নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ব্রেইনপ্রিন্ট
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : বর্তমান এই আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অনলাইন নিরাপত্তা খুবই আলোচিত বিষয়। নিজের ডিজিটাল ডিভাইসে এবং অনলাইন অ্যাকাউন্টে অন্যের অবৈধ প্রবেশাধিকার ঠেকাতে এখন সচরাচর সবাই সাধারণত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে।
কিন্তু পাসওয়ার্ড অনেক সময় মনে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়, এছাড়াও আধুনিক হ্যাকাররা সহজেই পাসওয়ার্ড ভাঙতে পারে এবং পাসওয়ার্ড এখন সহজে অন্যান্য মানুষ অনুমান করে অপেক্ষাকৃত সহজ উপায়ে আপনার সংবেদনশীল তথ্য পেয়ে যেতে পারে। ব্যাপারটা অনেকটা কারাগারের গেট পাস পেয়ে একজন বন্দী বাইরে চলে যাওয়ার মত কারণ তিনি কারাগারের নিরাপত্তা কোডটা জেনে ফেলেছেন।
এজন্যই প্রযুক্তি সংস্থাগুলো এবং বিজ্ঞানীরা বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে পাসওয়ার্ডের একটি বিকল্প সমাধান বের করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। এক্ষেত্রে সম্ভবত সেরা উদাহরণ হতে পারে যে ফোনে আপনি আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ব্যবহার করছেন সেটি। এক্ষেত্রে আঙ্গুলের ছাপ স্মরণ রাখতে আপনাকে কোনো প্রচেষ্টা করতে হবে না। পাশাপাশি এটি হস্তান্তর করা কঠিন কারণ মালিক ছাড়া অন্য কেউ খুলতে পারবে না। তবে এবার ব্রিংহামটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, তারা পাসওয়ার্ড একটি উপযুক্ত প্রতিস্থাপন খুঁজে পেয়েছে। ব্রেইনপ্রিন্ট নামের একটি মস্তিষ্ক স্ক্যান সিস্টেম নিয়ে তারা কাজ করেছ। ব্রেইনপ্রিন্ট নামের এই মস্তিষ্ক স্ক্যান সিস্টেমে একটি ইলেক্ট্রোএনছেফালোগ্রাম (ইইজি) টুপি ব্যবহার করা হয় এবং তারপর প্রতি সেকেন্ডে ব্যবহারকারী ৫০০ ইমেজ ধারণ করা হয়। এই ছবি মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া যুক্ত সফ্টওয়্যার দ্বারা ব্যবহারকারীকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।
এই প্রকল্পের গবেষক সারাহ লাজলো বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় যখন আপনি কারো শত শত ছবি তুলবেন তখন তাদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ দ্বারা আপনি সহজেই চিহ্নিত করতে পারবেন যে কার ব্রেইনপ্রিন্ট দ্বারা এ ডিভাইসটি লক করা হয়েছিল। কারণ প্রতিটি ব্যক্তিই পৃথক এবং প্রত্যেক সময়ে তাদের মস্তিষ্কে ভিন্ন ভিন্ন কার্যকলাপ সংঘটিত হয়।’
ব্রেইনপ্রিন্ট এর প্রথম পরীক্ষার ফলাফল গত গ্রীষ্মে নিউরোকম্পিউটিং জার্নালে প্রকাশিত হয়। কিন্তু সিস্টেমটি নিয়ে বর্তমানে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশা ব্রেইনস্ক্যান একসময় পাসওয়ার্ডের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।