নিজের আবিষ্কারে নিজের মৃত্যু !
ফিচার ডেস্ক : আপনি খুব যত্ন সহকারে একটা সন্তানকে মানুষ করলেন, আর শেষে সে-ই আপনাকে মেরে ফেলল, কেমন লাগবে আপনার? এই আবিষ্কারকদের ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটেছে। তারা যা আবিষ্কার করেছিলেন তা শেষ পর্যন্ত তাদের মৃত্যুর কারণ হয়েছে।
উইলিয়াম বুলক ঘূর্ণায়মান প্রিন্টিং প্রেসের আবিষ্কারক। তিনি ধারণাও করতে পারেননি এটার কারণেই তিনি মারা যাবেন। এটি আবিষ্কারের কয়েক বছর পরে একবার ফিলাডেলফিয়াতে বুলক এই যন্ত্রটি ইন্সটল করছিলেন, তখন হঠাৎ তার পা এই যন্ত্রের নিচে চলে যায় এবং কাটা পড়ে। পরে সেই ক্ষত থেকে গ্যাংগ্রিন হয় এবং কিছুদিন পরেই তিনি মারা যান।
২. হোরেস লসন হানলে (১৮২৩–১৮৬৩)
হরেস লসন হানলে ছিলেন একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি সর্বপ্রথম কমব্যাট সাবমেরিন আবিষ্কার করেন, সেটির নাম সিএসএস হানলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো ১৮৬৩ সালে একবার সাবমেরিনটির যান্ত্রিক সমস্যা হয়, এটি আর ভেসে উঠতে পারছিল না, তখন তিনি এটি পরীক্ষা করতে যান এবং সাতজন ক্রু মেম্বারসহ ডুবে মরেন।
৩. মাইকেল রবার্ট ডাকরে (১৯৫৬–২০০৯)
ফ্লাইং ট্যাক্সি (AVCN jetpod) এর আবিষ্কারক মাইকেল রবার্ট ডাকরে। তার এই যানটি দুর্ঘটনাবশত ক্র্যাশ করলে তিনি মারা যান। এই যানটি কোনো শহরের মধ্যে অল্প দূরত্বে উড়ে গিয়ে ল্যান্ড করতে পারত। ২০০৯ সালে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে এবং ডাকরে মারা যান।
৪. আলেক্সান্ডার বোগদানভ (১৮৭৩–১৯২৮)
ব্লাড ট্রান্সফিউশনের কারণে আজকের পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণে বেঁচে যায়। কিন্তু এর আবিষ্কারক মারা গেছেন এই ব্লাড ট্রান্সফিউশনের কারণেই। রাশিয়ান ফিজিশিয়ান ও দার্শনিক বোগদানভ চিরযৌবন পাওয়ার আশায় ব্লাড ট্রান্সফিউশোন নিয়ে প্রথম পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন বয়স বাড়ার ব্যাপারটিকে উলটে দিতে। কিন্তু তার এই পরীক্ষা সফল হয় নি। এই পরীক্ষার জন্য তিনি একজন ছাত্রের রক্ত তার শরীরে গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু সেই ছাত্রটির যক্ষা ও ম্যালেরিয়া ছিল।
পৃথিবীর মানুষকে যে ব্যক্তি গ্লাইডিং বা উড়তে শিখিয়েছিলেন তিনি গ্লাইডিং করতে গিয়েই মারা যান। অটো লিলিয়েনথাল ‘দ্য গ্লাইডার কিং’ নামেও পরিচিত। তিনি অনেক ধরনের সফল গ্লাইডার আবিষ্কার করেছিলেন। ১৮৯৬ সালে তার একটি গ্লাইডারে ত্রুটি থাকায় তিনি ৫০ ফুট উপর থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান।
৬. থমাস মিডগ্লে জুনিয়র (১৮৮৯– ১৯৪৪)
থমাস মিডগ্লে জুনিয়র ছিলেন একজন মার্কিন প্রকৌশলী। পোলিও’র কারণে ৫১ বছর বয়সে পঙ্গু হয়ে যান। নিজের জন্য এবং তার মতো ব্যাক্তিদের জন্য তিনি দড়ি ও পুলি ব্যবহার করে একটি পদ্ধতি দাঁড়া করান, যার মাধ্যমে তার মতো পঙ্গু মানুষরা সহজেই বিছানা থেকে উঠতে পারবে। কিন্তু আবিষ্কারের কয়েক বছর পরে দুর্ঘটনাবশত এই যন্ত্রের দড়িতে প্যাঁচ লেগে তিনি মারা যান।