কমিউনিটি ক্লিনিকে কতটা সন্তুষ্ট মানুষ?

কমিউনিটি ক্লিনিকে কতটা সন্তুষ্ট মানুষ?

  • আল-মোমি

গ্রাম পর্যায়ে সাস্থ্যসেবার অন্যতম সংস্থা হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক। কমিউনিটি ক্লিনিক গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের যাত্রা শুরু হলেও, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম আবার শুরু হয়। 

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারাদেশে এখন ১৩ হাজার ৪৪২টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। এসব ক্লিনিক থেকে মাসে গড়ে প্রায় ৯৫ লাখ মানুষ বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নেয়। কমিউনিটি ক্লিনিক হচ্ছে সরকারের সর্বনিম্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টিসেবা দেওয়া হয়। কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনা মূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। শুক্রবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহে ছয় দিন সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত  খোলা থাকে কমিউনিটি ক্লিনিক। 

দেশব্যাপী সরকারের এই উদ্যোগ কতটুকু কার্যকর, যাদের জন্য এই উদ্যোগ তারা সন্তুষ্ট কি না, তা নিয়ে একাধিক মূল্যায়ন হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ ২০১৩ সালে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। তাতে বলা হয়েছে, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ৮২ শতাংশ এলাকাবাসী সেবা নেয়। ক্লিনিকগুলো বাড়ির কাছাকাছি হওয়ায় এবং বিনা মূল্যে ওষুধ পাওয়া যায় বলে মানুষ এখানে সেবা নিতে আগ্রহী। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (নিপোর্ট) জরিপে দেখা যায়, বাড়ির পাশের ক্লিনিক থেকে বিনা মূল্যে ওষুধ ও পরামর্শ পেয়ে ৮০ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট। জাতীয় রোগ প্রতিরোধ ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) জরিপ বলছে, সেবা নিয়ে ৯৮ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট।

বেশির ভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থানীয় কোনো ব্যক্তির জমিতে গড়ে উঠেছে। এর পরিচালনায় স্থানীয় মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা থাকে। তাই কমিউনিটি ক্লিনিককে সাধারণ মানুষ নিজেদের প্রতিষ্ঠান বলে মনে করে। সাধারণ অসুখে আগে যারা চিকিৎসকের কাছে যেতে না, এখন তারা কমিউনিটি ক্লিনিকে আসে।

Sharing is caring!

Leave a Comment