জ্ঞান চর্চায় ইন্টারনেট

জ্ঞান চর্চায় ইন্টারনেট

  • হাসান শাহরিয়ার

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইন্টারনেট বদলে দিয়েছে বিশ্বকে। এনেছে বিপুল পরিবর্তন। যখন কথা আসে জ্ঞান চর্চার প্রশ্ন করাই যায় ইন্টারনেট এক্ষেত্রে কতটা কার্যকর? বলা যায়, ইন্টারনেটে সকল তথ্যই পাওয়া যায় খুব সহজে।  

মানুষ স্বভাবতই যে কোনো কিছু সহজে লাভ করতে চায়। এ কারনেই ইন্টারনেট জ্ঞান সংরক্ষণ ও প্রচার করার অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠে। লাইব্রেরিতে তথ্য সংগ্রহ থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি সামান্য সার্চ কমান্ডের সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ করা অনেক সহজ ও সময় সাশ্রয় উপায়। এখন চাইলে ভয়েস কমান্ড এর মাধ্যমে সহজে ব্রাউজ করা যায়। এভাবেই ইন্টারনেট জ্ঞান সংরক্ষণ ও প্রচারকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে গেছে। তাই বর্তমান সময়ে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন খুব সহজ হয়ে দাড়িঁয়েছে। ইন্টারনেটের সাহায্যে যেকোনো তথ্য সংগ্রহ করা যায় মুহূর্তের মধ্যে। 

ইন্টারনেট আসার পূর্বে তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারের একমাত্র মাধ্যম ছিল বই। ১৪৫৫ সালে প্রথম বই মুদ্রিত করা হয় (গুটেনবার্গ বাইবেল )। এখনো তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারের এক বড় মাধ্যম বই। কিন্তু এখন শুধু ছাপা বই নয়, বরং পাশাপাশি রয়েছে ই-বই।  ২০ শতকের শেষে ইন্টারনেটকে উন্মুক্ত করার পরই এর ব্যবহারকারির সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই ইন্টারনেট পৌঁছে যায় অধিকাংশের নিকট।

নেট দুনিয়ায় বই এবং ইন্টারনেটের মধ্যে একত্রীকরণ করেই ওয়েব পেজের তৈরি। বর্তমানে  অনেক ওয়েব পেজ এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর মতই। ওয়েব পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইন কোর্স অফার করা হয়। এ ধরনের কোর্স সম্পূর্ণ করলে অনলাইন সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়। অনলাইন সার্টিফিকেটের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বর্তমানে সিলিকন  ভেলেই এর অনেক কোম্পানি যেমন ‘গুগোল ‘ তাদের ওয়েব পেজ দ্বারা  অনলাইন কোর্স  সম্পূন্ন লোকদের  নিয়োগ করছে। বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইন কোর্স সম্পন্ন করা লোকদের নিয়োগ দিচ্ছে। এর ফলে বাড়ছে কর্মসংস্থান। দেশের অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি তাদের সংস্থা ‘সি ডি সি বা ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’  এর মাধ্যমে  অনলাইন কোর্স অফার করছে। অনলাইন কোর্স, যেমন – এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা রয়েছে বাজারে। অনলাইন কোর্স সম্পূর্ণ করলে চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুযোগ রয়েছে। 

এবার আসি অনলাইন ক্লাসের বিষয়ে। ১৮ই মার্চ ২০২০ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে কর্মসংস্থান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর  শুরু হয় অনলাইন ক্লাস। গুগল মীট ও জুম হয়ে যায় সকল শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম। দীর্ঘ ১৮ মাস  সকল প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম চলেছিল  অনলাইন। ১৮ মাস পর সকল কার্যক্রম খুললেও ২১ জানুয়ারি ২০২২ আবার শিক্ষাক্রমকে ফিরতে হয়েছে গুগোল মিট ও জূমে। অনলাইন ক্লাসে  ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো প্রশ্নের উত্তর মুহূর্তের মধ্যে পাওয়া যায়। ক্লাসে হাজির না হলেও ক্লাসের রেকর্ড পাওয়া যায়। তবে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আনা এক বিশাল চ্যালেঞ্জ; কারণ অনেক এলাকায় নেই ইন্টারনেট সংযোগ বা সংযোগের অগ্রগতি চলছে। 

ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড় শক্তিই এর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। যে কেউ চাইলেই ইন্টারনেটে তাদের মনগড়া তথ্য প্রকাশ করতে পারে। এর জন্য সকলের ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক থাকা উচিত। ইন্টারনেট আমাদের আশেপাশের সকল কিছুকে দ্রুত পরিবর্তন করে দিচ্ছে। ফলে পৃথিবীটা এসেছে হাতের মুঠোয়।

Sharing is caring!

Leave a Comment