‘কানাডায় খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রযেছে’

‘কানাডায় খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রযেছে’

  • ক্যাম্পাস ডেস্ক

বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী এখন কানাডায় পড়াশোনা করছেন। এসব শিক্ষার্থীদেরই সংগঠন বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। নানা কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে এ সংগঠনটি। এই অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. সামি উদ্দিন। কানাডায় বসবাসরত শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড, পড়ার সুযোগ, স্কলারশিপ ইত্যাদি বিষয়ে জানিয়েছেন বিভিন্ন তথ্য।


– কানাডায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ কেমন?
— কানাডার সাস্কাচুয়ান প্রদেশের ইউনিভার্সিটি অব সাস্কাচুয়ানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার ভালো সুযোগ রয়েছে। সাস্কাচুয়ান প্রদেশ মূলত কৃষি পণ্য উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কর্মকাণ্ডে তাই কৃষির প্রাধান্য বেশি। এর বাইরে গণস্বাস্থ্য, কম্পিউটার বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞানসহ আরও অনেক বিষয়ে শিক্ষা এবং গবেষণার সুযোগ রয়েছে। পোস্টগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে কমবেশি সবাই বিভিন্ন পরিমাণে স্কলারশিপ পেয়ে থাকে। ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচডি পর্যায়ে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন অনুষদে সব মিলিয়ে ৫০-এরও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হন। যারা কানাডায় উচ্চশিক্ষার জন্য আসতে চান তাদের মূলত কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত। প্রথমত, স্নাতক পর্যায়ে তুলনামূলক ভালো ফল। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই আবেদনকারীর জন্য নূ্যনতম সিজিপিএ বেঁধে দেওয়া থাকে। আমাদের দেশের সরকারি এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এখানে স্কলারশিপসহ পড়াশোনা করছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বলেই যোগ্যতা বা সুযোগ কম- এটি ভুল ধারণা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এখানে সমান সুযোগ পান। ভর্তির সব তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই দেয়া থাকে।

– উচ্চশিক্ষার জন্য কী ধরনের বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য রাখা উচিত?
— উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেকেরই একটা ভুল ধারণা থাকে যে, স্নাতক পর্যায়ে খুব ভালো ফলাফল না করলে উচ্চশিক্ষার সুযোগ কম। এ ক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত, স্নাতক পর্যায়ের ফলই উচ্চশিক্ষার একমাত্র নির্ণায়ক নয়। উত্তর আমেরিকার বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ই মূলত গবেষণামূলক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তাই শিক্ষার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ফলাফলের পাশাপাশি স্নাতক পর্যায়ে অল্প পরিসরে গবেষণার অভিজ্ঞতাকেও (গবেষণাপত্র) গুরুত্ব দেওয়া হয়।

– স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলুন?
— ইউনিভার্সিটি অব সাস্কাচুয়ানের বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ইঝঅটঝ) মূলত কাজ করে থাকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ এবং একতা বজায় রাখার লক্ষ্যে। বছরব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে এখানে চর্চা করা হয়। ২০১১ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করা এই অ্যাসোসিয়েশন সাস্কাটুনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা এবং অর্জন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আনার বিষয়টি নিয়েও কাজ করে থাকে।

– শিক্ষার্থীরা কী ধরনের সহযোগিতা পান অ্যাসোসিয়েশনের কাছে ?
— সহযোগিতার কথা বলা হলে প্রথমে আসবে সাস্কাচুয়ানে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রকম সহযোগিতার প্রসঙ্গ। বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা থেকে শুরু করে নতুন বাসস্থান ঠিক করা, নতুন পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে তার সহায়তা করে থাকে।

– অ্যাসোসিয়েশনের বছরব্যাপী কার্যক্রম কী কী?
— বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা এবং গবেষণা কাজের মাঝেও বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়ে থাকে। নিয়মিতই আয়োজন করা হয়ে থাকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নবীনবরণ এবং বিদায়ী সংবর্ধনার। এর পাশাপাশি ঘটা করে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয় প্রতি বছর। দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও দেশের ফাল্গুনের ছোঁয়া লাগে এ সাস্কাচুয়ানেও। আয়োজন করা হয় ফাল্গুনের আগমনী অনুষ্ঠান। এ ছাড়া বার্ষিক পিকনিক এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতা তো আছেই।

– পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম জবের সুবিধা আছে কি?
— শুরুতেই বলেছি, এখানে আসা শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সবাই কমবেশি বিভিন্ন পরিমাণে স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন। স্কলারশিপ দিয়েই একজন শিক্ষার্থীর সাস্কাচুয়ানে পড়াশোনা, থাকা-খাওয়া এবং আনুষঙ্গিক সব খরচ বহন করা সম্ভব। এ ছাড়া ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পসের বাইরে খণ্ডকালীন কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে। স্টুডেন্ট ভিসায় আসা সবাই সাপ্তাহিক ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন কাজের অনুমতি পেয়ে থাকেন।

সূত্র: সমকালfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment