তিন সূত্রে উন্নতি

তিন সূত্রে উন্নতি

হাওয়ার্ড টুলম্যান। যুক্তরাষ্ট্রের স্নামধন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘শিকাগো-১৮৭১’এর নির্বাহী কর্মকর্তা। এছাড়া তিনি জিটুটিথ্রিভি (G2T3V) প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিষদের একজন সদস্য। তরুণ উদ্যেক্তাদের জন্য বিভিন্ন সময় তিনি পরামর্শমূলক নিবন্ধ লিখে থাকেন। হাওয়ার্ড টুলম্যানের বর্তমান নিবন্ধটি ভাষান্তর করেছেন মারুফ ইসলাম


যারা একেবারেই নতুন উদ্যেক্তা, কোনো একটা ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য আমার এই তিনটি পরামর্শ কাজে লাগবে বলে মনে করি। অবশ্যই কাজে লাগবে এমন দাবি আমি করছি না। বেশ কছিুদিন আগে ডেনিস চোকাজিয়ান নামে এক ভদ্রলোক এসেছিলেন আমার কাছে। তিনি নতুন একটি ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন। বিনীতভাবে আমার কাছে জানতে চাইলেন, ‘কীভাবে ব্যবসায় উন্নতি করতে পারি, একটু পরামর্শ দিতে পারেন?’ আমি তাকে এই তিনটি পরামর্শই দিয়েছিলাম।

প্রথম পরামর্শ :

প্রথমেই এমন একটি ব্যবসা খুঁজে বের করুন যে ব্যবসা থেকে টেকসই আয় করা সম্ভব। ভাবছেন, আয় তো আয়ই; টেকসই আয় আবার কী জিনিস! আপনার নতুন ব্যবসায় কে আপনাকে টাকা জোগান দেবে সেটা যদি আপনি প্রথমেই না জনেন তবে ব্যবসা করবেন কীভাবে? অতএব সেই বিনিয়োগকারীকে খুঁজে বের করুন। আর বিনিয়োগকারী যদি আপনি নিজেই হয়ে থাকেন তাহলে তো কথাই নেই। এবার আপনি খুঁজে বের করুন কোন পণ্য দিয়ে আপনি ব্যবসায় নামতে চাইছেন। ধরা যাক আপনি পোষা কুকুরের খাদ্য প্রস্তুত করতে চান। কিন্তু আপনার কোনো পোষা কুকুরই নেই। এমন হলে হবে না। যে ব্যাপারে ব্যবসায় নামতে চান তার আদ্যপান্ত জানতে হবে। এরপর আপনার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা দাঁড় করান। তারপর বাৎসরিক পরিকল্পনা করে ফেলুন। অর্থাৎ প্রথম বছর কতটুক আয় করতে চান, দ্বিতীয় বছর কী পরিমাণ আয় করতে চান-এভাবে পরিকল্পনা করুন। এবার পরিকল্পনা করতে বসুন কীভাবে ওই নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় করতে চান। এ জন্য আপনার ব্যাবসায়িক কৌশল কী হতে পারে। আপনি যদি এভাবে ছক বেঁধে পরিকল্পনা করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আয়ের মুখ দেখবেন। এবং এ ধরনের আয়ের নামই টেকসই আয়। একে টেকসই মুনাফাও বলতে পারেন।

হাওয়ার্ড টুলম্যান।
হাওয়ার্ড টুলম্যান।

দ্বিতীয় পরামর্শ :

অতিরিক্ত পুঁজি বিনিয়োগ করবেন না। অল্প অল্প করে পুঁজি বিনিয়োগ করুন। ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং লক্ষ্য পূরণ হলে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এভাবে একটু একটু করে ব্যবসায়িক সাফল্যের দিকে এগিয়ে যান। আর একটি বিষয় মনে রাখবেন, ব্যবসায় সাফল্যের প্রধান শর্ত হচ্ছে যোগাযোগ। ভোক্তা তথা গ্রাহকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি করুন। এখন তো যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক বেশি সহজ। প্রায় সবারই এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাউন্ট আছে। তাদের সঙ্গে এসব মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করুন। এছাড়া ফোন এবং ইমেইলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

তৃতীয় পরামর্শ :

আমার শেষ পরামর্শ হচ্ছে, আপনার মধ্যে নেতৃত্বগুণ এবং মূল্যবোধ গড়ে তুলুন। একজন আধুনিক বিনিয়োগকারীকে হতে হয় ঘোড়ার রাখালের মতো চৌকশ। রেসের ঘোড়াকে কীভাবে দাবড়িয়ে নিয়ে যেতে হয় সেই কৌশল তার জানা থাকা চাই। আপনি যদি ব্যবসায় দ্রুত এবং উত্তরোত্তর উন্নতি চান তবে আপনাকে অবশ্যই পর্যায়ক্রমে নেতৃত্বের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। আপনার কর্মীদের কাছে আপনি যদি একঘেয়ে এবং গতানুগতিক হয়ে যান তবে তাদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই কর্মীদের সামনে আপনাকে ক্রমশ নতুনভাবে উপস্থাপন করতে হবে। এজন্য চাই নতুন নতুন নেতৃত্বের গুণ অর্জন করা। বুঝতেই পারছেন, এজন্য ব্যাপক পড়াশোনা, চারপাশের খরবাখবর রাখা এবং নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আপনাকে মিশতে হবে। তাদের জীবনাচরণ সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার নামই নতুন নেতৃত্ব। এই গুন আপনাকে অর্জন করতে হবে।

আইএনসি ডটকমে প্রকাশিত হাওয়ার্ড টুলম্যানের নিবন্ধ অবলম্বনে। favicon5

Sharing is caring!

Leave a Comment