তাইওয়ানে ভূমিকম্পে নিহত ৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলে আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভূমিকম্পে ১৬ তলা একটি ভবন ধসে পড়েছে। এতে ১০ দিনের শিশুসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছেছে। ভবনের ধ্বংসস্তূপে আটকে আছে আরও অনেকে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আরও কয়েকটি ভবনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬ দশমিক ৪। সংবাদ : এএফপি।
এএফপির খবরে জানানো হয়, উদ্ধারকর্মীরা বলছে, ভোরের দিকে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এতে তাইনান শহরের চারটি ভবন ধসে পড়ে। তবে ১৬ তলা ভবনে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা মই বেয়ে ভবনের জানালা দিয়ে আটকে পড়া ব্যক্তিদের টেনে বের করে আনছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভবনের ২৯ জন বাসিন্দাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার মুখপাত্র লিন কুয়ান চেং বলেন, নিহতদের মধ্যে ১০ মাসের শিশু, একজন নারী ও একজন পুরুষ রয়েছে। তারা তাদের মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। তাঁদের দেহে প্রাণ ছিল না। বাকি দুজনের ব্যাপারে জানা যায়নি। ৩০ জনের বেশি ধ্বংসস্তূপে আটকে আছে বলে তারা আশঙ্কা করছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ওই ভবনে ২০০ টির মতো ফ্ল্যাট ছিল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ভবনের ধ্বংসস্তূপে শতাধিক মানুষ আটকে আছে। তবে কতজন আটকা পড়ে আছে, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, তাইনানের অগ্নিনির্বাপক বিভাগের তথ্য কর্মকর্তা লি পো মিন বলেন, ওই ভবনে ২৪০ জনের মতো বাসিন্দা ছিলেন। ভবনটি ১৭ তলা ছিল।
ক্ষতিগ্রস্ত আরেকটি সাততলা ভবন থেকে ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাইনান শহরের ধসে যাওয়া ভবনগুলো থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। শতাধিক জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে উদ্ধারকর্মীরা।
রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, ধসে পড়া ভবনের উল্টো দিকে থাকতেন চ্যাং। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের সময় টিভি দেখছিলেন। হঠাৎ প্রচণ্ড ঝাঁকুনি হয় ও শব্দ পান। দরজা খুলে দেখেন, উল্টো দিকের ভবনটি ধসে পড়েছে। তিনি মই ও কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ধসে পড়া ভবনের জানালায় এক নারী কাঁদছিলেন। তিনি তাঁর স্বামী ও শিশুকে উদ্ধারের জন্য অনুরোধ জানান। কিন্তু গ্যাস বিস্ফোরণের ভয়ে চ্যাং ধসে যাওয়া ভবনের ভেতরে যাননি। ধসে যাওয়া ভবনের অনেকে উদ্ধারের জন্য ডাকাডাকি করছিলেন। মই ছোট হওয়ায় চ্যাং তাঁদের উদ্ধার করতে পারেননি।
তাইওয়ানের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া ব্যুরো বলছে, ভূমিকম্পের পর তাইনানে বেশ কয়েকটি পরাঘাত হয়।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট মা ইং জউ দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের বলেন, আটকে পড়াদের উদ্ধারে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। ভূমিকম্পের পর তাইনানে এক লাখ ৬৮ হাজার বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
তাইওয়ানে এর আগেও ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ২০১৩ সালে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটিতে চারজনের মৃত্যু হয় ও ব্যাপক ভূমিধস হয়। ১৯৯৯ সালে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটিতে দুই হাজার ৪০০ জন প্রাণ হারায়।