ইনোভেটিভ টিচিং অ্যান্ড লার্নিং এক্সপো’র সফল সমাপন
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে ড্যাফোডিল এডুকেশন নেটওয়ার্ক ও বৃটিশ কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে রাজধানীর ড্যাফোডিল টাওয়ারে ইনোভেটিভ টিচিং অ্যান্ড লার্নিং এক্সপো ২০১৭ আজ (২৬ আগস্ট) শেষ হয়েছে। এক্সপো আয়োজনের সহযোগিতায় এবং স্ট্রেটিজিক পার্টনার হিসেবে ছিল এনসিসি এডুকেশন (ইউকে), আইডিপি, ভেনচুরাস, বিএসএইচআরএম, এইচআরডিআই, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, টেন মিনিট স্কুল, বোল্ড ও জবসবিডি।
এক্সপোর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান।
ড্যাফোডিল ফ্যামিলির চেয়ারম্যান মো. সবুর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিসি এডুকেশন, ইউকে’র প্রধান নির্বার্হী কর্মকর্তা এলান নরটন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন ও বিএসএইচআর-এর সভাপতি মো. মোশারফ হোসেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন এক্সপো সাংগঠনিক সভাপতি মোহাম্মদ নূরুজ্জামান ও কো চেয়ার প্রফেসর ড. ফরিদ এ সোবহানী।
এক্সপোতে ছিল প্রজেক্ট প্রদর্শনী, ইনোভেটিভ টিচিং অ্যাওয়ার্ড, ইনোভেটিভ প্রজেক্ট অ্যাওয়ার্ড, প্লেনারী সেশান, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, রাউন্ড টেবিল ডিসকাশন ইত্যাদি। এতে দেশি বিদেশী শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞগণ সেমিনার, প্লেনারি সেশন, ওয়ার্কশপ এবং রাউন্ড টেবিল আলোচনার মাধ্যমে তাদের উদ্ভাবিত বিষয়সমূহ তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে দেশের সর্বস্তরের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, শিক্ষাকর্মী, নীতিনির্ধারক ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবশনা সমাপনী অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, শিক্ষাই শক্তি। শিক্ষাই সবকিছু। শিক্ষা মানুষকে ক্ষমতাবান করে। তাই শিক্ষা নিয়ে আমাদেরকে বহুমুখী ভাবনা ভাবতে হবে। সেই চিরাচরিত নিয়মের শিক্ষা পদ্ধতির মধ্যে আটকে থাকলে চলবে না। নতুন নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হবে। এসময় গোলাম রহমান বলেন, একটা সময় বিশ্ববিদ্যাগুলোতে অল্প কিছু বিষয় পড়ানো হতো। এখন অনেক বিষয় পড়ানো হয়। অনেক বিষয়ের সঙ্গে অনেক নতুন নতুন কোর্স যুক্ত হয়েছে। এসবই শিক্ষাক্ষেত্রে উদ্ভাবন। এখন সময় এসেছে পাঠদান পদ্ধতিতে নতুন কিছু উদ্ভাবন করার।
অধ্যাপক গোলাম রহমান আরো বলেন, আমাদের দেশ নানা দিক থেকে উন্নত হচ্ছে, সেই সাথে চ্যালেঞ্জও বাড়ছে। চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবেলা করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। আর শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার জন্য এ ধরনের ইনোভেটিভ টিচিং ও লার্নিং এক্সপোর আয়োজন বেশি বেশি হওয়া উচিত। এসময় তিনি ড্যাফোডিল এডুকেশন নেটওয়ার্ক ও ব্রিটিশ কাউন্সিলকে ধন্যবাদ জানান, এ ধরনের এক্সপো আয়োজন করার জন্য।
অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হলে আমাদের শিক্ষকদেরকে ইনোভেটিভ হতে হবে। কিন্তু দুর্ভগ্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের দেশে শিক্ষকদেরকে ইনোভেটিভ করার তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। এসময় তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উদারহরণ টেনে বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় নতুন শিক্ষকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। এতে শিক্ষকদের ইনোভেশন শক্তি তৈরি হয়।
সভাপতির বক্তব্যে মো. সবুর খান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় শিক্ষার কলা কৌশলে অনেক পরিবর্তন এসেছে, নিত্য নতুন উদ্ভাবন শিক্ষা পদ্ধতিকে বিকশিত করছে। এ পরিবর্তনের সাথে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিচয় ঘটানোর লক্ষ্যে দেশে প্রথম বারের মতো এ এক্সপোর আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আগামীতে দেশের ৬৪ টি জেলায় এ ধরনের এক্সপো আয়োজনের আশা প্রকাশ করেন এবং এ ক্ষেত্রে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
এক্সপোতে মোট ইনোভেটিভ টিচিং অ্যান্ড লানিং এর ওপর প্রায় শতাধিক প্রজেক্ট প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে শিক্ষার্থী ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. ওমর ফারুক ও তার সহযোগী মো. শাহরিয়ার আলম ও বায়েজিদ খানের ‘অক্সো মাস্ক’ প্রকল্প এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সেন্ট জোসেফ হায়ার সেকেন্ডারী স্কুলের শিক্ষার্থী সবীর চন্দ্র গুপ্ত ও মাসরুর আহমেদ এর ‘এনি ওয়ে টানেল’ প্রকল্প।
প্রকল্পের এক্সপোতে মোট ৪ টি ওয়ার্কশপ, ৬ টি সেমিনার, ২ টি প্লেনারী সেশান ও ১ টি রাউন্ডটেবিল অনুষ্টিত হয়। আইডিপি, টেন মিনিট স্কুল, আগামী এডুকেশন ফাউন্ডেশন ও পদক্ষেপ তাদের শিক্ষা সামগ্রী ও সেবা সমূহ প্রদর্শন করেন।