ভোট বাক্স পূর্ণ হওয়া মানেই সুষ্ঠু নির্বাচন নয়
পৌর নির্বাচন
ড. বদরুল হাসান কচি : একযোগে দেশের প্রায় সকল পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন তারিখ চূড়ান্ত করেছেন। প্রার্থীরাও প্রস্তুত। দেশব্যাপী উৎসবের আমেজ। কিন্তু প্রার্থী কিংবা ভোটাররা কেউই এই আমেজে পুরোপুরি ফুরফুরে মেজাজে নেই। সবার মনে একটা শংকা, যার ভোট সে দিতে পারবে তো? এই শংকার যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে। স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশান নির্বাচনে ভোট গ্রহণ পরিস্থিতি মোটেই সুখকর ছিল না সকল ভোটার এবং প্রার্থীর কাছে। ঐ নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে কমিশন যতই উঁচু গলায় কথা বলেন না কেন ভোটারদের আস্থা ফেরাতে পারেন নি।
ভোট আমাদের দেশে একটি উৎসব। বিশ্বের আর কোন দেশে এমন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয় কিনা সন্দেহ। তাই ভোট দিতে পারা না পারা নিয়ে সবার মাঝে একটি উত্তেজনা কাজ করে। এছাড়া গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধীন মত প্রকাশের একটি উত্তম মাধ্যম হচ্ছে ভোটারাধিকার প্রয়োগ করা।
এবার পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে সর্বত্র আলোচনায় সরব। অবশ্য তার কিছু উল্লেখযোগ্য কারণও রয়েছে। এবারই প্রথম কোন স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হতে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে এখানে জয়-পরাজয়ে দলের ইমেজের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দলগুলো বেশ সতর্কতার সাথে প্রার্থী নির্বাচন করেছে। আরও একটি কারণে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে সবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি – সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিনা! কারণ ভোট বাক্স পূর্ণ হওয়া মানেই তো সুষ্ঠু নির্বাচন নয়। নিকট অতীতে হয়ে যাওয়া নির্বাচনে যদিও সব ভোটার ভোট দেয়ার সুযোগ পায়নি, তারপরও কিন্তু ভোট বাক্স দিন শেষে ভরাট ছিল!
ভোট আমাদের দেশে একটি উৎসব। বিশ্বের আর কোন দেশে এমন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয় কিনা সন্দেহ। তাই ভোট দিতে পারা না পারা নিয়ে সবার মাঝে একটি উত্তেজনা কাজ করে। এছাড়া গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধীন মত প্রকাশের একটি উত্তম মাধ্যম হচ্ছে ভোটারাধিকার প্রয়োগ করা। কোন ভোটার ভোট দিতে না পারা মানে তার মত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি হওয়া। এটা স্পষ্টই মানবাধিকার লংগন। আর নাগরিকের অধিকার সুরক্ষার দায় রাষ্ট্রের উপরই বর্তায়।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে স্থানীয় সরকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। এখানেই মূলত জনগণের স্থানীয় সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে থাকে। জনগণ তার নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে সরাসরি সরকারের মুখোমুখি হবার সুযোগ পায়। তাই জনগণ এখানে তাদের যোগ্য প্রতিনিধিকে নির্বাচন করে থাকে। একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় সবাই সবার হাঁড়ির খবর জানেন। কোন প্রার্থী আসলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে পারবে, আর কোন প্রার্থী নিজের বাড়ির উন্নয়নেই ব্যস্ত থাকবে; জনগণ ঠিকই তা বুঝতে পারে। কিন্তু জনগণের সত্যিকারের প্রার্থী তখনই নির্বাচিত হতে পারে যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। তাই আসন্ন নির্বাচনে জনগণ যেন তার প্রতিনিধি নির্বাচন সুযোগ পায় সেই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সজাগ থাকবেন বলে আশা রাখি।

 
	                
	                	
	            
 
	                       			                       	 
	                       			                       	 
	                       			                       	 
	                       			                       	