ড্যাফোডিলে ‘উদ্ভাবন অংশীদার পরামর্শ’ শীর্ষক সম্মেলন শুরু
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে উদ্ভাবনী অর্থনীতি গঠনে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রীক উদ্যোগ নিয়ে ‘উদ্ভাবন অংশীদার পরামর্শ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী প্রযুক্তি সম্মেলন আজ বুধবার (১২ জুন) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ধানমন্ডি ক্যাম্পাসের ৭১ মিলনায়তনে শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রযুক্তি উদ্ভাবক ও রূপান্তর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম নওয়াজ শরীফ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খানের সভাপতিত্তে¡ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব মো. আব্দুল হালিম। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, ব্যবসায় ও উদ্যোক্তাবৃত্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুম ইকবাল ও ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খান। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনারশিপ বিভাগ, ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টার এবং স্কিল জবস ও বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আব্দুল হালিম বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রযুক্তির বিপ্লব চলছে। এই বিপ্লবের সুফল ঘরে তুলতে হলে আমাদেরকে প্রযুক্তির উদ্ভাবনের দিকে নজর দিতে হবে। যারা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে সেই তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তিবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সরকার সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও স্কুল কলেজের পাঠ্যক্রমে প্রযুক্তি শিক্ষাকে অন্তর্ভূক্ত করেছে। এসময় তিনি প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
শিল্পসচিব আরো বলেন, শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। তাহলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করতে পারবে। এ ধরনের সম্মেলন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগাযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন শিল্পসচিব মো. আব্দুল হালিম।
সম্মেলনের মূখ্য আলোচক অধ্যাপক ড. এম নওয়াজ শরীফ বলেন, কোনো প্রযুক্তিই চিরস্থায়ী নয় এবং কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই চিরজীবন মার্কেট লিডার থাকতে পারে না। আজ থেকে বিশ বছর আগে যেসব প্রযুক্তি বাজার দখল করে ছিল এখন সেগুলো নেই। আবার এখন যেসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে সেগুলোও একসময় থাকবে না। সুতরাং বাংলাদেশের সামনে এখন বৈশ্বিক প্রযুক্তি বাজারে নেতৃত্ব তৈরি করার অপার এক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে । কারণ বাংলাদেশে এখন চলছে ডিজিটাল বিপ্লব। এই বিপ্লবের পথ ধরেই বাংলাদেশ এক সময় উন্নত অর্থনৈতিক দেশে পরিণত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই খ্যাতিমান প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।
সম্মেলনটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, জ্ঞানের বিনিময় ছাড়া উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করা যায় না। এখানে বিভিন্ন সেক্টরের উদ্ভাবনী ব্যক্তিরা একত্রিত হয়েছেন। তারা নিজেদের ভাবনা বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্ভাবন সৃষ্টি করবেন, এটিই এ সম্মেলনের উদ্দেশ্য।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মো. সবুর খান বলেন, প্রযুক্তির উদ্ভাবনই হয়েছে মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য এবং বেশি বেশি সুবিধা দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা নেতিবাচক মানসিকতার কারণে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা গ্রহণ করতে পারছি না। আমাদেরকে প্রযুক্তি সম্পর্কে ইতিবাচক হতে হবে। এসময় তিনি প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে এবং প্রযুক্তির উন্নয়নকে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করতে হবে।
সম্মেলনে উদ্ভাবন ও ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মোট ১০টি সেশনে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় অর্ধ শতাধিক নীতি নির্ধারকগণ অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনটি চলবে আগামীকাল ১৩ জুন পর্যন্ত।