ড্যাফোডিলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সম্মেলন শুরু
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
‘বৈশ্বিক শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য মানসম্মত শিক্ষা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ৩ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে ড্যাফোডিল ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়ায় ৪ দিন ব্যাপী (৩ মে-৬ মে) ২১তম ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন স্টুডেন্টস কোয়ালিটি কন্ট্রোল সার্কেল-২০১৮ (আইসিএসকিউসিসি-২০১৮) শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সোসাইটি ফর টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (বিএসটিকিউএম)-এর উদ্যোগে এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় বাংলাদেশে এ আন্তর্জাতিক কনভেনশন চলবে আগামী ৬ মে ২০১৮ পর্যন্ত। কনভেনশনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, পাকিস্তান ও মোরিশাসের ৫০০ প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১ হাজার শিক্ষার্থী ও প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছে।
৩ মে ২০১৮ তারিখে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়ায় স্বাধীনতা মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল ফর টোটাল কোয়ালিটি অ্যান্ড এক্সেলেন্স ইন এডুকেশনের মহাপরিচালক ডেভিড কলিংউড হুচিন। বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল ফর টোটাল কোয়ালিটি অ্যান্ড এক্সেলেন্স ইন এডুকেশনের চেয়ারম্যান ড. জগদীশ গান্ধী, নির্বাহী পরিচালক ড. বিনিতা কামরান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট এর চেয়ারম্যান এ এম এম খায়রুল বাশার ও আইসিএসকিউসিসি-২০১৮ এর আহবায়ক প্রফেসর ড. এম আর কবির। কনভেনশন চলবে আগামী ৬ মে পর্যন্ত।
চার দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক কনভেনশনে প্রায় ৬০টি স্টুডেন্টস কোয়ালিটি কন্ট্রোল সার্কেলের কেস স্টাডি ও শিক্ষাক্ষেত্রে গুণগত মানবিষয়ক ১৩টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। এছাড়াও ৪৩টি দল পোস্টার ও শ্লোগান, ৩৯টি দল কোলাজ, ২৯টি দল স্কিট, ৩৩টি দল বিতর্ক, ২৮টি দল কোয়ালিটি ক্ইুজ এবং ১৬টি দল কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন।
কনভেনশনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুণগত মানোন্নয়ন ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সর্বশেষ উন্নয়ন সম্পর্কে অবহিত করার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট বাস্তবায়নের বিভিন্ন বিষয় বিনিময় করা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, সমাজের বাতিঘর হচ্ছে শিক্ষা। সুতরাং বাতিঘর যদি মানসম্মত না হয় তাহলে সমাজ সঠিকভাবে আলোকিত হয় না। আর সমাজ আলোকিত না হলে দেশ রাষ্ট্র কিংবা পৃথিবী– কোনো কিছুই আলোকিত হবে না। তাই আমাদেরকে মানসম্মত শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন ড. মো. সবুর খান। এ সময় তিনি ২১তম আইকিউএসসিসি সম্মেলনের জন্য বাংলাদেশেকে এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে বেছে নেওয়ার জন্য আয়োজক কমিটিকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অনুশাসনের কথা বলতে গিয়ে ড. মো. সবুর খান আরো বলেন, প্রতিটি ধর্মেই টেকসই উন্নয়ন, শান্তি, সমৃদ্ধি ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। আর এই সবকিছু শিক্ষার সঙ্গে জড়িত। তাই সবার আগে শিক্ষাকে মানসম্মত করতে হবে।
বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. মো. সবুর খান বলেন, নিজের উন্নয়ন ঘটাও। বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক তৈরি করো। আর নিজের ওপর আস্থা রেখে পড়ালেখা করো। নিজের উন্নয়ন ঘটাতে পারলেই বিশ্বের উন্নয়ন ঘটবে। তোমাদের নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমেই সমৃদ্ধ হবে আগামীর পৃথিবী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল ফর টোটাল কোয়ালিটিঅ্যান্ড এক্সেলেন্স ইন এডুকেশন এর চেয়ারম্যান ড. জগদীশ গান্ধী বলেন, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই সমাজে শান্তি আনতে পারে। একক প্রচেষ্টায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা অনেকটা দূরহ ব্যাপার। এজন্য সব ধর্মেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করি। এসময় ড. জগদীশ গান্ধী বলেন, আজকের এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে নানা জাতি ধর্ম ও বর্ণের শিশুরা মিলিত হয়েছে। এই শিশুরা সবাই মিলে ভবিষ্যতে একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তুলবে। এটাই ঐক্যের শক্তি ও সৌন্দর্য।
ড. জগদীশ গান্ধী আরো বলেন, বর্তমান বিশ্বে আমাদের শিশুরা নিরাপদ নয়। শিশুরা নিরাপদ না হলে ভবিষ্যৎ নিরাপদ হয় না। সুতরাং শিশুদের নিরাপদ রাখতে হবে এবং সেজন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
সম্মেলনে মূলপ্রবন্ধ উপস্থপনকালে ডব্লিউসিটিকিউইই-এর মহাপরিচালক ডেভিড কলিংউড হুচিন বলেন, টেকসই উন্নয়ন ও শান্তি–এ দুটি শব্দ এখন সারা বিশ্বব্যাপী আলোচিত। আমরা সবাই টেকসই উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব চাই। আর এ দুটি বিষয় অর্জনের জন্য দরকার মানসম্মত শিক্ষা।
ডেভিড কলিংউড হুচিন আরো বলেন, মানসম্মত শিক্ষার জন্য আমাদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুত্ব বাড়াতেহবে। কারণ শিক্ষার সর্বস্তরে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন ও শান্তি আসবে না।