হয়ে উঠুন প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মী!

হয়ে উঠুন প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মী!

নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান আর পণ্যের সংখ্যা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রচার-প্রচারণাও। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে দাতা সংস্থা, এমনকি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতেও তৈরি হচ্ছে পাবলিক রিলেশন অফিসার পদ। কিন্তু সে তুলনায় নেই যোগ্য লোক। চ্যালেঞ্জিং এ পেশায় যোগ দিতে চাইলে প্রস্তুতি নিন এখন থেকেই। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে যাঁরা পড়েছেন, পাবলিক রিলেশন অফিসার পদে তাঁদের অগ্রাধিকার। তবে ইচ্ছা থাকলে অন্যরাও এ পেশায় ভালো করতে পারেন। প্রয়োজন ভালো যোগাযোগ দক্ষতা। দি প্রমিনেন্ট পাঠকের জন্য এ বিষয়ে আরও বিস্তারিতভাবে লিখেছেন রবিউল কমল


থাকতে হবে যেসব যোগ্যতা: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে ভালো যোগাযোগ দক্ষতা যেমন জরুরি, তেমনি চাপ সামলে ওঠারও মানসিকতা থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে কল্লোল গ্রুপ অব কম্পানিজের হেড অব এইচ আর অ্যান্ড অ্যাডমিন রিপন কিবরিয়া বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে আমরা প্রার্থীর যোগাযোগ দক্ষতা যাচাই করি। যেমন প্রার্থী তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংগঠনগুলোর সদস্য কি না, সেটি হতে পারে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। এ ছাড়াও প্রেজেন্টেবল কি না, স্মার্ট কি না ইত্যাদি। যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে প্রার্থী নিজেকে কতটা মানিয়ে নিতে পারেন, সেটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

কাজটা কী: একজন পাবলিক রিলেশন অফিসারের কাজের পরিধি বেশ বড়। কোম্পানির প্রতিনিধি সে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ, টিভি বা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া, প্রেস রিলিজ তৈরি করা বা মিটিং আয়োজনের মতো কাজও তাঁকে করতে হয়। মোটকথা কোম্পানির ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোই পিআর অফিসারের কাজ।

ভালো যোগাযোগ দক্ষতা: এ বিভাগে কাজ করতে ভালো যোগাযোগ দক্ষতার বিকল্প নেই। যেকোনো পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ভালো বলতে পারা দরকার। প্রচন্ড কাজের চাপে থেকেও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর ক্ষমতা থাকতে হবে। যোগাযোগ দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের পাবলিক রিলেশন অফিসার মেসবাহ আহমেদ বলেন, আপনি পিআর-এ কাজ করবেন আর ভালো যোগাযোগ দক্ষতা থাকবে না তা হয় না। যোগাযোগ দক্ষতা একদিনে বাড়ানোর বিষয় নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় যাঁরা ডিপার্টমেন্টের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনে যুক্ত থাকেন, সিনিয়রদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাঁদের যোগাযোগ দক্ষতা তৈরি হয়ে যায়। সাধারণত সব সময় পিআরও-এর কাজের চাপ থাকে না। কোনো পণ্যের মোড়ক উন্মোচন বা ইভেন্ট হলে কাজের চাপ বেড়ে যায়। সে সময় হুটহাট অনেক ছোট ছোট ঝামেলা তৈরি হয়। সেগুলো সামাল দেওয়ার জন্য সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আর নেটওয়ার্কিংই কাজে দেয়।

চাই ৩৬০ ডিগ্রি প্রস্তুতি: পিআর অফিসারের ব্যস্ততা যেন ২৪ ঘণ্টাই। তবে শুধু কাজ দিয়েই নয়, যোগাযোগ কিংবা আলোচনা সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে বাংলালিংকের সিনিয়র ম্যানেজার, পিআর অ্যান্ড কমিউনিকেশন, শেহজাদ সারোয়ার হোসাইন বলেন, পিআর অফিসারকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। এ জন্য মোবাইল ফোনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এটি কখনোই অচল রাখা যাবে না। প্রস্তুতি থাকতে হবে কাজের ব্যাপারে যেমন, জানাশোনায়ও থাকতে হবে তেমন। অর্থাৎ পিআর অফিসারকে তাঁর কোম্পানির সব কিছু জানা থাকতে হবে।

কাজের ক্ষেত্র: কোম্পানিতে পাবলিক রিলেশন বিভাগটি আমাদের দেশে তুলনামূলক নতুন। কোম্পানিগুলো এখন মাঝেমধ্যেই এ বিভাগটির প্রয়োজনীয়তা টের পাচ্ছে। তাই নতুন-পুরনো প্রায় সব কোম্পানিতেই তৈরি হচ্ছে পাবলিক রিলেশন নামে নতুন বিভাগ; কিন্তু সে তুলনায় তৈরি হচ্ছে না অভিজ্ঞ প্রার্থী। এ সম্পর্কে বাটা শু কোম্পানি বাংলাদেশের অ্যাডভার্টাইজিং ম্যানেজার রাজিব জাহান ফেরদৌস বলেন, অ্যাডভার্টাইজিং এবং কমিউনিকেশনের মধ্যেই বিভাগটি পড়ে। তবে কাজের ক্ষেত্র এবং আওতা বেড়ে যাওয়ায় অনেক কোম্পানিই পিআর ডিপার্টমেন্ট নামে আলাদা বিভাগ খুলছে। আর পিআরওর কাজ করে এমন অনেক এজেন্সিও গড়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে পিআর ডিপার্টমেন্ট দিন দিন বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে দক্ষ লোকের চাহিদাও।

তবে তা যাই হোক বিভাগটি যেহেতু নতুন, তাই কাজের লোকেরও চাহিদা অনেক। সময় নষ্ট না করে কাজে নেমে পড়ুন। এ জন্য বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য হোন। সবচেয়ে কাজের হবে কোনো পত্রিকায় খন্ডকালীন প্রদায়ক কিংবা ইন্টার্নির সুযোগ নিলে। favicon

Sharing is caring!

Leave a Comment