হাকিমের পাশে দাঁড়িয়েছে অনেকেই : স্বপ্ন এবার সচিব হবার
সজীব হোসাইন, রংপুর : ঢাবিতে ভর্তি হতে না পারা অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল হাকিমের পাশে দাঁড়িয়েছে অনেকেই। হাকিম ইতোমধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এছাড়া সকলের সাহায্য সহযোগিতায় পরিশোধ করতে পেরেছে ভর্তি জন্য চড়াসুদে নেওয়া ঋণের টাকা।
আব্দুল হাকিম ভর্তি যুদ্ধে জয়ী হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্য ও নাট্যকলা বিভাগে ভর্তির সুযোগও হয়েছিল। কিন্তু ওই সময় অর্থাভাবে পারেননি স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে। পরবর্তীতে এই মেধাবী শিক্ষার্থীর পারিবারিক সিদ্ধান্তে সুদের টাকায় এবং ধার করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সিদ্ধান্ত হয়।
হাকিমের পারিবারিক অসচ্ছলতা এবং ঢাবিতে ভর্তি হতে না পারা নিয়ে “টাকার অভাবে ঢাবি অধরা, ধার করে ভর্তি বেরোবিতে” শিরনামে সংবাদটি প্রকাশ করে দি প্রমিনেন্ট। সংবাদটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
চটজলদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিত্তবানদের নজরে আসে খবরটি।
পরবর্তীতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়স্থ নীলফামারী জেলা ছাত্র সমিতির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। নীলফামারী জেলা ছাত্র সমিতির সভাপতি দীপঙ্কর রায় দি প্রমিনেন্টকে বলেন, নীলফামারী জেলা ছাত্র সমিতির উপদেষ্টা ও গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমানের মাধ্যমে হাকিমের ভর্তি ব্যাপারটি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আবাসিক হলসমূহ থেকে আর্থিক সাহায্য উঠানোর সিদ্ধান্ত নেই। পরবর্তীতে হাকিমের ঋণের টাকা পরিশোধসহ নীলফামারী জেলার ডোমার থানার মাহফুজ আলমকে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে এবং ডিমলা থানার নুর জাহানকে উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগে ভর্তিতে আর্থিক সহায়তা করতে পেরেছি।
অপরদিকে হাকিমের আবাসিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সরদার পাড়ার ছাত্রাবাস মালিক বাদল খন্দকার। তিনি জানান, হাকিম যতদিন ইচ্ছা আমার শিকদার ছাত্রাবাসে ফ্রি আবাসিক সুবিধা পাবে। সেই সাথে হাকিমের খাবারের সম্পূর্ণ ব্যয় বহনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী আল আমীন। আল আমীন বলেন, হাকিম চাইলে ওর খাবারের সম্পূর্ণ ব্যয় আমি বহন করব।
এ ব্যাপারে কথা বললে হাকিম দি প্রমিনেন্টকে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সকলের সহযোগিতায় আজ তা সম্ভব হয়েছে। মার দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমস্যা ছিল। মা আমাকে নিয়ে অনেক চিন্তা করত, মা এখন চিন্তা মুক্ত হলেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি জানতে চাইলে মৃদু হেঁসে হাকিম জানান, সচিব হতে চাই। না হলে অবশ্যই হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট) হব।