বেনাপোলে ‘কৃষক মাঠ স্কুল’

বেনাপোলে ‘কৃষক মাঠ স্কুল’

  • নিউজ ডেস্ক

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শস্য-শ্যামল  গ্রামবাংলার  খেটে  খাওয়া নারীদের আধুনিক প্রযুক্তির ধাপে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করছে ‘কৃষক মাঠ স্কুল’, চলছে মাঠেই শিক্ষা। যশোরের বেনাপোল অঞ্চলের কৃষাণীরা সন্তানদের স্কুলে পাঠানর মতো  নিজেরাও  স্কুলে যাচ্ছেন। মাঠে গাছের ছায়ায় তাদের স্কুল, শিখতে আসা সকল বয়সের নারীরা তাদের শেখার সাথী।

তবে তাদেরকে সন্তানদের মত পাঠ্যবই পড়তে হয় না। কৃষিতে জ্ঞান অর্জন করতে যাচ্ছেন কৃষাণীরা ‘কৃষক মাঠ স্কুলে’। ফসলে সারের পরিমাণ, কীটনাশকের মাত্রা, কোন মৌসুমে কি ফসল চাষ করলে লাভ বেশি হবে এ সব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন  করা ছাড়াও বিষ ছাড়া পোকা মারার কলাকৌশল, বাম্বু বোষ্টারের মাধ্যমে পোকা দমন এবং রঙিন  ফুল চাষের মাধ্যমে পোকা দমন, আলোকপাত ব্যবহার এবং আইলে সবজি চাষ করে কিভাবে নিজের সংসারের অর্থনৈতিক ভিত মজবুত করা যায় সে বিষয়ে  প্রাথমিক  ধারণা নিচ্ছেন তারা। বেনাপোলসহ শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ৬৮টি ‘কৃষক মাঠ স্কুল’ থেকে ১৩ হাজার কৃষাণী প্রশিক্ষণ নিয়ে আধুনিক প্রযুক্তিতে চাষাবাদ করছেন এবং ৪ হাজার ৩৮০ জন কৃষাণী  এখন প্রশিক্ষণ নিতে ‘কৃষক মাঠ স্কুলে’ ক্লাস করছেন। প্রশিক্ষিত ৪০৪ জন কৃষাণী দিয়েই এ স্কুলগুলো পরিচালিত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা এগুলো দেখভাল করেন।

কায়বা ইউনিয়নের ‘কৃষক মাঠ স্কুল’ কৃষাণী সালেহা খাতুন এ স্কুলের শিক্ষক। তিনি জানান, পটলে পোকা দমনের ফাঁদ পাতা প্রশিক্ষণ দিয়েছি এ স্কুলে আসা কৃষাণীদের। এ কৌশল শেখানর পরে আবার নতুন কৌশল শেখান হবে। বাগআঁচড়া ইউনিয়নের ‘কৃষক মাঠ স্কুলে’র শিক্ষক কৃষাণী আরিনা খাতুন জানান, আমচাষের উপর সুসম সার ব্যবহারের প্রশিক্ষণ চলছে এ স্কুলে। ২৫ জন কৃষাণী এ স্কুলে নিয়মিত ক্লাস করছেন। শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি  গ্রামে ‘কৃষক মাঠ স্কুলে’র শিক্ষক কৃষাণী নূরজাহান বেগম জানান, তার স্কুলে চলছে গুটি ইউরিয়া সার ব্যবহার পদ্ধতি। কৃষাণীরা বেলা ৩টার পর এখানে ক্লাস করতে আসেন। গোগা ইউনিয়নের পাঁচ ভুলাট গ্রামের ‘কৃষক মাঠ স্কুলে’র  শিক্ষক কৃষাণী জরিনা পারভীন জানান, তার স্কুলে এখন ক্লাস চলছে বসতবাড়িতে সবজি চাষের নানা পদ্ধতি প্রশিক্ষণ। এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ‘কৃষক মাঠ স্কুলে’র শিক্ষক কৃষাণী লাকী খাতুন জানালেন, তার স্কুলে ক্লাস চলছে লাউ এবং বেগুন চাষের আধুনিক পদ্ধতির উপর।

‘কৃষক মাঠ স্কুলে’র শিক্ষক ও দলনেতা এই কৃষাণীরা জানান, সপ্তাহে তাদের ২ দিন ক্লাস নেওয়া হয়। উপস্থিতির হার শতভাগ, এলাকার গৃহবধূ, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষিত মেয়েরাও আসেন এখানে তারা বাড়ির আঙিনায়  পরিকল্পিত শাক-সবিজ, ফলমূল চাষ ও ফুলের বাগান ও চাষ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার জানান, কৃষিক্ষেত্রে ‘কৃষক মাঠ স্কুল’ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

সূত্র: ইত্তেফাকfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment