পান পাতায় জীবিকা

পান পাতায় জীবিকা

  • নিউজ ডেস্ক

ভারতের ত্রিপুরা ও মেঘালয়সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে বসতি গড়ে খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন। স্বাধীনতা-পরবর্তী জাফলং এলাকার প্রতাপপুরপুঞ্জি, নামাপুঞ্জি, নকশিয়াপুঞ্জি, পুরনো সংগ্রামপুঞ্জি, নতুন সংগ্রামপুঞ্জি ও বল্লাপুঞ্জিতে প্রায় ৭-৮শ’ খাসিয়া পরিবারের বসবাস ছিল। সবচেয়ে বেশি পরিবার বাস করত সংগ্রাম ও বল্লাপুঞ্জিতে।

১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যার তোড়ে সংগ্রামপুঞ্জিসহ কয়েকটি পুঞ্জির প্রায় ৪০ ভাগ বাড়িঘর ভেসে যায়। বর্তমানে এই ৬টি পুঞ্জিতে খাসিয়া সম্প্রদায়ের ৩ শতাধিক পরিবার বসবাস করছে। সম্প্রদায়ের লোকদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস হচ্ছে জুম চাষ। একসময় জুমে কমলা ও পান-সুপারি চাষ করে তারা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে এই জুমে শুধু পান আর সুপারি চাষ করা হয়। তাও যেন প্রাকৃতিক বিভিন্ন কারণে প্রায় বিলীন হতে চলেছে। পান বাঁধাইয়ের কাজ করেন এমন নারী শ্রমিক রিনিউ, অনিতা, প্রেমা, রিতু, পপির সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, আগে অনেক পানের জুম ছিল। পানের ফলনও হতো অনেক বেশি। তখন প্রতিদিন পান বাঁধাই করে ভালোই আয়-রোজগার হতো। বর্তমানে জুম কেটে সাবাড় করাসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে আগের চেয়ে পানের উৎপাদন অনেকটা কমে গেছে। তারা এখন পান বাঁধাই করে দেড়-দুইশ’ টাকার বেশি রোজগার করতে পারেন না। তাদের এখন অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

নকশিয়াপুঞ্জির জুমচাষি বানিয়াল লামিন জানান, তাদের সম্প্রদায়ের লোকজন জুম চাষের (পান-সুপারি) ওপর নির্ভরশীল। তবে পান চাষেও অনেক সমস্যা রয়েছে। গাছের পরিচর্যার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র না পাওয়ায় এর ফলন অনেকটাই কমে গেছে। কখনও অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, শিলা ও বন্যার কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। সে ক্ষেত্রে সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহযোগিতা কখনোই পান না ক্ষতিগ্রস্ত জুমচাষিরা।

সূত্র: সমকালfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment