‘বিশ্ব প্রবীণ দিবস’ উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রা ও আলোচনা
- সংবাদ ডেস্ক
‘বিশ্ব প্রবীণ দিবস’ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রবীণ নাগরিক কল্যাণ সোসাইটির উদ্যোগে এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পৃষ্ঠপোষকতায় একটি শোভাযাত্রা আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়ক থেকে সোবহানবাগে অবস্থিত ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখ সড়ক পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করেছে। শোভাযাত্রা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শোভাযাত্রা উদ্বোধন ও আলোচনা অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি সদস্যদের বিল এবং সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ঢাকা-১০ আসনের সাংসদ ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, এমপি। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএস এর সাবেক উর্দ্ধতন গবেষণা ফেলো ড. শরীফা বেগম। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ইউসুফ মাহাবুবুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রবীণ নাগরিক কল্যাণ সোসাইটির চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমততাজ ঊদ্দীন আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, এমপি বলেন, প্রবীণদের রয়েছে অভিজ্ঞতার ভান্ডার এবং বিপুল কর্মদক্ষতা। তাদের অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এসময় তিনি প্রবীণদের জন্য সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস আরো বলেন, সরকার প্রবীণদের জন্য বয়স্ক ভাতা চালু করেছে এবং প্রতি বছরই বয়স্ক ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া সরকারী চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়স বাড়ানোসহ প্রবীণদের সামাজিক মর্যাদা বাড়ানোর জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুষ্কাল বেড়ে ৭২ বছরে পৌঁছেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস আরো বলেন, প্রবীণদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বাড়াতে হবে এবং প্রবীণদের সুরক্ষায় সরকারের যেসব আইন রয়েছে সেসব আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এসময় তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং প্রবীণ নাগরিক কল্যাণ সোসাইটিকে ধন্যবাদ জানান এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য।
অনুষ্ঠানে ড. শরীফা বেগম ‘প্রবীণ জনগোষ্ঠি এবং আমাদের করনীয়’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি প্রবীণদের জীবন মান উন্নয়নে ১২টি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে উন্নত এবং উন্নয়নশীল প্রায় সব দেশেই প্রবীন জনসংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন বা ৭০ কোটি প্রবীন ব্যাক্তি রয়েছেন এবং ২০৫০ সালের দিকে ষাটোর্ধ প্রবীনের সংখ্যা দুই বিলিয়ন বা ২০০ কোটিতে পৌছাতে পারে যা হবে তখনকার মোট জনসংখ্যার ৪ ভাগের ১ ভাগ।
তিনি আরো বলেন, আগামীতে প্রবীনদেরকে নিয়ে আমরা মোটামুটি তিনটি বড় রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবো। ১. কর্মহীন প্রবীনদের ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করা; ২. তাঁদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা এবং ৩. র্বাধক্য, শারীরিক পরিবর্তন এবং রোগব্যধির কারনে প্রবীনের একাংশ দৈনন্দিন জীবন যাপনে আংশিক বা সম্পূর্ন অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন। চিহ্নিত সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি এখন্ পর্যন্ত অপ্রতুল বলে তিনি মনে করেন। প্রবীনরা আমাদের পরিবার এবং সমাজের অংশ। তাই প্রবীণ কল্যাণ নিশ্চিত করার জোড় দাবি জানান তিনি।