ইন্টারনেট মার্কেটিংয়ের কৌশল
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
সকল ব্যবসাই বিক্রয়ের এর সাথে সম্পর্ক যুক্ত। ব্যবসা মানেই বিক্রয়। সেই বিক্রয় হতে পারে কোন প্রডাক্ট বা কোন সেবা। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে ট্রেডিশনাল মার্কেটিং ক্রমশ বিলুপ্তির পথে। সেই সাথে ইন্টারনেট মারকেটিং/ অনলাইন মার্কেটিং এর জয়জয়কার। কারণ একটাই সোসাল মিডিয়া সহ নানা ধরনের অনলাইন যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যপক প্রসার। কোন বিষয়ে/ পন্য/সেবা বা তথ্যের দরকার হলে আমরা এখন ছুটে যাই গুগল মামার কাছে। নিউজ, ফাইল, ইমেজ, সকল ডকুমেন্ট নিমেষেই ইমেইল এর মাধমে পাঠাতে পারছি। ওয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, স্কাইপ, আরও নানা ধরনের সোসাল অ্যাপ আমাদের জীবন যাত্রার মানকে করেছে উন্নততর। সেই সাথে সময় কম লাগছে যেকোন কাজে।
ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব এর মাধমে আমরা সকলেই ইন্টারনেট নামক অদৃশ্য তারে বাধা। ঘরে বসেই এখন অফিসিয়াল কাজ করা যাচ্ছে। যাবতীয় পন্য ঘরে বসেই মাউসের ক্লিকে পাওয়া যায়। এনড্রেয়ডের আবির্ভাব কম্পিঊটারের অভাব বুঝতেই দেয়না এখন। ইন্টারনেট ভিত্তিক কার্যকলাপ ব্যাপক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় কোন পন্য/সেবা বিক্রয় করার সহজ মেথড হল ইন্টারনেট মার্কেটিং।
কোন পন্যের/সেবার রিভিও তুলে ধরে তা অনলাইনে সেল করার যে মেথড তার নামই ইন্টারনেট মার্কেটিং বা অনলাইন মার্কেটিং। এখন আমরা ইন্টারনেট মার্কেটিং কৌশল নিয়ে আলোচনা করবোঃ
- ১। সার্চ ইঞ্জিনঃ
লোকজন বিভিন্ন তথ্য/সেবা পাবার জন্য সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্য নিয়ে থাকে । সার্চ ইঞ্জিন হল সার্চ মেশিন। সবচেয়ে দ্রুতগামী এবং বেশি তথ্য বহুল সার্চ ইঞ্জিন হল গুগল। এছাড়া ইয়াহু, বিং, এম. এস. এন সার্চ ইঞ্জিনের তথ্য ভান্ডার ও কম না। এসব ছাড়া দেশ ভেদে কিছু সার্চ ইঞ্জিন আছে। সার্চ ইঞ্জিনের এলগরিদম এবং রাংকিং ফ্যাক্ট স্টাডি করে SEO ( onpage -offpage) করলে সার্চ ইঞ্জিনে আপনার ওয়েব পেজে ব্যপক পরিমান ভিজিটর ঘুরান সম্ভব। - ২। ইউটিউব চানেলঃ
একটি ইউটিউব চানেল হতে পারে মাকেটিং এর শক্তিশালী হাতিয়ার। সেবার/প্রোডাক্টবেজ ৫ মিনিটের একটি ভিডিও কাস্টমারের মন জয় করে নিতে পারে। সেখানে প্রোডাক্ট পেজ/ওয়েবপেজ বা ল্যন্ডিং পেজের লিংক দেওয়া থাক নকাস্টমার একবার ঢু মেরে দেখে আসবে আপনার প্রোডাক্ট পেজ। ১০ জন ভিজিটরের মধ্যে ১ জন ওই প্রোডাক্ট কিনলে আশ্চর্য হবার কিছুই নাই। ইউটিউব টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের কাজ করে। ইউটিউব ছাড়া keek.com ভিডিও মার্কেটিং এর অন্যতম মিডিয়া। ইদানিং ফেসবুকও ভিডিও মার্কেটিং এর অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠছে। - ৩। সোশ্যাল মিডিয়াঃ
নুতন করে কিছু বলার নাই। আমরা যেখানে থাকি যেভাবেই থাকি কোন না কোন সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে কানেক্টেড থাকতে চাই। উন্নত দেশ গুলোতে প্রায় সবাই সবসময় সোশ্যাল মিডিয়াকে একমাত্র সহজতর যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, পিন্টারেস্ট, লিঙ্কডইন, হাই ফাইভ, ইন্সটাগ্রাম, ভিকে এসব মিডিয়া গুলি খুবই জনপ্রিয়। প্রোডাক্টবেজ পেজ, গ্রুপ তৈরি করে প্রোডাক্ট ইমেজ সহ ওয়েবপেজের লিংক দিয়ে আর্টিকেল সমেত পোস্ট করলে ভাল ভিজিটর পাওয়া যায়। - ৪। ইমেইলঃ
বর্তমানে ইমেইল যোগাযোগের অন্যতম মাধম। ওয়েব রির্চাস এর মাধমে টার্গেট কাস্টমারের ইমেইল কালেক্ট করে লিস্ট বিল্ডিং তৈরি করে ইমেইল মার্কেটিং করে খুব ভাল সেলস করা যায়। - ৫। ওয়েবপেজ ব্লগঃ
হেল্পফুল টিপস প্রদানের মাধমে ব্লগ পরিচালিত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার এর মাধমে ওয়েবপেজে প্রচুর ভিজিটর জড়ো করা সম্বব। আপানার ওয়েবপেজে যে ধরনের প্রোডাক্ট দিয়ে সাজান সেসব প্রোডাক্টের পজিটিভ দিক তুলে ধরে নিয়মিত লিখতে পারেন। এছাড়া যেকন হেল্পফুল টিপ্সের মাধ্যমে নিউ ভিজিটরকে কাস্টমারে পরিনত করতে পারেন। ওয়েব পেজের সাথেই ব্লগ রাখলে ভাল হয়। - ৬। সোশ্যাল এন্ড্রয়েড এ্যাপ্সঃ
স্কাইপ, মেসেঞ্জার, ভাইবার, ওয়াটসএপ প্রোডাক্টবেজ একাউন্ট করে তাতে টার্গেটেড কাস্টমারকে এড করে টেকনিকে ইনডাইরেক্ট মার্কেটিং করতে পারেন।
ইন্টারনেট মার্কেটিং সফল হতে হলে কিছু বিষয়ে আপনার ভাল ধারনা থাকতে হবে। - ৭। পোস্ট ভিডিও অনলাইনঃ
অনলাইন ভিডিও ব্যবসার বিপনণের অনেক সমস্যার সমাধান করে দিয়েছে। বিদ্যমান সাইটের প্রথম পেজ এ একটি ভিডিও থাকলে গুগল সার্চ ইঞ্চিন সেটিকে ৩০ মিনিটের মধ্যে হিসাবে নিয়ে আসে এবং ১দিনের মধ্যে সার্চের প্রথম পাতার উপরের দিকে স্থান করে দেয়। ভিডিওটি আপনি নিজেও বানাতে পারেন অথবা প্রফেশনাল কারো দ্বারা বানিয়ে নিতে পারেন। - ৮। গুগল ম্যাপের লোকাল লিস্টে কোম্পানীর নাম ওঠানোঃ
যখন আপনি স্মল বিজনেস মার্কেটিং-এ আসবেন তখন গুগল ম্যাপের লোকাল লিস্টে আপনার কোম্পানীর নাম ওঠানোর অনেক গুলো কারণ আছে। গ্রাহক আপনার কোম্পানীর স্থাপিত হওয়াটা দেখতে পাবে এবং এটি গুগল রাঙ্কিং এ ভাল অবস্থানে আসতে সাহায্য করবে। চূড়ান্তভাবে গ্রাহক কোম্পানীর রিভিউ দেখতে পাবে এবং সে তার মতামত প্রকাশ করতে পারবে আর এটি আপনাকে আপনার গ্রাহককে বুঝতে সাহায্য করবে। - ৯। গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ফোরাম খোঁজাঃ
বিভিন্ন ফোরামে নিজের পন্য বা সেবা সম্পর্কে লিখতে হবে। যেন কেউ খুঁজলে আপনার পন্য বা সেবার সন্ধান পায়। - ১০। আপনার তথ্যের সময়কাল ব্যবহার করুনঃ
প্রতিটি মানুষ তথ্য অনুসন্ধান করে। হাজার হাজার মানুষ ওয়েবসাইট ভিজিট করে তথ্যের জন্য। তথ্যের সময়কালটা অতিপ্রয়োজনীয় একটি বিষয়। - ১১। ফেসবুক স্পন্সর গল্প ব্যবহার করুনঃ
ফেসবুক পেজ র্যাঙ্ক পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ১০ ভাগ ফলোয়ার আপনার পোস্ট দেখতে পাবে, স্পন্সর গল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৃহৎ পাঠকবৃন্দ স্পন্সর স্টোরি দেখতে পাবে এবং আপনি যখন রেগুলার পোস্ট করবেন তখন পাঠকদের সম্পৃক্ততা আরো বাড়তে থাকবে। সরাসরি বিক্রয়ের এটা একটা ভাল কৌশল, মুখে মুখে বিজ্ঞাপনের জন্য পাওয়ারফুল টুল। ফেসবুক সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে মার্কেটিং এর জন্য এটি একটি ক্ষমতাসম্পন্ন মাধ্যম।