনৈতিতে বিমা শিল্পের অবদান বাড়ছে

সাক্ষাৎকার : অর্থনৈতিতে বিমা শিল্পের অবদান বাড়ছে

  • উদ্যোক্তা ডেস্ক

গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড দেশের শীর্ষ বিমা কোম্পানি। তবে বহুমাত্রিক এই কোম্পানির কার্যক্রম শুধু বিমা খাতেই সীমাবদ্ধ নয়।  অর্থবাজার, পুঁজিবাজার, স্বাস্থ্যখাতসহ খাতে এর পদচারণা রয়েছে। প্রতিটি খাতেই সর্বোচ্চ মান আর পেশাগত দক্ষতার মাধ্যমে আইকনিক অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে গ্রীন ডেল্টার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো। দেশের অন্যতম বড় এই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে দক্ষভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা চৌধুরী।

গ্রীন ডেল্টার দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি বিশ্বের অন্যতম বড় বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, নতুন ধারার দেশীয় ব্যাংক ব্র্যাক ব্যাংকে দায়িত্বশীল পদে কাজ করেছেন। একাধারে ব্যাংকিং, ক্ষুদ্র ঋণ এবং বিমা খাতের অভিজ্ঞতা, পারিবারিক ঐতিহ্য, উচ্চতর শিক্ষায় ফারজানা চৌধুরী অনন্য নেতৃত্বগুণ অর্জন করেছেন। তার সুদক্ষ পরিচালনায় দেশের বৃহত্তর বিমা কোম্পানিটির পরিধি দ্রুত বেড়ে চলেছে। দেশের বিমা খাত এবং গ্রীন ডেল্টার নানা দিক নিয়ে অর্থসূচক পরিবারের সঙ্গে আলাপ করেন গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের সিইও ফারজানা চৌধুরী


: বিমা খাতের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?

ফারজানা চৌধুরী: আমাদের দেশের বিমা শিল্প এখনও তুলনামূলকভাবে অপরিণত। দেশের মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশেরও কম মানুষ বিমার আওতায় এসেছে। জিডিপিতে বিমা শিল্পের অবদান ১ শতাংশেরও কম। এর মানে হচ্ছে, বিমা খাত বৃদ্ধির সম্ভাবনা অপরিসীম। গত এক দশক ধরে এই শিল্পের পরিধি ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, মানুষ বিমার ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন এবং বিভিন্ন বিমা পলিসির গুরুত্ব সম্পর্কে তারা জানতে শুরু করেছে।

farzana-chowdhury2নতুন বিমা আইন প্রণয়ন এবং বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই শিল্পে অনেক বেশি শৃঙ্খলা এসেছে। বেড়েছে গতি। তবে এখনও আমরা সম্ভাবনা থেকে অনেক পিছিয়ে। অনুকূল পরিবেশ ও সবার সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই শিল্পের কার্যকর বিকাশ সম্ভব।

ব্যবসা-বাণিজ্যে নিরাপত্তা সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে বীমা কোম্পানিগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দিন দিন অর্থনীতিতে বিমা খাতের অবদান বাড়ছে।

: বিমা শিল্প নিয়ে মানুষের মাধ্যে নেতিবাচক ধারণা আছে, এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?

ফারজানা চৌধুরী: এটি সত্য যে, দেশের বেশিরভাগ মানুষ বিমা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। আবার অনেকের মধ্যে বিমা সম্পর্কে ভুল ধারণা আছে। বিমা শিল্পের বিকাশে এ থেকে উত্তরণ দরকার। এই নেতিবাচক ধারণা পরিবর্তনের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

গ্রাহকদের দাবি (Claim) পরিশোধে আরও যত্নবান হতে হবে। পলিসি খোলার সময় গ্রাহককে খুটিনাটি স্পষ্ট করে জানাতে হবে। পলিসির সব শর্ত আগেই গ্রাহককে জানাতে হবে। এতে পরবর্তীতে ভুল বুঝাবুঝি হবে না।

গ্রাহক বাড়ানোন জন্য বেশিরভাগ কোম্পানি তাদের বিমা পলিসির শর্তগুলো আগে থেকে জানান না। যদি কোনো একটি কোম্পানি ঠিক মতো গ্রাহকের দাবি পরিশোধ না করে তবে পুরো সেক্টর সম্পর্কে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে। দীর্ঘ মেয়াদে বিমা খাতের বিকাশের স্বার্থে এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে মনোযোগ দিতে হবে।

: আইডিআরএ’র তথ্য মতে বিমা কোম্পানিগুলো ব্যবস্থাপনা খাতে অনেক বেশি ব্যয় করছে, এ বিষয়ে আপনার মত কী? কেন এমনটি হচ্ছে?

: বিমা কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা ব্যয় আগের তুলনায় বেড়েছে, এটি সত্য। তবে তাদের আয়ও কিন্তু বেড়েছে। ব্যয় বাড়ার অন্যতম কারণ হালো মানুষের জীবন-যাত্রার মান আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।

আইডিআরএ ১৯৫৮ সালের আইনের আলোকে বলছে, কোম্পানিগুলোর ব্যয় বাড়ছে। কিন্তু ১৯৫৮ সালের বাজার দর আর এখনকার বাজার দর এক না। বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যাতায়াত, বিজ্ঞাপন, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ইত্যাদির খরচ অনেক বেড়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় ৩ হাজার গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ২০০৫ সালে বিমা রেজিস্ট্রেশন ফি ১৩৩ গুণ বাড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

১৯৯১ সালে সরকার প্রায় সব ধরনের খরচের উপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপ করেছে। ফলে এটি আমাদের ব্যয়ের খাতে যুক্ত হয়েছে। ১৯৫৮ সালে যখন বিমা বিধি জারি করা হয়, তখন মূসকের কোনো বিধান ছিল না। আমাদের ভ্যাট দিতে না হলে নির্ধারিত সীমার মধ্যে ব্যয় করা সম্ভব হতো।

অন্যদিকে ভ্যাট, নিবন্ধন ফিসহ নানা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেলেও সেন্ট্রাল রেটিং কমিটি (সিআরসি) বিভিন্ন শিল্পের জন্য প্রিমিয়াম হার নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর বাইরে প্রিমিয়াম নেওয়ার সুযোগ নেই।

: একই কারণে কী গ্রীন ডেল্টার ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়েছে?

ফারজানা চৌধুরী: না, ব্যয় বৃদ্ধির আরও কারণ আছে। আর সেটি শুধু গ্রীন ডেল্টার ক্ষেত্রে নয়; সব কোম্পানির জন্যই প্রযোজ্য। বর্তমানে আমাদের দেশে ৪৫টি সাধারণ বিমা কোম্পানি আছে। এই শিল্পের পরিধির তুলনায় কোম্পানির সংখ্যা বেশি। এ কারণে কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা অনেক। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে কোম্পানিগুলোকে যোগ্য ও দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং তাদের ধরে রাখার জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হয়।

গ্রীন ডেল্টা প্রথম জেনারেশনের বিমা কোম্পানি। ফলে দক্ষ ও পেশাদার বিমা কর্মী গড়ার ওপর জোর দেয় আমাদের কোম্পানি। এ কারণে প্রায়ই আমাদের কর্মকর্তারা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেন। ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্যতাসম্পন্ন এবং দক্ষ পেশাদার জনবল তৈরিতে সক্ষম হয়েছি আমরা। এতে ব্যবস্থাপনা ব্যয় কিছুটা বেড়েছে। একইসঙ্গে কিন্তু আমাদের আয়ও বাড়ছে।

farzana-chowdhury3আমরা জানি, ব্যবস্থাপনার ব্যয় বেড়ে গেলে তার মুনাফা কমে যায়। তখন শেয়ারহোল্ডারদেরকে ভালো লভ্যাংশ দেওয়া এবং বিমা দাবি পরিশোধে সমস্যা দেখা দেয়। গ্রীন ডেল্টার ক্ষেত্রে কিন্তু মোটেও এমনটি বলা যাবে না। গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স জন্মলগ্ন থেকেই শেয়ারহোল্ডারদের আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। গত ২০ বছরে আমরা গড়ে ৩৭ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছি। বিমা শিল্পে এমন লভ্যাংশ দেওয়ার রেকর্ড কারো নেই। এটি আমাদের দক্ষ ব্যবস্থাপনার একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। এই ধারা আগামী দিনেও ধরে রাখতে পারবো বলে আশা রাখি। গ্রীন ডেল্টা গ্রাহকদের বিমা দাবি পরিশোধ, শেয়ারহোল্ডারদের আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দেওয়া, পর্যাপ্ত মূলধন সংরক্ষণ এবং বড় রিজার্ভ রাখাসহ সব ক্ষেত্রেই সেরা।

২০১০ সালের আইনে সলভেন্সি মার্জিনের শর্ত যোগ হয়েছে। আমরা কিন্তু সব সময় এই মার্জিন মেনটেইন করছি। আমাদের সলভেন্সি (আর্থিক স্বচ্ছলতা) নির্ধারিত সীমার বেশ উপরে থাকে।

: অভিযোগ উঠছে, অনেক কোম্পানি ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের ক্ষেত্রে আইনি সীমা লংঘন করছে। একদিকে সময়ের বাস্তবতা, অন্যদিকে বিধিমালার শর্ত, এমন অবস্থায় করণীয় কী?

ফারজানা চৌধুরী: এ সমস্যার উত্তরণে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইডিআরএ) কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। আইডিআরএ এই খাতের অভিভাবক। বিমা খাতের উন্নয়নে ইতোমধ্যে অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে আইডিআরএ। ১৯৫৮ সালের বিমা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। অথচ গত ৬০ বছরে পরিস্থিতি অনেক বদলে গেছে। এই সময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাই কিন্তু নিবন্ধন ফিসহ নানা ধরণের ফি কয়েকগুণ বাড়িয়েছে। আগে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ছিল না। এখন নানা ধরনের সেবার জন্য ভ্যাট দিতে হয়। অনেক ব্যয় কিন্তু কোম্পানির এখতিয়ারের মধ্যেই নেই। তাই এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আইডিআরএ অর্ধশত বছরের পুরনো বিধি পরিবর্তনের উদ্যোগ নেবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

বিধিমালা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সলভেন্সি মার্জিনের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া যেতে পারে। যে কোম্পানির সলভেন্সি মার্জিন ভালো সেটি একটু বেশি ব্যয় করতে পারে। অন্যদিকে যার সলভেন্সি মার্জিন কম, তার ব্যয়ের সীমাও কম রাখা যেতে পারে। আমরা আশা করি, ব্যবস্থাপনা ব্যয় সংক্রান্ত জটিলতার অবসানেও আইডিআরএ উদ্যোগ নেবে।

: বিমা শিল্পে গ্রীন ডেল্টা আর কী করছে?

ফারজানা চৌধুরী: বিমা শিল্পের উন্নয়নের জন্য গ্রীন ডেল্টা নতুন নতুন পণ্য নিয়ে কাজ করছে। গ্রীন ডেল্টা একা বড় হতে চায় না। সবাইকে নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সবাইকে নিয়ে ১৬ কোটি মানুষের দুয়ারে বিমাকে পৌঁছে দিতে চায় গ্রীন ডেল্টা। এরই অংশ হিসাবে তৃণমূল, ক্ষুদ্র, মাঝারী শিল্প, ছাত্র-ছাত্রী, নারী, কৃষি বিমা, প্রবাসী ও গার্মেন্টস কর্মীসহ সবার জন্য আমরা কাজ করছি।

এখানে মেয়েদের জন্য কোনো বিশেষ বিমা পণ্য ছিল না। আমরা নিবেদিতা নামে একটি প্রোডাক্ট চালু করেছি। ব্র্যাক ব্যাংকে থাকা কালে অনেকটা নিজ green-delta-logoউদ্যোগে প্রথমা নামে একটি প্রোডাক্ট চালু করেছিলাম। এবার নিয়ে আসলাম নিবেদিতা। দক্ষিণ এশিয়ায় এটার মতো প্রোডাক্ট নেই। এই পণ্যে অনেক সাড়া পেয়েছি। প্রবাসীদের প্রশিক্ষণ, এক্সিডেন্ট, পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়া, ভ্রমণে বিলম্ব এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছি।

আমরা ডিজিটাল বিমা নিয়েও কাজ করছি। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহককে কীভাবে আরও স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়া যায়- সে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অনলাইন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কীভাবে প্রিমিয়াম দেওয়া যায়, নতুন পলিসি খোলা যায়- সেগুলো নিশ্চিত করছি আমরা।

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৭৪ টাকায় ১ লাখ টাকার নিরাপত্তা দিচ্ছি আমরা। কর্পোরেটদের জন্য আমরা জিডি হেলথ নামে একটি পণ্য নিয়ে এসেছি। ১ লাখ থেকে ১০ টাকার পলিসি। এর উপরে গেলে দেশের প্রায় ১১টি হাসপাতালে ক্যাশলেস সার্ভিসের সুযোগ আছে।

আমাদের গ্রাহকদের সাধ্যের মধ্যে ভালোমানের চিকিৎসা দিতে মালয়েশিয়া, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর ও ভারতের সেরা কিছু হাসপাতালের সঙ্গে আমরা চুক্তি করেছি।

: বিমা শিল্পের বাইরে গ্রীন ডেল্টা কী নিয়ে কাজ করছে?

ফারজানা চৌধুরী: গ্রীন ডেল্টা শুধুই একা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নয়, অর্থনীতির নানা অঙ্গনে রয়েছে এ কোম্পানির পদচারণা। নানাভাবে আমাদের এ কোম্পানি দেশের  ব্যবসা-বাণিজ্যে সহায়তা করছে, মানবসম্পদ উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জীবনমানের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছে।

বিমা খাতের বাইরে গ্রীন ডেল্টা সিকিউরিটিজ ও গ্রীন ডেল্টা ক্যাপিটাল নামে দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করছি আমরা। গ্রীন ডেল্টা ক্যাপিটাল দেশের বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থ জোগানের কাজ করছে। ইতোমধ্যে, সামিট, বিএসআরএম ও প্রাণের মত বড় শিল্প গ্রুপের জন্য ঋণ সংগ্রহ করে দিয়েছি। গ্রীন ডেল্টা সিকিউরিটিজ নানা উদ্ভাবনী প্রোডাক্ট চালু আর উন্নত সেবার মাধ্যমে ক্যাপিটাল মার্কেটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

post-image-news-and-events-green-delta-insurance-receives-award-from-international-finance-465x243আমি সিইও হওয়ার পর আরও দুটি কোম্পানি করেছি, এর একটি হলো জিডি অ্যাসিস্টস, অন্যটি পিএবিআই ইনস্টিটিউট।

পিএবিআই এর মাধ্যমে বিমা শিল্পের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরির কাজ করছি। এর জন্য ইতোমধ্যে ট্রিপল আই, এনআই ইনস্টিটিউট ইন্ডিয়া, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও চার্টার্ড ইন্সটিটিউট অব লন্ডনের সঙ্গে চুক্তি করেছি। প্রথম প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে গ্রীন ডেল্টার সঙ্গে চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব লন্ডন চুক্তি করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি নিতে অনেক টাকার প্রয়োজন। সবার পক্ষে এটি সম্ভব না। চুক্তি অনুযায়ী, ছাত্র-ছাত্রী যতো বেশি দিব, খরচ তত কমিয়ে দেবে তারা। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।

জিডি অ্যাসিস্টসের মাধ্যমে মালোয়শিয়ার ৮৪ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সেবা দেই।  আমাদের উদ্দেশ্য হলো কম টাকায় ভালো সেবা দেওয়া। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সবই হালাল এবং সবার জন্য একই খরচ। গ্রীন ডেল্টা থেকে যারা স্বাস্থ্য বিমা নিবে তারা এই সুবিধা পাবে।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্পে সরকারের সঙ্গে কাজ করছি আমরা। অনেকগুলো কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমরা ওই প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলায় প্রকল্পটির কাজ চলছে। এই প্রকল্পের আওতায় গ্রামের দরিদ্র মানুষদেরকে বিমা সেবা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে সরকার এসব বিমা পলিসির প্রিমিয়াম দিচ্ছে। এই পাইলট প্রকল্পের সাফল্য পর্যালোচনা সাপেক্ষে এর আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে সরকার। এর মাধ্যমে একদিকে বিমা শিল্পের পরিধি বাড়বে, অন্যদিকে গ্রামের দরিদ্র মানুষেরা আরেকটু বেশি নিরাপত্তা পাবে।

সূত্র: অর্থসূচকfavicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment