ক্ষমা চাই, শান্তি চাই : অনুপ চেটিয়া

ক্ষমা চাই, শান্তি চাই : অনুপ চেটিয়া

নিউজ ডেস্ক : ভারতের আসাম রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার নেতা অনুপ চেটিয়া অতীত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, তিনি সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা করতে প্রস্তুত। আজ (১৫ ডিসেম্বর) সন্ত্রাসবাদের মামলায় আসামের একটি আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ: পিটিআই।

উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘আমাদের অতীত ভুলের জন্য আমি আসামের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইছি। আমাদের বিপ্লবের বিরোধিতা করার কারণে যাদের প্রাণ হারাতে হয়েছে, আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
শান্তি আলোচনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘অনেকের সন্দেহ, সরকারের সঙ্গে আমি শান্তি আলোচনায় বসব না। আবার কেউ কেউ ভাবছেন, আমি পালিয়ে যাব। তবে বলতে চাই, আমি শান্তি আলোচনার পক্ষে।’

গত ১০ নভেম্বর গভীর রাতে বাংলাদেশ অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে। তাঁর সঙ্গে তাঁর দুই সহযোগী লক্ষ্মী প্রসাদ গোস্বামী ও বাবুল শর্মাকেও হস্তান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘আমাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

অনুপ চেটিয়া ১৯৯৭ সাল থেকে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দী ছিলেন। ভারতের কাছে হস্তান্তরের আগে তিনি কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ২০০৩ সালের ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেন। এরপর তাঁর পক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা এ নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করে। ওই আবেদনে অনুপ চেটিয়ার সাজা শেষ হলে তাঁকে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানোর অনুমতি চাওয়া হয়।

১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) অন্যতম শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা ও একটি স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। আদালত তিনটি মামলায় তাঁকে যথাক্রমে তিন, চার ও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একসঙ্গে তিন মামলার সাজা কার্যকর হওয়ায় সাত বছর পরই ২০০৪ সালে তাঁর সাজার মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু তারপর থেকে তিনি কারাগারে আটক ছিলেন।

২০০৯ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া, চিত্রবন হাজারিকা, শশধর চৌধুরীসহ আটজন নেতাকে গ্রেপ্তার করে বিএসএফ। পরে এই নেতাদের সহযোগিতায় উলফার সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করে ভারত সরকার। অনুপ চেটিয়াকে এ আলোচনায় যুক্ত করতে উলফার পক্ষ থেকে সম্প্রতি দাবি জানানো হয়েছে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের স্বাধীনতার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় উলফা। এরপর দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সশস্ত্র তৎপরতা চালায় সংগঠনটি। অনুপ চেটিয়া উলফার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। তাঁর আসল নাম গোলাপ বড়ুয়া, আর সাংগঠনিক নাম অনুপ চেটিয়া।favicon

Sharing is caring!

Leave a Comment