উদ্যোক্তা হতে কি চাকরি ছাড়তে হয় ?
- মো. সাইফ
নিজের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতে চাকরিটাই ছেড়ে দেন অনেকে। তবে প্রচুর সংখ্যক সফল ব্যবসায় উদ্যোক্তাই প্রথম দিকে চাকরি ঠিক রেখেই পাশাপাশি ব্যবসার কাজ করতেন। তারা চাকুরি তখনই একেবারে ছেড়ে দিতেন যখন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটা একটি শক্ত অবস্থানে পোঁছতে শুরু করে। এই সময়টুকু উদ্যোক্তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। কারণ চাকরিটা খারাপ লাগলেও একটা সময় পর্যন্ত ভবিষ্যতের কথা ভেবেই সেটা করে যেতে হয়।
চাকরির সময় থেকে পুর্ণ উদ্যোক্তা হওয়ার পথে নিজের উৎসাহ ধরে রাখাটা জরুরি। চাকরীরত অবস্থায় নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার সময় নিজেকে সঠিক পথে এগোতে যে কাজগুলো করা যেতে পারে।
১. ব্যবসায় শুরুর কারণ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা
- ‘কেন’ এই প্রশ্নটি নিজেকে করুন। হতে পারে আপনি আপনার বসকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন, আর্থিক স্বাধীনতা, সময়কে নিজের মতো করা ব্যবহার, সৃজনশীল কাজের সুযোগ কিংবা অন্য যে কোনো কিছু। যে কারণই থাকুক না কেন, জানতে হবে সেটা আপনাকে কীভাবে অনুপ্রাণিত করে এবং আপনাকে স্বপ্নের ব্যবসায় করার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
২. স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজেকে সমর্পন করুন
- কাজ আছে বলেই কাজ করা এবং কাজের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল থাকা এক জিনিস নয়। যখন নিজের স্বপ্নের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা এবং সেটা পূরণে কেউ প্রতিশ্রুতিশীল হয় সেখানে কোনো বাধাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না সাফল্যের পথে। তখন সমস্যাগুলোর সমাধান বের করা সহজ হয়ে যায়। ‘স্বপ্ন’ বলেই অল্প বিস্তর বাধায় নিজের কাজকে তখন আপনি থামিয়ে দিবেন বরং চালিয়ে যাবেন যত কষ্টই হোক!
৩. ব্যাক্তিগত লক্ষ ঠিক করা
- ব্যবসায়টিকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর আপনি কোথায় দেখতে চান তা লিখে রাখুন। সুনির্দিস্ট এবং বিস্তারিতভাবে লিখে রাখুন কী কাজে জড়িত হবেন, কারা আপনার ক্লায়েন্ট হবেন, কত টাকা মুনাফা আসবে ইত্যাদি। এবার প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় আপনার ঠিক করা লক্ষ যেখানে লিখে রেখেছেন তার উপর চোখ বুলান। কল্পনায় নিজেকে যে পর্যায়ে দেখতে চান সেখানে নিয়ে যান। এটা আপনাকে নেতিবাচকতা থেকে দূরে রাখবে পাশাপাশি ইতিবাচক আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সাহায্য করবে।
৪. আইডিয়াবাজ মানুষগুলোর সাথেই মিশুন
- স্বপ্নবিলাসী একদল মানুষ যারা নিজেকে জীবনে বড় পর্যায়ে দেখতে ইচ্ছুক তারা নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনাগুলো নিয়ে কথা বলে। ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে। একে অন্যকে সহযোগিতা করে। এমন মানুষগুলোর সাথেই বেশি থাকার চেষ্টা করুন। নিজেকে প্রাণবন্ত রাখার একটি ভালো কৌশল এটি।
৫. নিবিড় চিত্তে নতুন কিছু শিখুন
- ব্যবসায়ের সাথে প্রাসঙ্গিক এমন গবেষণাপত্র এবং অন্যান্য বইগুলো নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে দিন। ইন্টারনেট দুনিয়ায় খুজলেই হাজার রকমের ফর্দ মেলে। সফল ব্যবসায়ের আদ্যপান্ত জেনে নিতে পারেন গুগল থেকে। কোর্স করতে পারেন অথবা ভালো কোনো নির্দেশক থেকে টিপস নিন। নিজের দক্ষতার জায়গা যত মজবুত করবেন ব্যবসায় ক্ষেত্রে ততটাই লাভবান হবেন।
৬. বর্তমান চাকরির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখুন
- চাকরির ভালো জিনিসগুলোর উপর আলোকপাত করুন। বর্তমান অবস্থাকে যতটা ভালোভাবে মেনে নিতে শিখবেন ভবিষ্যতে সাফল্যের রাস্তা তত বেশিই উন্মোচিত হবে এমনকি সেটা আপনার ব্যবসায়েও কাজে লাগবে। খারাপ চিন্তা স্বপ্ন থেকে আপনাকে শুধু দূরেই ঠেলে দেবে এর বেশি কোনো উপকার করবে না।
৭. প্রতিদিনের কাজ ঠিক করুন
- প্রতিদিন ছোট পরিমাণ হলেও একটু একটু করে কাজ করুন ব্যবসায়ের জন্যে। কারণ এমন প্রতিকূলতার মুখেও কখনো কখনো আপনাকে পড়তে হবে যখন কাজ করার কোনো সুযোগই পাবেন না। তাই ব্যবসায় দাঁড় করাতে একটু করে কাজ এগিয়ে রাখুন, হোক সেটা পরিমাণে অল্প। কাজের ছোট খাটো উন্নতিই আপনাকে সামনের কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার সাহস জোগাবে।