ড্যাফোডিলে ‘ভুয়া সংবাদ প্রপঞ্চ’ শীর্ষক সেমিনার
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ ও ফ্রেডরিক ন্যুম্যান ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে ‘ভুয়া সংবাদ প্রপঞ্চ’ শীর্ষক এক সেমিনার আজ বুধবার (২৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন, দৈনিক প্রথম আলোর বিশেষ বার্তা সম্পাদক কুররাতুল আইন তাহমিনা, জি টিভি ও সারা বাংলা ডটনেটের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা এবং চ্যানেল আইয়ের জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক আদিত্য শাহীন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক সেলিম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতাও গণযোগাযোগ বিভাগের উপদেষ্টা ও শিক্ষক ড. শাখাওয়াত আলী খান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ এম এম হামিদুর রহমান, ফ্রেডরিক ন্যুম্যান ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি ওমর মোস্তাফিজ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের প্রভাষক আফতাব হোসেন, রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।
সেমিনারে ড. গীতিআরা নাসরিন বলেন, আগে সাংবাদিকতার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ভুল সংবাদ না দেওয়া। আর এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অপসংবাদ ও ভুয়া সংবাদ প্রতিহত করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে ভুয়া সংবাদ ঠেকানো কঠিন হয়ে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ড. গীতিআরা নাসরিন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে এখন সবাই নাগরিক সাংবাদিক। কিন্তু এই নাগরিক সাংবাদিকদের সাংবাদিকতা সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা নেই।
নাগরিক সাংবাদিকদের গণমাধ্যম স্বাক্ষরতা বাড়াতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে স্কুল পর্যায় থেকে গণমাধ্যম বিষয়ে পাঠ দেওয়া হয়। এটাই গণমাধ্যম স্বাক্ষরতা। বাংলাদেশেও এ ব্যবস্থা চালু করার আহ্বান জানান ড. গীতিআরা নাসরিন।
অপরদিকে কুররাতুল আইন তাহমিনা বলেন, বিনা প্রশ্নে কোনো তথ্য গ্রহণ করা যাবে না। যেকোনো তথ্য গ্রহণ করার আগে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার আগে বারবার পরীক্ষা করে নিতে হবে। সাংবাদিকতার ভাষায় একে বলা হয় ‘ক্রস চেক’। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদেরকে চারণ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিনের লেখা পড়ার পরামর্শ দেন।
সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা তার বক্তব্যে বলেন, সারা পৃথিবীতেই ভুয়া সংবাদ ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে। এই প্রবণতা ঠেকানোর জন্য ইতিমধ্যে নানা ধরনের প্রযুক্তিগত কৌশলও আবিষ্কৃত হয়েছে। পৃথিবীর উন্নত দেশের গণমাধ্যমগুলো সেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোরও এসব প্রযুক্তি ব্যপকভাবে ব্যবহার করার আহ্বান জানান তিনি।
আদিত্য শাহীন বলেন, সত্যের গুরুত্ব বুঝতে হবে। আমরা যদি সত্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারি এবং মিথ্যার ভয়াবহতা বুঝতে পারি তাহলেই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে ভুয়া সংবাদের কবল থেকে রক্ষা করতে পারব।
ড. শাখাওয়াত আলী খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকের সাংবাদিকরা নানাভাবে বিভক্ত। এই বিভক্তির সুযোগ নিচ্ছে অসাংবাদিকরা এবং তারা মিথ্যা খবর ছড়াচ্ছে। এটা মহামারী আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহামারী রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হয় এবং প্রচুর চিকিৎসক প্রয়োজন হয়। এই মুহূর্তে আমাদের প্রচুর সংখ্যক প্রকৃত সংবাদিক দরকার। এসময় তিনি সাংবাদিকদেরকে বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সবশেষে শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন অতিথিরা।