এই ঈদে অনলাইন নারী উদ্যোক্তারা

এই ঈদে অনলাইন নারী উদ্যোক্তারা

  • উদ্যোক্তা ডেস্ক

একে তো রোজার মাস, তার উপরে প্রচণ্ড গরম, এই অবস্থায় বাইরে পা দেওয়া দায়! বাজারে ঠেলাঠেলি করে কেনাকাটায় বের হওয়া রীতিমতো যুদ্ধের পর্যায়ে পড়ে। এসব সমস্যার সমাধান, অনলাইন কেনাবেচা ! কিভাবে বাসায় বসে পেয়ে যাবেন পছন্দের পণ্য, তা কয়েকজন নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন।


মাকসুদা মনি শেফা

২০১৩-তে শুরু, অবসর সময়কে কাজে লাগাতে অনেকটা শখের বশে একাই জেবা ফ্যাশন নাম দিয়ে যাত্রা শুরু করি। প্রথমে কসমেটিক্স আর কাস্টমাইজ ড্রেস এসব নিয়েই কাজ করতাম। ২০১৬ থেকে বিদেশি কাপড় আনানো শুরু করি। অসাধারণ সাফল্য পেয়ে এটাকে পেশা হিসেবে নিয়েছি। দুই মাস যাবত্ আমার ব্যবসায় সহযোগী হিসেবে রুকসানা ববি কাজ করেন। এখন কাজটা আমার থেকে আমাদের হয়ে গেছে। দুইজন মিলে সামলাচ্ছি ফ্যাশান গোলস! ঈদের মার্কেট এ এত চাহিদা মানুষের এই প্রথম বুঝলাম! সবারই ইচ্ছা সবচেয়ে সুন্দর জিনিসটি তার হোক। কষ্ট করে আগাচ্ছি।

ফারহানা আলম

আরুশের মায়ের দোকান নামটা খুব অন্যরকম শোনায় না? গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর চাকরি করেছি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। স্বপ্ন দেখতাম নিজের পেশায় ভালো কিছু করার, তবে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মাতৃত্ব। পেশাকে বিদায় জানিয়ে বাধাকে শক্তি মেনে শুরু করি অনলাইন শপ। নিজের মাতৃত্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ডিজাইন করেছি হবু মায়ের জন্য ফ্যাশনেবল ও আরামদায়ক পোশাক। সাথে আছে শাড়ি, বাচ্চাদের পোশাক আরো অনেক কিছু। গরম আবহাওয়া আর ঈদকে সামনে রেখে প্রতিটি পোশাকের ডিজাইন করি। কাস্টমাইজড আর ক্রিয়েটিভ গিফট আইটেম নিয়ে রয়েছে আরেকটি ব্যবসা ‘ওয়ার্কশপ’। সময়ের সাথে স্বপ্ন বদলেছে, ভাঙেনি। নতুন করে স্বপ্ন দেখি সন্তানে সাথে নিজের অনলাইন শপকেও বড় হতে দেখবো।

রেজওয়ানা নাজনীন

আমার আর আমার স্বামীর নামের অংশ থেকেই নেওয়া নাম ‘রেজ জুয়েলারি’! অস্ট্রেলিয়াতে এমবিএ করার সময় উদ্যোক্তা বিষয়ক পড়ালেখার শুরু, ডিজাইন নিয়ে আগ্রহী হলাম যখন দেখলাম আমার কাজ সবার ভালো লাগছে। বাংলাদেশ এ আমি বিল গেটস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, খিলগাঁও এর ভাইস প্রিন্সিপাল। পাশাপাশি হুট করেই গহনা ডিজাইনকে সমসাময়িক পেশা হিসেবে নিলাম। ঈদ এবং তার পরবর্তী বিয়ের মৌসুম সামনে রেখে বেশ কিছু গয়নার কালেকশন রেডি করেছি, এখন মানুষ মিক্সড ট্রেন্ড ফলো করে। ইচ্ছা আছে দেশি উপকরণ দিয়ে নানা ডিজাইন নিয়ে সামনে শো রুম দেওয়ার। বিশেষ সব দিনে আমার তৈরি গহনা পরে মেয়েরা তাদের সৌন্দর্য্য যেন আরো বাড়িয়ে তুলে এই কামনা করি।

তানজীম আকতার

হোম কালেকশন আমার সন্তানের মত। ছোট থেকেই সবসময় নিজের জামা নিজেই ডিজাইন করে পরতাম, শখটাকে পেশা হিসেবে নিবো কখনো ভাবিনি। স্বামীর অনুপ্রেরণাতে এর যাত্রা শুরু করি ২০১১ সালে। পরিবারের সাপোর্টে আমি সাত বছরের যাত্রাপথ পাড়ি দিয়ে আজ এখানে। অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে আমাকে কিন্তু কখনো দমে যাইনি। নিজের ডিজাইন আর কারিগরের পরিশ্রম মিলিয়ে যখন কারচুপি, এম্ব্রয়ডারি করা জামাগুলো তৈরি হয়, ঈদ, বিয়ে বা নানান অনুষ্ঠানে সবাই যখন প্রশংসা করে, ভালো লাগে। নিজের একটা বুটিক হাউজ খোলার স্বপ্ন দেখছি।

তাহমিনা আলী 

রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হওয়ায় হিজাব পরাটা বাধ্যতামূলক ছিল। নরমালি আব্বুর আনা হিজাব দিয়েই শুরু করা। নিজের শখের বানানো হিজাবের পিন দিয়ে শুরু করলাম। চাহিদা দেখে লোকাল মার্কেট থেকে অল্প পুঁজিতে নিজের ব্যবসা শুরু করি। শুরুতে পরিবারের কোনো সাপোর্ট পাইনি বরং নানা রকম ডিসকারেজিং মন্তব্য শুনেছি। ক্লাসরুম এবং মোডেস্টি অ্যান্ড বিয়োন্ড নিয়ে এ যাত্রায় ২০১৬-এর শেষের দিকে আমি নিজের অফিস করি এবং আমার বাবার সহযোগিতায় মালেয়শিয়া থেকে হিজাব এনে সবচেয়ে কম দামে সেরা কোয়ালিটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজকে এই পর্যন্ত আসা। মুসলিম নারীদের সত্যিকার অর্থে পর্দায় এনে প্রপার মোডেস্টিফিকেশন গ্রো করানোই মূল উদ্দেশ্যই যেন ঈদের পোশাকের সাথে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেন।

মোহনা পিংকি

২০১২ সালে চাকরির পাশাপাশি ছোট একটা পেজ খুলি যেখানে মাত্র   কয়েকটা ডিজাইন ছিল। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন তো সবারই থাকে কিন্তু বাস্তব রূপ দেওয়া অনেকটাই কষ্টসাধ্য। আমার প্রথম অর্ডারটাই ছিল দেশের বাহির থেকে এবং আল্লাহ’র রহমতে আমিও সব ঠিক ঠাক মতো করতে পেরেছিলাম অনলাইন বিজনেস করতে গিয়ে অনেক মানুষের অনেক কথার সম্মুখীন হতে হয়েছে কিন্তু আমি কোনো দিনও হার মানি নাই। আমার মা, বাবা-স্বামী আমার সব থেকে বড় অনুপ্রেরণা। ঈদ সামনে, এখন ক্রেতাদের নানা চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছি, তবে আমি খুশি। ঈদ মৌসুমে চেষ্টা করছি পণ্যে নতুনত্ব রাখতে।

সূত্র: ইত্তেফাকfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment