তুরস্কে পড়তে চাইলে

তুরস্কে পড়তে চাইলে

  • লাবিব ফয়সাল, কনিয়া (তুরস্ক) থেকে

ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভৌগোলিক অবস্থান আর সমকালীন রাজনীতির কারণে তুরস্ককে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে প্রায়ই দেখা যায়। গত দুই দশকে এই আলোচনা আরও বেড়েছে। এর মূলে রয়েছে তুরস্কের শিক্ষাব্যবস্থার ভূমিকা। আর এই শিক্ষার আলো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতেই তুরস্ক সরকার প্রতিবছরই বিদেশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে সেখানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরের আবেদন শুরু হয়েছে ১০ জানুয়ারি থেকে। চলবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

তুরস্কের শিক্ষাব্যবস্থা

তুরস্কের শিক্ষাব্যবস্থা ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে দশম। এ দেশের ৫০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিংয়ের প্রথম সারির দিকে। এখানকার শিক্ষাব্যবস্থায় মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরগুলোই বেশ উন্নত। এটিকে আরও উন্নত করতে এ দেশের সরকার নতুন অর্থ বাজেটে দেশটিতে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মেডিকেল পার্ক করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

এ দেশে মোট বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যা ২০৭। এর মধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১২৯টি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৮। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই এ দেশের বিদেশবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর সাত হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী আসেন পৃথিবীর ১৬০টি দেশ থেকে।

এখানে বাংলাদেশ থেকে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে বেশি। বর্তমানে এই শিক্ষাবৃত্তির আওতায় ১৭ হাজার ৫০০ বিদেশি শিক্ষার্থী পড়ছেন তুরস্কে। পড়ার মূল মাধ্যম তুর্কি ভাষা হলেও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শর্ত সাপেক্ষে ইংরেজিতেও পড়ার সুযোগ দেয়।

তুরস্কের সরকারি শিক্ষাবৃত্তি

তুরস্ক সরকার ১০ বছর ধরে ‘Turkiye Burslar’ প্রজেক্টের আওতায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষা বৃত্তি দিয়ে আসছে। এই বৃত্তির মাধ্যমে টিউশন ফি, একোমডেশন, পকেট মানি, স্বাস্থ্যবিমা, এক বছরের তুর্কি ভাষা কোর্সসহ প্লেনের টিকিটও দেওয়া হয়। এই বৃত্তিতে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করার ব্যবস্থা রয়েছে।

এর পুরো প্রক্রিয়াই চলে অনলাইনের মাধ্যমে ও বিনা মূল্যে। প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃতরা ভাইভাতে ডাক পান। ভাইভার রেজাল্টের ভিত্তিতেই শুরু হয় ভিসাপ্রক্রিয়া।

বৃত্তির আবেদনের প্রয়োজনীয় তথ্য

অনার্সের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২১ বছর। মাস্টার্স ও পিএইচডি যথাক্রমে ৩০ ও ৩৫ বছর। অনার্সের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী পরীক্ষাগুলোর ৭০ শতাংশ এবং মাস্টার্স ও পিএইচডির ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ রেজাল্ট দেখাতে হয়। আবেদনের জন্য জন্মসনদ/জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্ট দরকার হয়।

সব সার্টিফিকেট ও মার্কশিটের স্ক্যান কপি।

দুটি রেফারেন্স লেটার।

সিস্টেমে প্রদত্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর।

পিএইচডির ক্ষেত্রে রিসার্চ প্রপোজাল।

যেকোনো ধরনের এক্সট্রা কারিকুলামের সনদ।

আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন: <turkiyeburslari.gov.tr/…/prosp…/application-criteria>

যা যা থাকবে এই বৃত্তিতে

তুরস্কে আসা ও শিক্ষা শেষ করার পর ফিরে যাওয়ার প্লেনের টিকিট।

পকেট মানি যথাক্রমে অনার্স ৮০০ লিরা, মাস্টার্স ১১০০ লিরা ও পিএইচডি ১ হাজার ৬০০ লিরা করে দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্যবিমা।

হোস্টেলে থাকা ও খাবার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি।

ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স।

প্রয়োজনীয় লিংক

আবেদনের লিংক: <tbbs.turkiyeburslari.gov.tr/>

অফিশিয়াল ওয়েবসাইট: <turkiyeburslari.gov.tr/en>

অফিশিয়াল পেজ: <facebook.com/turkiyeburslari/>

লাবিব ফয়সাল: সাংবাদিকতা বিভাগ, সেলজুক বিশ্ববিদ্যালয়, কনিয়া, তুরস্ক।

Sharing is caring!

Leave a Comment