সূর্যের চেয়ে বেশি তাপমাত্রার চুল্লি
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : চীনের একদল বিজ্ঞানী পরমাণু চুল্লিতে সূর্যের চেয়ে তিন গুণ বেশি তাপমাত্রা তৈরি করেছেন। এতে ‘মাঝারি আকারের পারমাণবিক বিস্ফোরণের প্রায় সমান উত্তাপ’ হয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, অতি উচ্চ তাপমাত্রায় পরমাণুগুলো সংযুক্ত হলে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়। এভাবে জীবাশ্ম জ্বালানির (ফসিল ফুয়েল) বিকল্প শক্তি তৈরির সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া এভাবে পারমাণবিক চুল্লিতে প্রচলিত নিউক্লিয়ার ফিশনের বিকল্প উপায়ে শক্তি উৎপাদন করা যেতে পারে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট পত্রিকা বলছে, জিয়াংসু প্রদেশে চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের ইনস্টিটিউট অব প্লাজমা ফিজিকসের একটি পারমাণবিক চুল্লিতে গত সপ্তাহে নিউক্লীয় সংযোজন বা ফিউশনের মাধ্যমে ওই অতি উচ্চ তাপমাত্রার সৃষ্টি হয়। যে যন্ত্রে ওই পরীক্ষা চালানো হয়, তার নাম এক্সপেরিমেন্টাল অ্যাডভান্সড সুপারকন্ডাক্টিং টোকাম্যাক (ইএএসটি)। এতে উৎপাদিত তাপের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস (পাঁচ কোটি কেলভিন)। এই উত্তাপ ১০২ সেকেন্ড স্থায়ী হয়।
গবেষকেরা ১০ কোটি কেলভিন তাপমাত্রা তৈরি করে সেটা প্রায় ১৭ মিনিট ধরে বহাল রাখতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁরা ওই লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারলেও যেটুকু অর্জন করতে পেরেছেন, সেটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য করা হচ্ছে। নিউক্লীয় ফিউশনের মাধ্যমে প্লাজমা অবস্থার সৃষ্টি করে তা ধরে রাখাটা খুব কঠিন কাজ। বিভিন্ন পরমাণুকে ইএএসটি যন্ত্রের চৌম্বক ক্ষেত্রে উত্তপ্ত করতে করতে অতি-উষ্ণ গ্যাস তৈরির মাধ্যমে প্লাজমা অবস্থা তৈরি করা হয়। নিউক্লিয়ার ফিউশন ও নিউক্লিয়ার ফিশনের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। ফিশনের ক্ষেত্রে পরমাণুগুলোকে সংযোজনের পরিবর্তে বিভাজন করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা নিউক্লিয়ার ফিউশন সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার চেষ্টা করছেন। ইএএসটির ওই পরীক্ষার আগে জার্মানিতে
ওয়েনডেলস্টেইন সেভেন-এক্স নামের একটি চুল্লিতে চলতি মাসে পরীক্ষামূলক নিউক্লিয়ার ফিউশন ঘটানো হয়েছে। তবে সেখানে প্লাজমা অবস্থা মাত্র এক সেকেন্ডের কম স্থায়ী হয়।